ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

মহান আল্লাহর বিশেষ কল্যাণ লাভ করে যারা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৮০ বার
মহান আল্লাহ বান্দার চিরকল্যাণকামী। তিনি বান্দার জন্য সহজ চান, কঠিন চান না। সর্বদা বান্দার কল্যাণ চান। আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

ইসলামের জন্য অন্তর উন্মুক্ত : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তার অন্তরকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করেন।

পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যার বক্ষকে আল্লাহ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার রবের দেওয়া জ্যোতির মধ্যে আছে।’ (সুরা জুমার, হাদিস : ২২)বিপদাপদে শান্ত : কখনো কখনো বিপদাপদ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিয়ামত। তিনি এর মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর অবশ্যই আমরা তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, ধন ও প্রাণের ক্ষতির মাধ্যমে এবং ফল-শস্যাদি বিনষ্টের মাধ্যমে।

’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫)আল্লাহ তাআলা কোনো নেককার ব্যক্তির কল্যাণ চাইলে তাকে বিপদে ফেলেন। হাদিসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর ওপর আমার হাত রাখলে তাঁর গায়ের চাদরের ওপর থেকেই তাঁর দেহের প্রচণ্ড তাপ অনুভব করলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কত তীব্র জ্বর আপনার।

তিনি বলেন, আমাদের (নবী-রাসুলদের) অবস্থা এমনই হয়ে থাকে। আমাদের ওপর দ্বিগুণ বিপদ আসে এবং দ্বিগুণ পুরস্কারও দেওয়া হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কার ওপর সর্বাধিক কঠিন বিপদ আসে? তিনি বলেন, নবীদের ওপর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তারপর কার ওপর? তিনি বলেন, তারপর নেককার বান্দাদের ওপর। তাদের কেউ এতটা দারিদ্র্যপীড়িত হয় যে শেষ পর্যন্ত তার কাছে তার পরিধানের কম্বল ছাড়া আর কিছুই থাকে না।

তাদের কেউ বিপদে এত শান্ত ও উত্ফুল্ল থাকে, যেমন তোমাদের কেউ ধন-সম্পদ প্রাপ্তিতে আনন্দিত হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২৪)সত্যবাদী সঙ্গী : আল্লাহ যখন কোনো নেতার কল্যাণ চান, তখন তাঁর উত্তম সঙ্গী দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা যখন কোনো নেতার জন্য কল্যাণের ফায়সালা করেন, তখন তিনি তাকে সত্যবাদী, ন্যায়নিষ্ঠ উজির দান করেন। যদি সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর আমির যদি তা স্মরণ রাখে, তখন উজির তাকে সাহায্য করে। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলা কোনো নেতার জন্য অকল্যাণের ফায়সালা করলে তাকে অযোগ্য উজির দান করেন। ফলে যখন  সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না। আর নেতা যদি স্মরণ রাখে, তখন সে তাকে সাহায্য করে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৩২)

দ্বিনের জ্ঞানের অধিকারী : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের জ্ঞান দান করেন। মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের প্রজ্ঞা দান করেন। আল্লাহই দানকারী আর আমি বণ্টনকারী। (বুখারি, হাদিস : ৭১)

দুনিয়ায় সাময়িক সমস্যা : যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা, তাদের তিনি দুনিয়ায়ই কিছু শাস্তি ভোগ করান, যাতে পরকালে তাঁর সেই বান্দাকে শাস্তি ভোগ করতে না হয়। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন তাঁর বান্দার মঙ্গল কামনা করেন, তখন দুনিয়ায় তাকে অতি তাড়াতাড়ি বিপদাপদের সম্মুখীন করা হয়। আর যখন তিনি কোনো বান্দার অকল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তিনি তার গুনাহর শাস্তি প্রদান থেকে বিরত থাকেন। অবশেষে কিয়ামতের দিন তাকে এর পরিপূর্ণ আজাবে নিপতিত করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৬)

সম্পদ ও সন্তান দ্বারা আক্রান্ত : আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ চান, তার নিজের এবং সম্পদ ও সন্তানের ওপর বিপদ দেন। রাসুল (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তির জন্য বিনাশ্রমে আল্লাহর পক্ষ থেকে মর্যাদার আসন নির্ধারিত হলে আল্লাহ তার দেহ, সম্পদ অথবা সন্তানকে বিপদগ্রস্ত করেন। অতঃপর সে তাতে ধৈর্যধারণ করলে শেষ পর্যন্ত বরকতময় মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ওই মর্যাদার স্তরে উপনীত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩০৯০)

নম্র স্বভাবের অধিকারী : আল্লাহ নম্রতাকে ভালোবাসেন। আর তিনি যার কল্যাণ চান, তাকেই এই গুণ দান করেন। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো আহলে বাইতের কল্যাণ চান, তখন তার মধ্যে নম্রতার উদ্রেক ঘটান। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৪৪৭১)

মৃত্যুর আগে নেক আমলের সুযোগ লাভ : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে তার জীবদ্দশায় সৎকাজ করার তাওফিক দান করেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন তাঁর বান্দা সম্পর্কে কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তাকে আমল করতে দেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কিভাবে তিনি আমল করতে দেন? তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি তাকে নেক আমলের তাওফিক দান করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৪২)

মহান আল্লাহ আমাদের কল্যাণময় জীবন দান করুন। আমিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

মহান আল্লাহর বিশেষ কল্যাণ লাভ করে যারা

আপডেট টাইম : ১২:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪
মহান আল্লাহ বান্দার চিরকল্যাণকামী। তিনি বান্দার জন্য সহজ চান, কঠিন চান না। সর্বদা বান্দার কল্যাণ চান। আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

ইসলামের জন্য অন্তর উন্মুক্ত : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তার অন্তরকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করেন।

পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যার বক্ষকে আল্লাহ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার রবের দেওয়া জ্যোতির মধ্যে আছে।’ (সুরা জুমার, হাদিস : ২২)বিপদাপদে শান্ত : কখনো কখনো বিপদাপদ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিয়ামত। তিনি এর মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর অবশ্যই আমরা তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, ধন ও প্রাণের ক্ষতির মাধ্যমে এবং ফল-শস্যাদি বিনষ্টের মাধ্যমে।

’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫)আল্লাহ তাআলা কোনো নেককার ব্যক্তির কল্যাণ চাইলে তাকে বিপদে ফেলেন। হাদিসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর ওপর আমার হাত রাখলে তাঁর গায়ের চাদরের ওপর থেকেই তাঁর দেহের প্রচণ্ড তাপ অনুভব করলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কত তীব্র জ্বর আপনার।

তিনি বলেন, আমাদের (নবী-রাসুলদের) অবস্থা এমনই হয়ে থাকে। আমাদের ওপর দ্বিগুণ বিপদ আসে এবং দ্বিগুণ পুরস্কারও দেওয়া হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কার ওপর সর্বাধিক কঠিন বিপদ আসে? তিনি বলেন, নবীদের ওপর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তারপর কার ওপর? তিনি বলেন, তারপর নেককার বান্দাদের ওপর। তাদের কেউ এতটা দারিদ্র্যপীড়িত হয় যে শেষ পর্যন্ত তার কাছে তার পরিধানের কম্বল ছাড়া আর কিছুই থাকে না।

তাদের কেউ বিপদে এত শান্ত ও উত্ফুল্ল থাকে, যেমন তোমাদের কেউ ধন-সম্পদ প্রাপ্তিতে আনন্দিত হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২৪)সত্যবাদী সঙ্গী : আল্লাহ যখন কোনো নেতার কল্যাণ চান, তখন তাঁর উত্তম সঙ্গী দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা যখন কোনো নেতার জন্য কল্যাণের ফায়সালা করেন, তখন তিনি তাকে সত্যবাদী, ন্যায়নিষ্ঠ উজির দান করেন। যদি সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর আমির যদি তা স্মরণ রাখে, তখন উজির তাকে সাহায্য করে। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলা কোনো নেতার জন্য অকল্যাণের ফায়সালা করলে তাকে অযোগ্য উজির দান করেন। ফলে যখন  সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না। আর নেতা যদি স্মরণ রাখে, তখন সে তাকে সাহায্য করে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৩২)

দ্বিনের জ্ঞানের অধিকারী : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের জ্ঞান দান করেন। মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের প্রজ্ঞা দান করেন। আল্লাহই দানকারী আর আমি বণ্টনকারী। (বুখারি, হাদিস : ৭১)

দুনিয়ায় সাময়িক সমস্যা : যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা, তাদের তিনি দুনিয়ায়ই কিছু শাস্তি ভোগ করান, যাতে পরকালে তাঁর সেই বান্দাকে শাস্তি ভোগ করতে না হয়। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন তাঁর বান্দার মঙ্গল কামনা করেন, তখন দুনিয়ায় তাকে অতি তাড়াতাড়ি বিপদাপদের সম্মুখীন করা হয়। আর যখন তিনি কোনো বান্দার অকল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তিনি তার গুনাহর শাস্তি প্রদান থেকে বিরত থাকেন। অবশেষে কিয়ামতের দিন তাকে এর পরিপূর্ণ আজাবে নিপতিত করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৬)

সম্পদ ও সন্তান দ্বারা আক্রান্ত : আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ চান, তার নিজের এবং সম্পদ ও সন্তানের ওপর বিপদ দেন। রাসুল (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তির জন্য বিনাশ্রমে আল্লাহর পক্ষ থেকে মর্যাদার আসন নির্ধারিত হলে আল্লাহ তার দেহ, সম্পদ অথবা সন্তানকে বিপদগ্রস্ত করেন। অতঃপর সে তাতে ধৈর্যধারণ করলে শেষ পর্যন্ত বরকতময় মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ওই মর্যাদার স্তরে উপনীত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩০৯০)

নম্র স্বভাবের অধিকারী : আল্লাহ নম্রতাকে ভালোবাসেন। আর তিনি যার কল্যাণ চান, তাকেই এই গুণ দান করেন। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো আহলে বাইতের কল্যাণ চান, তখন তার মধ্যে নম্রতার উদ্রেক ঘটান। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৪৪৭১)

মৃত্যুর আগে নেক আমলের সুযোগ লাভ : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে তার জীবদ্দশায় সৎকাজ করার তাওফিক দান করেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন তাঁর বান্দা সম্পর্কে কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তাকে আমল করতে দেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কিভাবে তিনি আমল করতে দেন? তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি তাকে নেক আমলের তাওফিক দান করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৪২)

মহান আল্লাহ আমাদের কল্যাণময় জীবন দান করুন। আমিন।