হাওর বার্তা ডেস্কঃ তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশের সাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের পেশা আর আয়ের ধরন। কায়িক শ্রমের চেয়ে বুদ্ধিভিত্তিক কাজে বেশি ঝুঁকছে মানুষ। সম্প্রতি এর সাথে যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংবলিত প্রযুক্তি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারলে থমকে যেতে পারে আউটসোসিং ও ফ্রিল্যান্সিং খাতের অপার সম্ভাবনা।
কৃষিভিত্তিক কর্মসংস্থান থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে মানুষ। নতুন প্রজন্মের মনোযোগ শিল্প ও সেবা খাতে। তবে কঠিন প্রতিযোগিতা আর সীমিত পদসংখ্যার কারণে অনেকে এসব খাতে জায়গা করে নিতে পারছেন না। এমন বাস্তবতায় নতুন দুয়ার খুলেছে তথ্য-প্রযুক্তি। গোটা বিশ্বই এখন কর্মক্ষেত্র। যেকোনো স্থানে বসে বিশ্বের নানাপ্রান্তে কাজ করছে মানুষ। দ্রুত বাড়ছে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা।
বাংলাদেশেও নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান বা আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে উঠছে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং। একটা ল্যাপটপ, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং সামান্য প্রশিক্ষণ থাকলে যেকেউই যেকোনও দেশের ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাজ বাগিয়ে নিতে পারছেন। আয় করছেন বিদেশি মুদ্রা।
তবে বিশ্বজুড়ে ক্রমেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং পেশায়। স্মার্ট উদ্যোক্তা-ফ্রিল্যান্সারদেরও পড়তে হচ্ছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখে। এআই বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এরমধ্যে অন্যতম।
এমডিইনফোটেক সিনিয়র ওয়্যারহাউজ এক্সিকিউটিভ ফাতেমা আক্তার মৌসুমী বলেন, “বিভিন্ন ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য অনেকগুলো এআই সাইট আছে। যার কারণে আমরা ওইভাবে ক্লাইন্ট পাচ্ছিনা বা কাজ আসছেনা। এআই থেকে তারা জিনিসগুলো গুছিয়ে নিচ্ছে।”
তবে এআইকে ভয় না পেয়ে হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ আরও সহজীকরণ সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স স্পেশালিস্ট রাজিবুল ইসলাম বলেন, “কন্টেইন্ট রাইটার যখন সে লিখে তখন এআই জেনারেট করে দিচ্ছি। তাতে দেখা যায়, যে ক্রিটিভিয়েটা হিউম্যান ব্রেইন থেকে আসে তা এআই থেকে পাওয়া যাবেনা।”
এআই-সহ পরিবর্তিত প্রযুক্তি সাথে মানিয়ে জ্ঞান ও সৃজনের সাথে দক্ষতার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের পরামর্শ এই প্রযুক্তি শিক্ষকের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিএম মইনুল ইসলাম বলেন, “তারা প্রসেসটা জানেন, লার্ন করে কিভাবে মার্কেট থেকে কাজটা নিতে পারেন বা ফেমিংটা পেতে পারেন। সুতরাং এখন প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আপনি একটা জিনিস শিখেই ওটা দিয়ে একদম লাইফ শেষ করে ফেলবেন এরকমটা ভেবে বসে থাকলে হবেনা।”
বর্তমানে সরকার-স্বীকৃত প্রায় ৭ লাখ ফ্রিল্যান্সার আছে বাংলাদেশে। রেমিট্যান্স অর্জনের পাশাপাশি এখাতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।