ঢাকা ০৯:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহর থেকে গরিব তাড়িয়ে বড়লোকদের কাছে জমি বিক্রি করছে রাজউক : পরিকল্পনামন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • ৬৬ বার

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, যে উদ্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেটা কতটুকু করতে পেরেছে, সেটা জানা নেই। তবে শহর থেকে গরিব তাড়িয়ে তাদের জমি বড়লোকদের দিয়ে তাদের আরও বড়লোক বানিয়েছে, এটা পরিষ্কার। তিনি বলেন, গরিবদের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড় লোকদের কাছে বিক্রি করছে। রাজউক নগর উন্নয়ন কতটুকু করেছে, আর গরিব তাড়ানোর কাজ কতটুকু করেছে, সেটা চিন্তার বিষয়।

শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে স্থপতি অধ্যাপক ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদের ‘ঢাকা ডেলিরিয়াম’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং বাংলাদেশ আরবান নলেজ হাব যৌথ উদ্যোগে ‘পারস্পেক্টিভ অন সাউথ এশিয়ান আরবানিজম’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তারা বড় বড় মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করে ভাড়া দিচ্ছে। গরিব মানুষরা বাস্তুচ্যুত হয়ে এদিক সেদিক থাকছে, কান্নাকাটি করছে। ঢাকা শহরের উন্নয়নে নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়।

এম এ মান্নান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তারা কতটুকু তা করতে পারছে সেটাও এখন ভাবার বিষয়। আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি আসলে পরিকল্পনা করি না। আমার আশপাশে এই বিষয়ে প্রশিক্ষিত কিছু লোক আছে, তারা এটা করে। কিন্তু যেভাবে পুঁজিবাদী উন্নয়ন বাড়ছে, তারাও কিছুই করতে পারছে না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে, চিন্তা নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তার কিছুই করতে পারছে না পরিকল্পনা কমিশন। কারণ পরিকল্পনা হয় বাই অর্ডার। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।

তিনি বলেন, আমরা এখন ঢাকার প্রলাপ শুনছি। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে শহরটা অসুস্থ, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে। তবে যদি এটিকে সঠিক উপায়ে চিকিৎসা করা হয়, আশা করি তা সেরে যাবে। আসলে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষ ঢাকায় আসার স্বপ্ন দেখে, এতে করে এই শহরের মানুষ বাড়ে।

সরকার এখন দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষের সংখ্যা বাড়লে তা সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না গেলে সমস্যা আরও বাড়বে। তবে আশার কথা হলো, শহর ও গ্রামের বৈষম্য এখন কমে এসেছে। এখন পুরো দেশকেই একটা ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করে সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। সরকার এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষরা যাতে শহরের সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ টি এম নুরুল আমিন, বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক স্থপতি কাজী খালেদ আশরাফ, অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ। এ ছাড়া স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শহর থেকে গরিব তাড়িয়ে বড়লোকদের কাছে জমি বিক্রি করছে রাজউক : পরিকল্পনামন্ত্রী

আপডেট টাইম : ১১:০৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, যে উদ্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেটা কতটুকু করতে পেরেছে, সেটা জানা নেই। তবে শহর থেকে গরিব তাড়িয়ে তাদের জমি বড়লোকদের দিয়ে তাদের আরও বড়লোক বানিয়েছে, এটা পরিষ্কার। তিনি বলেন, গরিবদের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড় লোকদের কাছে বিক্রি করছে। রাজউক নগর উন্নয়ন কতটুকু করেছে, আর গরিব তাড়ানোর কাজ কতটুকু করেছে, সেটা চিন্তার বিষয়।

শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে স্থপতি অধ্যাপক ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদের ‘ঢাকা ডেলিরিয়াম’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং বাংলাদেশ আরবান নলেজ হাব যৌথ উদ্যোগে ‘পারস্পেক্টিভ অন সাউথ এশিয়ান আরবানিজম’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তারা বড় বড় মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করে ভাড়া দিচ্ছে। গরিব মানুষরা বাস্তুচ্যুত হয়ে এদিক সেদিক থাকছে, কান্নাকাটি করছে। ঢাকা শহরের উন্নয়নে নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়।

এম এ মান্নান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তারা কতটুকু তা করতে পারছে সেটাও এখন ভাবার বিষয়। আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি আসলে পরিকল্পনা করি না। আমার আশপাশে এই বিষয়ে প্রশিক্ষিত কিছু লোক আছে, তারা এটা করে। কিন্তু যেভাবে পুঁজিবাদী উন্নয়ন বাড়ছে, তারাও কিছুই করতে পারছে না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে, চিন্তা নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তার কিছুই করতে পারছে না পরিকল্পনা কমিশন। কারণ পরিকল্পনা হয় বাই অর্ডার। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।

তিনি বলেন, আমরা এখন ঢাকার প্রলাপ শুনছি। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে শহরটা অসুস্থ, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে। তবে যদি এটিকে সঠিক উপায়ে চিকিৎসা করা হয়, আশা করি তা সেরে যাবে। আসলে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষ ঢাকায় আসার স্বপ্ন দেখে, এতে করে এই শহরের মানুষ বাড়ে।

সরকার এখন দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষের সংখ্যা বাড়লে তা সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না গেলে সমস্যা আরও বাড়বে। তবে আশার কথা হলো, শহর ও গ্রামের বৈষম্য এখন কমে এসেছে। এখন পুরো দেশকেই একটা ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করে সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। সরকার এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষরা যাতে শহরের সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ টি এম নুরুল আমিন, বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক স্থপতি কাজী খালেদ আশরাফ, অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ। এ ছাড়া স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।