শোলাকিয়ায় ঈদগাহে জঙ্গি হামলা নিয়ে পুলিশের আইজিপি হেফাজতকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অসত্য দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী। আজ রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তারা দাবি করেন।
এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সুধী সমাবেশে আইজিপি বলেন, ‘জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেবকে (হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব) ফোন করলাম। উনাকে বললাম গুলশানে এতো বড় ঘটনা ঘটলো, কিশোরগঞ্জে ঈদগাহর কাছে হামলা হলো; আপনারা নীরব কেনো? এই জঙ্গিরা যে কাজ করছে এটা কি ইসলামের পক্ষে? জঙ্গিবাদকে কি ইসলাম সাপোর্ট করে?’
এর পরিপ্রেক্ষিতে এই দুই হেফাজত নেতা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও যারা হত্যাকাণ্ড চালায় তারা ইসলাম ও মানবতার শত্রু। নাগরিক হিসেবে আমরা কেউতো নিরাপদ নই। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীও কন্ট্রোল করতে ব্যর্থ। পুলিশ প্রধানের কাজ হলো তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। হেফাজতকে ঘায়েল করা তার দায়িত্ব নয়। হেফাজত সম্পর্কে আইজিপির বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।
তারা বলেন, হেফাজত ও আলেম সমাজ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত। কারো কথায় নয়, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, জুলম নিযার্তন, দুনীর্তি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা ঈমানী দায়িত্ব হিসেব সবসময় সোচ্চার ছিলাম আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাল্লাহ। কারো চোখ রাঙ্গানীকে আলেমরা ভয় করে না।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, হামলা, নাশকতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববাসী শঙ্কিত ও আতঙ্কিত। সারাবিশ্বেই সন্ত্রাসবাদ রাষ্ট্রযন্ত্রের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ইহুদী-খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদী ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী পরিচালিত সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জাতি-ধর্ম ও দলমত নির্বিশেষে সূদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।’
দল মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ‘গুলশানে ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলায় আমরা স্তম্ভিত। গোটা জাতি উদ্ভেগ, উৎকণ্ঠা, আতংক ও অস্বস্থিতে ভুগছে। দেশের নাগরিক, বিদেশি কূটনীতিক ও সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’