ঢাকা ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি ক্রয়ে বাড়ছে আর্থিক সীমা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৬৭ বার
সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও ক্রয়কারী সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রয় পদ্ধতির আর্থিক সীমা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিবিপিএ)। এরই মধ্যে সংস্থাটি তাদের প্রস্তাবিত বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির মূল্যসীমা পুনর্নির্ধারণ করে ক্রয়কারী সংস্থাগুলোর মতামত চেয়েছে। অনেক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা কেনাকাটার সীমা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও বর্তমানে এই পদক্ষেপ নির্বাচনের কারণে কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরকারি ক্রয়ে আর্থিক সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বিপিপিএ কাজ করছে। তবে নির্বাচনের জন্য কিছুটা ধীরগতিতে কাজ এগোচ্ছে। নতুন সরকার এলে এটা দ্রুত হয়ে যাবে এবং আরো কিছু পরিবর্তন আসবে।

এ বিষয়ে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শোহেলের রহমান চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি তবে এখনো শেষ করতে পারিনি।

আমরা সবার মতামত নিয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করছি। এরপর সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারাও সবার মতামত নিয়েই প্রস্তাবটি ফাইনাল করবে। তবে কত বাড়ছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে আইএমইডির আওতাধীন সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালক বর্তমানে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শোহেলের রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, (পিপিআর) ২০০৮ বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির আর্থিক সীমা বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিপিটিইউয়ের পরিচালক (বিধি ও পলিসি) জানান, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮-এ বর্ণিত কোটেশন জ্ঞাপনের অনুরোধ পদ্ধতি, সরাসরি চুক্তি, সরাসরি নগদ ক্রয়ের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন আর্থিক সীমা নির্দিষ্ট রয়েছে (বিধি ৬৯, ৭৬, ৮১ ও ৮৮)। সরকারের উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ২০১৬ সালে নির্ধারিত উল্লিখিত আর্থিক সীমা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বিধায় মাঠ পর্যায়ে সরকারি কাজের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্রয়কারী সংস্থা থেকে এ বিষয়ে সিপিটিইউকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সুপারিশ উল্লেখপূর্বক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সরাসরি ক্রয়ের পরিসীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পিপিআর, ২০০৮-এ বিদ্যমান বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির মূল্যসীমা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ক্রয়কারী সংস্থাগুলোর মতামত বা পরামর্শ জানার জন্য এই সভা।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কোটেশন জ্ঞাপনের অনুরোধ পদ্ধতি অনুযায়ী রাজস্ব বাজেটের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের জন্য অনধিক ১০ লাখ টাকা এবং ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের জন্য অনধিক পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সীমা পুনর্নির্ধারণ করা যেতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী সভায় কোটেশন পদ্ধতি অনুসরণে পণ্য, কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সীমা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটেশন পদ্ধতিতে পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা কেনাকাটায় একবারে তিন লাখ ও বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। এই সীমা তারা একবারে ছয় লাখ টাকা ও বছরে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘গত সাত বছরের মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় এটা বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। তবে যাতে এতটা বাড়ানো না হয়, যাতে অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। তাই সব কিছু বিবেচনা করেই কেনাকাটায় একটি সীমা নির্ধারণ করা দরকার।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সরকারি ক্রয়ে বাড়ছে আর্থিক সীমা

আপডেট টাইম : ১২:২৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও ক্রয়কারী সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রয় পদ্ধতির আর্থিক সীমা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিবিপিএ)। এরই মধ্যে সংস্থাটি তাদের প্রস্তাবিত বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির মূল্যসীমা পুনর্নির্ধারণ করে ক্রয়কারী সংস্থাগুলোর মতামত চেয়েছে। অনেক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা কেনাকাটার সীমা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও বর্তমানে এই পদক্ষেপ নির্বাচনের কারণে কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরকারি ক্রয়ে আর্থিক সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বিপিপিএ কাজ করছে। তবে নির্বাচনের জন্য কিছুটা ধীরগতিতে কাজ এগোচ্ছে। নতুন সরকার এলে এটা দ্রুত হয়ে যাবে এবং আরো কিছু পরিবর্তন আসবে।

এ বিষয়ে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শোহেলের রহমান চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি তবে এখনো শেষ করতে পারিনি।

আমরা সবার মতামত নিয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করছি। এরপর সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারাও সবার মতামত নিয়েই প্রস্তাবটি ফাইনাল করবে। তবে কত বাড়ছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে আইএমইডির আওতাধীন সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালক বর্তমানে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শোহেলের রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, (পিপিআর) ২০০৮ বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির আর্থিক সীমা বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিপিটিইউয়ের পরিচালক (বিধি ও পলিসি) জানান, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮-এ বর্ণিত কোটেশন জ্ঞাপনের অনুরোধ পদ্ধতি, সরাসরি চুক্তি, সরাসরি নগদ ক্রয়ের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন আর্থিক সীমা নির্দিষ্ট রয়েছে (বিধি ৬৯, ৭৬, ৮১ ও ৮৮)। সরকারের উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ২০১৬ সালে নির্ধারিত উল্লিখিত আর্থিক সীমা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বিধায় মাঠ পর্যায়ে সরকারি কাজের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্রয়কারী সংস্থা থেকে এ বিষয়ে সিপিটিইউকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সুপারিশ উল্লেখপূর্বক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সরাসরি ক্রয়ের পরিসীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পিপিআর, ২০০৮-এ বিদ্যমান বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতির মূল্যসীমা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ক্রয়কারী সংস্থাগুলোর মতামত বা পরামর্শ জানার জন্য এই সভা।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কোটেশন জ্ঞাপনের অনুরোধ পদ্ধতি অনুযায়ী রাজস্ব বাজেটের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের জন্য অনধিক ১০ লাখ টাকা এবং ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের জন্য অনধিক পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সীমা পুনর্নির্ধারণ করা যেতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী সভায় কোটেশন পদ্ধতি অনুসরণে পণ্য, কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সীমা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটেশন পদ্ধতিতে পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা কেনাকাটায় একবারে তিন লাখ ও বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। এই সীমা তারা একবারে ছয় লাখ টাকা ও বছরে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘গত সাত বছরের মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় এটা বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। তবে যাতে এতটা বাড়ানো না হয়, যাতে অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। তাই সব কিছু বিবেচনা করেই কেনাকাটায় একটি সীমা নির্ধারণ করা দরকার।’