ঢাকা ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংসদ নির্বাচন দাগি সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বাড়ছে, কিশোর গ্যাংও সক্রিয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রামে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৎপর হচ্ছে দাগি সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন স্থানে একপক্ষকে আরেক পক্ষের হুমকি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনা ঘটছে। নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে-নির্বাচন কমিশন থেকে বারবার বলা হলেও ক্ষমতাশালী দলের প্রার্থীরা ভিন্ন প্রস্তুতি রাখছেন বলে অনেকের অভিযোগ। দাগি সন্ত্রাসীদের কাছে রাখার চেষ্টা করছেন প্রার্থীদের কেউ কেউ। আবার সন্ত্রাসীরা নিজেরাও প্রভাবশালীদের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থায় প্রচার শুরুর পর সংঘাত-সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। এরই মধ্যে পটিয়ায় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে। এ নিয়ে হামলার ঘটনাও ঘটছে। সাতকানিয়ায় মুখোমুখি দুই পক্ষ। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী সন্ত্রাসীরা সৃষ্টি করছে উত্তেজনা।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধেও কঠোর থাকবে প্রশাসন। চিহ্নিত ও দাগি সন্ত্রাসীরা যাতে নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকবে প্রশাসন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চলছে যাচাই-বাছাই। ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ ডিসেম্বর বরাদ্দ দেওয়া হবে প্রতীক। এর পর থেকেই শুরু হবে নির্বাচনি প্রচার। এই প্রচারকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সহিংসতা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনে বেশিরভাগ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওই দলটিরই স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। এ কারণে ভোটারদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। নির্বাচনে দাগি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পাশাপাশি কিশোর গ্যাং নিয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টেনশন। কিশোর গ্যাংও জড়িয়ে যেতে পারে সংঘাতে।

এরই মধ্যে পটিয়ায় ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ এনে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর (স্বতন্ত্র প্রার্থী) পক্ষত্যাগী পিএস হাবিবুল হক চৌধুরী অভিযোগ এনেছেন যে, তাকে ভয়ভীতি প্রদান করা হচ্ছে। এ নিয়ে পটিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। অন্যদিকে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষে কথা বলায় উপজেলার শান্তির হাট এলাকায় আবু তৈয়ব নামে কুসুমপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় তার মাথা ফেটে যায়। পটিয়া আসনে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা থেকে ফেরার পর তাকে বরণ করা হয় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে। ফেরার পথে মোতাহের অনুসারীরা হুইপ অনুসারী এক ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। দাগি সন্ত্রাসীরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে নৌকার বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভিড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এখনই সন্ত্রাসীদের লাগাম টানা না গেলে নির্বাচনে এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

শুক্রবার রাতে সাতকানিয়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায় । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৬টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচন সামনে রেখে ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্যই এই হামলার পর নৌকার প্রার্থী ড. আবুরেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ মোতালেব সিআইপির অনুসারীরা এখন মুখোমুখি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ৪ হাজার ২৭৫টি। এর মধ্যে মহানগরে ২৪৭৭টি এবং উপজেলাগুলোতে ১৭৯৮টি। তবে অবৈধ অস্ত্রের সংখ্যা কত তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। সিএমপির শীর্ষ এক কর্মকর্তার ধারণা দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র রয়েছে চট্টগ্রাম নগরীতে। জেলায় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হতে পারে। মূলত অস্ত্র মামলার সূত্র ধরেই এ হিসাবটা করেছে পুলিশ প্রশাসন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দাগি আসামির আনাগোনা বেড়েছে এলাকায়। তবে নির্বাচনের আগেই নড়েচড়ে বসতে শুরু করে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড। কারাগার বা দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারে উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের বার্তা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া ‘কিশোর গ্যাং’। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও গ্যাং সদস্যরা ঘটাচ্ছে নানা অঘটন। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ এমন অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার পরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের। তাদের অপতৎপরতায় সাধারণ মানুষ ভয়ে তটস্থ থাকে। কেননা কিশোর গ্যাং সদস্যদের নানা অপকর্মের মূলে থাকে তাদের কথিত ‘বড়ভাই’। শুধু নগরীতে নয়, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এখন বিভিন্ন উপজেলায়ও তৎপর। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, সরকারি দপ্তরগুলোতে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, গার্মেন্ট ব্যবসা, জমি দখল, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল কিংবা কোণঠাসা করাসহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রুপিং, সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাং লিডাররা। আর গ্রুপ ভারী করতে কিশোর তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে কথিত বড়ভাইরা।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সব সময় তৎপর। জেলায় কয়েক বছরে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আবারও বিশেষ অভিযান শুরু হবে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ ও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার ঠেকাতে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। সন্ত্রাসীরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে এলেও তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সংসদ নির্বাচন দাগি সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বাড়ছে, কিশোর গ্যাংও সক্রিয়

আপডেট টাইম : ১০:১২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রামে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৎপর হচ্ছে দাগি সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন স্থানে একপক্ষকে আরেক পক্ষের হুমকি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনা ঘটছে। নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে-নির্বাচন কমিশন থেকে বারবার বলা হলেও ক্ষমতাশালী দলের প্রার্থীরা ভিন্ন প্রস্তুতি রাখছেন বলে অনেকের অভিযোগ। দাগি সন্ত্রাসীদের কাছে রাখার চেষ্টা করছেন প্রার্থীদের কেউ কেউ। আবার সন্ত্রাসীরা নিজেরাও প্রভাবশালীদের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থায় প্রচার শুরুর পর সংঘাত-সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। এরই মধ্যে পটিয়ায় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে। এ নিয়ে হামলার ঘটনাও ঘটছে। সাতকানিয়ায় মুখোমুখি দুই পক্ষ। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী সন্ত্রাসীরা সৃষ্টি করছে উত্তেজনা।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধেও কঠোর থাকবে প্রশাসন। চিহ্নিত ও দাগি সন্ত্রাসীরা যাতে নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকবে প্রশাসন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চলছে যাচাই-বাছাই। ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ ডিসেম্বর বরাদ্দ দেওয়া হবে প্রতীক। এর পর থেকেই শুরু হবে নির্বাচনি প্রচার। এই প্রচারকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সহিংসতা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনে বেশিরভাগ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওই দলটিরই স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। এ কারণে ভোটারদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। নির্বাচনে দাগি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পাশাপাশি কিশোর গ্যাং নিয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টেনশন। কিশোর গ্যাংও জড়িয়ে যেতে পারে সংঘাতে।

এরই মধ্যে পটিয়ায় ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ এনে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর (স্বতন্ত্র প্রার্থী) পক্ষত্যাগী পিএস হাবিবুল হক চৌধুরী অভিযোগ এনেছেন যে, তাকে ভয়ভীতি প্রদান করা হচ্ছে। এ নিয়ে পটিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। অন্যদিকে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষে কথা বলায় উপজেলার শান্তির হাট এলাকায় আবু তৈয়ব নামে কুসুমপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় তার মাথা ফেটে যায়। পটিয়া আসনে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা থেকে ফেরার পর তাকে বরণ করা হয় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে। ফেরার পথে মোতাহের অনুসারীরা হুইপ অনুসারী এক ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। দাগি সন্ত্রাসীরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে নৌকার বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভিড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এখনই সন্ত্রাসীদের লাগাম টানা না গেলে নির্বাচনে এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

শুক্রবার রাতে সাতকানিয়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায় । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৬টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচন সামনে রেখে ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্যই এই হামলার পর নৌকার প্রার্থী ড. আবুরেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ মোতালেব সিআইপির অনুসারীরা এখন মুখোমুখি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ৪ হাজার ২৭৫টি। এর মধ্যে মহানগরে ২৪৭৭টি এবং উপজেলাগুলোতে ১৭৯৮টি। তবে অবৈধ অস্ত্রের সংখ্যা কত তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। সিএমপির শীর্ষ এক কর্মকর্তার ধারণা দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র রয়েছে চট্টগ্রাম নগরীতে। জেলায় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হতে পারে। মূলত অস্ত্র মামলার সূত্র ধরেই এ হিসাবটা করেছে পুলিশ প্রশাসন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দাগি আসামির আনাগোনা বেড়েছে এলাকায়। তবে নির্বাচনের আগেই নড়েচড়ে বসতে শুরু করে চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড। কারাগার বা দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারে উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের বার্তা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া ‘কিশোর গ্যাং’। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও গ্যাং সদস্যরা ঘটাচ্ছে নানা অঘটন। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ এমন অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার পরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের। তাদের অপতৎপরতায় সাধারণ মানুষ ভয়ে তটস্থ থাকে। কেননা কিশোর গ্যাং সদস্যদের নানা অপকর্মের মূলে থাকে তাদের কথিত ‘বড়ভাই’। শুধু নগরীতে নয়, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এখন বিভিন্ন উপজেলায়ও তৎপর। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, সরকারি দপ্তরগুলোতে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, গার্মেন্ট ব্যবসা, জমি দখল, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল কিংবা কোণঠাসা করাসহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রুপিং, সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাং লিডাররা। আর গ্রুপ ভারী করতে কিশোর তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে কথিত বড়ভাইরা।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সব সময় তৎপর। জেলায় কয়েক বছরে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আবারও বিশেষ অভিযান শুরু হবে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ ও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার ঠেকাতে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। সন্ত্রাসীরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে এলেও তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।