ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবর প্রস্তুত থাকলেও হয়নি দাফন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩১:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৫৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনী সদর উপজেলায় আবু সাঈদ (২০) নামের এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে লাশ মর্গে পাঠান। এরপর কেটে গেছে পুরো একদিন।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন দিতে বিকেল ৩টা বেজে যাওয়ায় লাশ ময়নাতদন্ত করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে, লাশ দাফনের জন্য কবর খোঁড়াসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়মের বেড়াজালে ভোগান্তিতে পড়েন নিহতের স্বজনেরা। পরে বাধ্য হয় খালি হাতে ফিরে যান তারা।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা নিহতের স্বজনদের। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন দিতে বিকেল ৩টা বেজে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত করতে রাজি হননি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিনুর আলম সুমন।

নিহতের মামা আবদুল খালেক বলেন, রোববার রাত ২টার দিকে আমার ভাগিনার লাশ হাসপাতালের মর্গে আনা হলেও তার ময়নাতদন্ত করা হয়নি। সকালে পুলিশ এসে সুরতহাল প্রতিবেদন ও তদন্তের কাজ শেষ করে দুপুরে আরএমওকে কল করলে ৩টার পর ময়নাতদন্ত হবে না জানিয়ে দেন। অথচ লাশ পাওয়ার আশায় আমরা বাড়িতে কবর খোঁড়াসহ লাশ দাফনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফেলেছি। ডাক্তার ইচ্ছে করলে ময়নাতদন্ত করতে পারতেন। তার খামখেয়ালির কারণে লাশ পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহিনুর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের অপর আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত কেন হয়নি সেটি আমার জানা নেই। তবে দিনের আলো কিংবা পর্যাপ্ত আলো ছাড়া ময়নাতদন্তের কাজ করা যায় না। সাধারণত শীতের দিনে বিকেল ৩টার পর অন্ধকার হয়ে যায় বলে ময়নাতদন্ত করা হয় না।

তদন্তে নিয়োজিত ফেনী মডেল থানার এক কর্মকর্তা বলেন, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলের সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে দুপুর আড়াইটার মধ্যে সুরতহাল প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের বিষয়টি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। তারা ময়নাতদন্ত করলে তবেই আমরা স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারি।

নিহত আবু সাঈদ ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আবাসন এলাকার আবু বক্করের বড় ছেলে। তিনি এলাকায় একটি সুতার মিলে কাজ করতেন। সেখানে এক নারী কর্মীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আত্মহত্যার আগেও ওই মেয়ের সঙ্গে সাঈদের ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান নিহতের মামা আবদুল খালেক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কবর প্রস্তুত থাকলেও হয়নি দাফন

আপডেট টাইম : ১১:৩১:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনী সদর উপজেলায় আবু সাঈদ (২০) নামের এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে লাশ মর্গে পাঠান। এরপর কেটে গেছে পুরো একদিন।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন দিতে বিকেল ৩টা বেজে যাওয়ায় লাশ ময়নাতদন্ত করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে, লাশ দাফনের জন্য কবর খোঁড়াসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়মের বেড়াজালে ভোগান্তিতে পড়েন নিহতের স্বজনেরা। পরে বাধ্য হয় খালি হাতে ফিরে যান তারা।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা নিহতের স্বজনদের। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন দিতে বিকেল ৩টা বেজে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত করতে রাজি হননি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিনুর আলম সুমন।

নিহতের মামা আবদুল খালেক বলেন, রোববার রাত ২টার দিকে আমার ভাগিনার লাশ হাসপাতালের মর্গে আনা হলেও তার ময়নাতদন্ত করা হয়নি। সকালে পুলিশ এসে সুরতহাল প্রতিবেদন ও তদন্তের কাজ শেষ করে দুপুরে আরএমওকে কল করলে ৩টার পর ময়নাতদন্ত হবে না জানিয়ে দেন। অথচ লাশ পাওয়ার আশায় আমরা বাড়িতে কবর খোঁড়াসহ লাশ দাফনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফেলেছি। ডাক্তার ইচ্ছে করলে ময়নাতদন্ত করতে পারতেন। তার খামখেয়ালির কারণে লাশ পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহিনুর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের অপর আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত কেন হয়নি সেটি আমার জানা নেই। তবে দিনের আলো কিংবা পর্যাপ্ত আলো ছাড়া ময়নাতদন্তের কাজ করা যায় না। সাধারণত শীতের দিনে বিকেল ৩টার পর অন্ধকার হয়ে যায় বলে ময়নাতদন্ত করা হয় না।

তদন্তে নিয়োজিত ফেনী মডেল থানার এক কর্মকর্তা বলেন, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলের সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে দুপুর আড়াইটার মধ্যে সুরতহাল প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের বিষয়টি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। তারা ময়নাতদন্ত করলে তবেই আমরা স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারি।

নিহত আবু সাঈদ ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আবাসন এলাকার আবু বক্করের বড় ছেলে। তিনি এলাকায় একটি সুতার মিলে কাজ করতেন। সেখানে এক নারী কর্মীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আত্মহত্যার আগেও ওই মেয়ের সঙ্গে সাঈদের ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান নিহতের মামা আবদুল খালেক।