ঢাকা ১০:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিটা গ্রাম ইউনিয়ন পর্যন্ত পানি শোধনাগার নির্মাণের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩
  • ৬৭ বার

শুধু বড় শহরেই নয়, পর্যায়ক্রমে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পানি শোধনাগার নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধন কেন্দ্র দাশেরকান্দি স্যুয়েরেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (এসটিপি) কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় এই তাগিদ দেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র রাজধানী ও মহানগর নয়, দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।

গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষ যেন সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পান সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকা শহর নিয়ে ভাবলে হবে না। প্রতিটি গ্রামে সকল নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে।

নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে ঢাকা ওয়াসাকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকার চারপাশে পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের কথা জানান।

আওয়ামী লীগের আমলে দেশের মানুষের জীবনমান পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য গণতান্ত্রিক ধারার সরকার প্রয়োজন।

ঢাকা মহানগরে ২৬০ কোটির লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ঢাকা ওয়াসা এখন ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ঢাকা ওয়াসার। পানির বিল এখন ১০০ শতাংশ আদায় করতে সক্ষম ওয়াসা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের শুভ উদ্বোধন করেছি,  ইতিমধ্যে আরেকটি, পাগলা পয়ঃশোধনাগারের ভিত্তি স্থাপন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায়, তখন ঢাকা শহরে মাত্র ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল এক কোটি বিশ লাখের মতো। পানি উৎপাদন হতো ১২০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার পানির বিল মাত্র ৬৪ শতাংশ আদায় হতো। রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি আর আমার ছোট বোন জার্মানিতে ছিলাম। মিলিটারি ডিক্টেটর আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভরসা করে আমি এক প্রকার জোর করে দেশে চলে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় সংগ্রাম।

দাশেরকান্দি স্যুয়েরেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দেশে এই ধরনের প্রথম প্লান্ট, যা নগরীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। দৈনিক ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ মেট্রিক টন পয়ঃশোধন প্রক্রিয়ার ক্ষমতা আছে এই প্লান্টের, যা রাজধানীর মোট পয়ঃশোধনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

দাশেরকান্দি শোধানাগার প্ল্যান্ট যা খিলগাঁও থানার অন্তর্গত, আফতাবনগর সংলগ্ন এবং গুলশান (একাংশ), বনানী, তেজগাঁও, নিকেটন, মগবাজার, মালিবাগ, আফতাবনগর, বাড্ডা, কলাবাগান, পান্থপথ, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার পয়ঃশোধনের ব্যবস্থা করবে।

এতে প্রতিদিন প্রায় ৫৬০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ একটি স্লাজ ড্রাইং-বার্নিং সিস্টেম রয়েছে। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। পাওয়ার চায়নার অধীনে চেংডু ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন দ্বারা ডিজাইন ও নির্মিত প্রকল্পটি এক বছরের অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ওয়াসার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রতিটা গ্রাম ইউনিয়ন পর্যন্ত পানি শোধনাগার নির্মাণের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট টাইম : ১০:২২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩

শুধু বড় শহরেই নয়, পর্যায়ক্রমে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পানি শোধনাগার নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধন কেন্দ্র দাশেরকান্দি স্যুয়েরেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (এসটিপি) কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় এই তাগিদ দেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র রাজধানী ও মহানগর নয়, দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।

গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষ যেন সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পান সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকা শহর নিয়ে ভাবলে হবে না। প্রতিটি গ্রামে সকল নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে।

নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে ঢাকা ওয়াসাকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকার চারপাশে পাঁচটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের কথা জানান।

আওয়ামী লীগের আমলে দেশের মানুষের জীবনমান পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য গণতান্ত্রিক ধারার সরকার প্রয়োজন।

ঢাকা মহানগরে ২৬০ কোটির লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ঢাকা ওয়াসা এখন ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ঢাকা ওয়াসার। পানির বিল এখন ১০০ শতাংশ আদায় করতে সক্ষম ওয়াসা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের শুভ উদ্বোধন করেছি,  ইতিমধ্যে আরেকটি, পাগলা পয়ঃশোধনাগারের ভিত্তি স্থাপন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায়, তখন ঢাকা শহরে মাত্র ৬০ ভাগ মানুষ সুপেয় পানি পেত। সে সময় ঢাকার জনসংখ্যা ছিল এক কোটি বিশ লাখের মতো। পানি উৎপাদন হতো ১২০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার পানির বিল মাত্র ৬৪ শতাংশ আদায় হতো। রাজস্ব আয় ছিল মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের সময় আমি আর আমার ছোট বোন জার্মানিতে ছিলাম। মিলিটারি ডিক্টেটর আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভরসা করে আমি এক প্রকার জোর করে দেশে চলে আসি। তারপর থেকে শুরু হয় সংগ্রাম।

দাশেরকান্দি স্যুয়েরেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দেশে এই ধরনের প্রথম প্লান্ট, যা নগরীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। দৈনিক ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ মেট্রিক টন পয়ঃশোধন প্রক্রিয়ার ক্ষমতা আছে এই প্লান্টের, যা রাজধানীর মোট পয়ঃশোধনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

দাশেরকান্দি শোধানাগার প্ল্যান্ট যা খিলগাঁও থানার অন্তর্গত, আফতাবনগর সংলগ্ন এবং গুলশান (একাংশ), বনানী, তেজগাঁও, নিকেটন, মগবাজার, মালিবাগ, আফতাবনগর, বাড্ডা, কলাবাগান, পান্থপথ, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার পয়ঃশোধনের ব্যবস্থা করবে।

এতে প্রতিদিন প্রায় ৫৬০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ একটি স্লাজ ড্রাইং-বার্নিং সিস্টেম রয়েছে। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। পাওয়ার চায়নার অধীনে চেংডু ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন দ্বারা ডিজাইন ও নির্মিত প্রকল্পটি এক বছরের অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ওয়াসার কাছে হস্তান্তর করা হয়।