ঢাকা ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিয়ম দুর্নীতিতে বিমা খাতে আস্থার সংকট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩০:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৬০ বার

বিমা খাত থেকে টাকা পয়সা নিয়ে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ঘুরেও বিমার টাকা তোলা যাচ্ছে না। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বর্তমানে তীব্র আস্থা সংকটে পড়েছে খাতটি। এ খাতের প্রতি আস্থা বাড়াতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন জরুরি বলে মত দেন ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশে সামাজিক বিমা ফোরামের সূচনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত সংলাপে সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য পারভীন মাহমুদের সঞ্চালনায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব মুহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও সমন্বয় জরুরি। সামাজিক বিমা একটি বিস্তৃত ইস্যু। বহু খাত সম্পর্কিত বিষয়। এখানে সরকারের বহু মন্ত্রণালয় ও উন্নয়ন সহযোগী সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, যখন রাজনীতিবিদরা সরকারের বাইরে থাকেন, তখন তারা সংস্কার ও পরিবর্তনের বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু যখন তারা সরকারের অংশ হয়ে যান, তখন তারা আমলাদের মতো আচরণ করেন। অনেক রাজনৈতিক নেতা দেখেছি, যারা আমলাদের চেয়েও বেশি আমলাতান্ত্রিক, যখন তারা চেয়ারে বসেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এবিএম সাদিকুর রহমান বলেন, বিমা সম্পর্কে মানুষের মাঝে একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। যে কারণে পুরো খাতের ওপর মানুষ বিশ্বাস এবং আস্থা হারাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা যে গাড়ির বিমা করেন, সেটা দুর্ঘটনার শিকার হলে বিমা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে আমাদেরই বেগ পেতে হয়। তাতে সাধারণ মানুষের যে কী অবস্থা তা সহজে অনুমেয়। প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ডানে-বামে ছবি তুলে জিডি করতে হয়। ছবিতে পুরো ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠে না। দেখা গেল, রি-পেয়ার করতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হলো, বিপরীতে দিল পাঁচ হাজার টাকা, তাও অনেক দিন পরে। এরকম ফিডব্যাক পেলে বিমার প্রতি আস্থা থাকার কথা না।

উদাহরণ টেনে সাদিকুর রহমান আরও বলেন, কিছু আত্মীয়স্বজন এখনো আমার কাছে তদবির করেন। ফারইস্ট ইনস্যুরেন্সের মালিকপক্ষ টাকা পয়সা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। যাদের বিমা ম্যাচিউরড হয়ে গেছে, তারাও টাকা পাচ্ছেন না। যখন সমাজের একজন ভোগান্তির শিকার হন, তখন বাকিরা তো তা জেনে যায়। তার আত্মীয়স্বজনরা জানে। সাধারণত, যেটা খারাপ সংবাদ, সেটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

সরকারের এই উপসচিব বলেন, যারা বিমা করেছেন, তাদের বেশির ভাগই সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজে চাকরি করেন। অনেক আশা করে বিমা করেছেন। একই পরিবারে চার-পাঁচটি বিমা। টাকা পাচ্ছেন না। আমি অনেকবার যোগাযোগ করেছি, কথা বলেছি। তারা (কোম্পানি কর্তৃপক্ষ) বলে, আমাদের পূর্ববর্তী মালিকরা টাকা নিয়ে গেছে, তারা জেলে আছে। সেটা জেনে আমার কী লাভ? আমি তো টাকা পাচ্ছি না। এভাবে যদি বিমা কোম্পানিগুলো কাজ করে তাহলে মানুষের আস্থা থাকার কথা নয়। সে জন্য প্রথমে আস্থা তৈরি করতে হবে। এ জন্য যে কাজ করি, সেগুলো সিনসিয়ারলি করতে হবে। এখানে দুর্নীতি করা যাবে না, কাজে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করা উচিত, সেভাবে করতে হবে। যেভাবে সহযোগিতা করা উচিত, সেভাবে করতে হবে। এটা যদি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সামাজিক বিমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।

সরকারি চাকরিতে বদলির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক মেমোরি গড়ে ওঠে না বলে আলোচনায় উঠে আসে। এতে কর্মকর্তার বদলির সঙ্গে কাজের অগ্রগতিও থেমে যায়।

এ প্রসঙ্গে সাদিকুর রহমান বলেন, সরকারি চাকরিতে বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাই ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, সেকশন অনুযায়ী করতে হবে। যে সেকশনটা সাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সেই সেকশনের অফিসার যিনি হবেন, তিনি ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হবেন। তাহলে সেখানে ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি থেকে যাবে। আর যদি কোনো ব্যক্তিকে করা হয়, তাহলে তিনি তো বদলি হলে ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি থাকবে না।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে উঠছে বাংলাদেশ, মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে, সেখানে উত্তরণ দরকার। কীভাবে তাদের সামাজিক বিমা কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এ ধরনের কর্মসূচির নীতিকাঠামো রয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা কীভাবে কাজ করছে, সেটা দেখা।

মোয়াজ্জেম আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সরকারের অঙ্গীকার হয়তো পরিষ্কার, কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে এজেন্সিগুলো যথেষ্ট সচেতন নয়। কিছু ক্ষেত্রে ধারণাগত দিক এবং আইনিভাবে সংস্থাগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক পরিস্থিতির জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে লোকবলও প্রস্তুত নয়। এই যে, সামগ্রিকভাবে একটি ঘাটতি, এর সমাধান করতে হবে।

এনজিও প্রতিষ্ঠান এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজের এইচআর ডিরেক্টর আহমেদ মেহেদী হাসান বলেন, জীবন বিমার ক্ষেত্রে অনেকের ধারণা হলো এমন যে, আমরা যখন মরে যাব তখন টাকা পাব। তাহলে এ টাকা দিয়ে কী করব। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বিমা খাতে আস্থাহীনতা রয়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম পরিচালক মো. সাহেদুল হাসান বলেন, ব্যাংক খাতে যত আমানত আছে তার ৯১ শতাংশ হলো ১ থেকে ১ লাখ টাকার হিসাব। এই আমানতধারীদের কোনো ঝুঁকি নেই। তাদের বিমা করা আছে। যদি কোনো ব্যাংক বন্ধ বা দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে এই আমানতকারীরা টাকা পাবে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে এটা কার্যকর হবে না।

পিকেএসএফের উপ-মহাপরিচালক হাসান খালেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে এগুলো যুক্ত করা হয়েছে। যখন তারা কাজের সন্ধানে বাইরে যাবেন, তাদের সঙ্গে এটা ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে।

গ্রিন ডেলটা ইন্স্যুরেন্সের শুভাশিষ বড়ুয়া বলেন, প্রবাসী শ্রমিকরা রেমিট্যান্স পাঠালেও তাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন হচ্ছে না। যাদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারছি না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অনিয়ম দুর্নীতিতে বিমা খাতে আস্থার সংকট

আপডেট টাইম : ১২:৩০:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

বিমা খাত থেকে টাকা পয়সা নিয়ে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ঘুরেও বিমার টাকা তোলা যাচ্ছে না। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বর্তমানে তীব্র আস্থা সংকটে পড়েছে খাতটি। এ খাতের প্রতি আস্থা বাড়াতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন জরুরি বলে মত দেন ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশে সামাজিক বিমা ফোরামের সূচনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত সংলাপে সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য পারভীন মাহমুদের সঞ্চালনায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব মুহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও সমন্বয় জরুরি। সামাজিক বিমা একটি বিস্তৃত ইস্যু। বহু খাত সম্পর্কিত বিষয়। এখানে সরকারের বহু মন্ত্রণালয় ও উন্নয়ন সহযোগী সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, যখন রাজনীতিবিদরা সরকারের বাইরে থাকেন, তখন তারা সংস্কার ও পরিবর্তনের বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু যখন তারা সরকারের অংশ হয়ে যান, তখন তারা আমলাদের মতো আচরণ করেন। অনেক রাজনৈতিক নেতা দেখেছি, যারা আমলাদের চেয়েও বেশি আমলাতান্ত্রিক, যখন তারা চেয়ারে বসেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এবিএম সাদিকুর রহমান বলেন, বিমা সম্পর্কে মানুষের মাঝে একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। যে কারণে পুরো খাতের ওপর মানুষ বিশ্বাস এবং আস্থা হারাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা যে গাড়ির বিমা করেন, সেটা দুর্ঘটনার শিকার হলে বিমা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে আমাদেরই বেগ পেতে হয়। তাতে সাধারণ মানুষের যে কী অবস্থা তা সহজে অনুমেয়। প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ডানে-বামে ছবি তুলে জিডি করতে হয়। ছবিতে পুরো ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠে না। দেখা গেল, রি-পেয়ার করতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হলো, বিপরীতে দিল পাঁচ হাজার টাকা, তাও অনেক দিন পরে। এরকম ফিডব্যাক পেলে বিমার প্রতি আস্থা থাকার কথা না।

উদাহরণ টেনে সাদিকুর রহমান আরও বলেন, কিছু আত্মীয়স্বজন এখনো আমার কাছে তদবির করেন। ফারইস্ট ইনস্যুরেন্সের মালিকপক্ষ টাকা পয়সা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। যাদের বিমা ম্যাচিউরড হয়ে গেছে, তারাও টাকা পাচ্ছেন না। যখন সমাজের একজন ভোগান্তির শিকার হন, তখন বাকিরা তো তা জেনে যায়। তার আত্মীয়স্বজনরা জানে। সাধারণত, যেটা খারাপ সংবাদ, সেটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

সরকারের এই উপসচিব বলেন, যারা বিমা করেছেন, তাদের বেশির ভাগই সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজে চাকরি করেন। অনেক আশা করে বিমা করেছেন। একই পরিবারে চার-পাঁচটি বিমা। টাকা পাচ্ছেন না। আমি অনেকবার যোগাযোগ করেছি, কথা বলেছি। তারা (কোম্পানি কর্তৃপক্ষ) বলে, আমাদের পূর্ববর্তী মালিকরা টাকা নিয়ে গেছে, তারা জেলে আছে। সেটা জেনে আমার কী লাভ? আমি তো টাকা পাচ্ছি না। এভাবে যদি বিমা কোম্পানিগুলো কাজ করে তাহলে মানুষের আস্থা থাকার কথা নয়। সে জন্য প্রথমে আস্থা তৈরি করতে হবে। এ জন্য যে কাজ করি, সেগুলো সিনসিয়ারলি করতে হবে। এখানে দুর্নীতি করা যাবে না, কাজে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করা উচিত, সেভাবে করতে হবে। যেভাবে সহযোগিতা করা উচিত, সেভাবে করতে হবে। এটা যদি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সামাজিক বিমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।

সরকারি চাকরিতে বদলির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক মেমোরি গড়ে ওঠে না বলে আলোচনায় উঠে আসে। এতে কর্মকর্তার বদলির সঙ্গে কাজের অগ্রগতিও থেমে যায়।

এ প্রসঙ্গে সাদিকুর রহমান বলেন, সরকারি চাকরিতে বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাই ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, সেকশন অনুযায়ী করতে হবে। যে সেকশনটা সাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সেই সেকশনের অফিসার যিনি হবেন, তিনি ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হবেন। তাহলে সেখানে ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি থেকে যাবে। আর যদি কোনো ব্যক্তিকে করা হয়, তাহলে তিনি তো বদলি হলে ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি থাকবে না।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে উঠছে বাংলাদেশ, মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে, সেখানে উত্তরণ দরকার। কীভাবে তাদের সামাজিক বিমা কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এ ধরনের কর্মসূচির নীতিকাঠামো রয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা কীভাবে কাজ করছে, সেটা দেখা।

মোয়াজ্জেম আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সরকারের অঙ্গীকার হয়তো পরিষ্কার, কিন্তু সেটা বাস্তবায়নে এজেন্সিগুলো যথেষ্ট সচেতন নয়। কিছু ক্ষেত্রে ধারণাগত দিক এবং আইনিভাবে সংস্থাগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক পরিস্থিতির জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে লোকবলও প্রস্তুত নয়। এই যে, সামগ্রিকভাবে একটি ঘাটতি, এর সমাধান করতে হবে।

এনজিও প্রতিষ্ঠান এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজের এইচআর ডিরেক্টর আহমেদ মেহেদী হাসান বলেন, জীবন বিমার ক্ষেত্রে অনেকের ধারণা হলো এমন যে, আমরা যখন মরে যাব তখন টাকা পাব। তাহলে এ টাকা দিয়ে কী করব। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বিমা খাতে আস্থাহীনতা রয়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম পরিচালক মো. সাহেদুল হাসান বলেন, ব্যাংক খাতে যত আমানত আছে তার ৯১ শতাংশ হলো ১ থেকে ১ লাখ টাকার হিসাব। এই আমানতধারীদের কোনো ঝুঁকি নেই। তাদের বিমা করা আছে। যদি কোনো ব্যাংক বন্ধ বা দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে এই আমানতকারীরা টাকা পাবে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে এটা কার্যকর হবে না।

পিকেএসএফের উপ-মহাপরিচালক হাসান খালেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ইন্স্যুরেন্সের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে এগুলো যুক্ত করা হয়েছে। যখন তারা কাজের সন্ধানে বাইরে যাবেন, তাদের সঙ্গে এটা ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে।

গ্রিন ডেলটা ইন্স্যুরেন্সের শুভাশিষ বড়ুয়া বলেন, প্রবাসী শ্রমিকরা রেমিট্যান্স পাঠালেও তাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন হচ্ছে না। যাদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারছি না।