গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলা, সেই রাকিব কোথায়

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গিদের হামলায় আটকে পড়া সেই রাকিব কোথায়? রাকিবের সন্ধানে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা গুঞ্জন। রাকিব কিচেনের কুক।

গুলশানে রেস্টুরেন্টে জিম্মি ঘটনা নিয়ে স্ট্যাটাস দেন ওই রেস্টুরেন্টের কুক দীন ইসলাম রাকিব। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘সবাই আমার জন্য দোয়া করেন, জানি না বাঁচমু না মইরা যামু।’

গতকাল শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জিম্মিদশা থেকে এমন স্ট্যাটাস দিয়ে রাকিব দোয়া চান বন্ধু ও স্বজনদের কাছে।

মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে রাকিবের ছবিসহ সেই পোস্ট। আজ সেনাবাহিনীর অভিযানের মধ্যদিয়ে জিম্মিদশা ঘটনার অবসান ঘটলে রাকিবের সন্ধানে পোস্ট দিতে থাকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

একজন লিখেছে, ‘আল্লাহ পাক শেষমেষ তোরে মৃত্যুর মুখে থেকে ফিরেই আনছে।’ তবে রাকিব কোথায় আছে কেমন আছে জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার রাতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে ৫নং বাসার দ্বিতীয় তলায় হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় কয়েক অস্ত্রধারী। রেস্টুরেন্টে

প্রবেশের সময় তারা বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময় হয়।

ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন, ডিবির এসি রবিউল ইসলাম, পুলিশের দুই কনস্টেবল, একজন মাইক্রোবাসচালকসহ ২০ জনের বেশি।

গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান ওসি সালাউদ্দিন এবং এসি রবিউল।

গুলশান এ হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে অভিযান শেষে শনিবার সকালে ২০ বিদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছে ৬ জঙ্গি। আটক করা হয়েছে একজনকে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে জঙ্গিদের গুলি ও বোমার আঘাতে ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। একজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

এর মধ্যে একজন জাপানি ও ২ জন শ্রীলঙ্কান নাগরিক রয়েছেন। আইএসপিআর এ তথ্য জানিয়েছে।

সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, জিম্মি সংকট অবসানে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করা হয়।

শনিবার সকালের এ অভিযানের পর ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের সবাই বিদেশি এবং অভিযানের আগেই তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, অভিযানের সময় ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজন বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে দুজন শ্রীলঙ্কার ও একজন জাপানের নাগরিক। তবে চূড়ান্ত অভিযানে অংশগ্রহণকারী কোনো কমান্ডো আহত হননি।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এ অভিযান চালানো হয়। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেয় নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে অপরাশেন থান্ডারবোল্ট শুরু হয়। ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যেই যৌথবাহিনী দুষ্কৃতকারীদের নির্মূল করতে সক্ষম হয়। সাড়ে ৮টায় পুরো অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর