জিয়ার উন্নয়নের চেতনা থেকেই মোদির চিন্তা

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘মোদি সার্কের আলোকে আঞ্চলিক উন্নয়নের যে কথা বলছেন, তা জিয়াউর রহমানের উন্নয়নের ধ্যান-ধারণা থেকে নেওয়া। জিয়ার ধারণাকে মোদি উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান। মোদির সঙ্গে সকলে মিলে আমরা সে প্রচেষ্টা, তার উদ্যোগ সফল করবো।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃণমূল থেকে দেশের নেতৃত্বে উঠে এসেছেন। তিনি জিয়াউর রহমানের উন্নয়নের চেতনা উপলব্ধি করছেন। উন্নয়ন শুধু নিজ দেশের নয়, হতে হবে আঞ্চলিক উন্নয়ন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অনেক আগেই আঞ্চলিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে সার্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সোমবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ নেতাকর্মীর বক্তব্যের পর ড. মঈন খান সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা জেলা সভাপতি আব্দুর রহমান বাবুল।

মঈন খান আরও বলেন, দেশ আজ ‘৭২ থেকে ‘৭৫ এর মতো কালো অধ্যায়ের দিকে চলে গেছে। এ থেকে দেশকে উত্তরণে আমাদের সবাইকে অবশ্যই শহীদ জিয়ার আদর্শে ফিরে যেতে হবে।

তিনি বলেন, মাত্র এক দিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের দেশ সফর করে গেলেন। আমরা ওনাকে বলেছি, তাকে সম্পর্ক করতে হবে কোনো নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীকে নয়, এ দেশের জনগণের সঙ্গে। তাহলেই আমরা যার যার দেশের সঙ্গে আঞ্চলিক উন্নয়নের দিকে যেতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বলতেন, যদি কাউকে আমার বিরোধিতা বা সমালোচনা করতে না দেই, তাহলে গণতন্ত্র হবে কিভাবে? গণতন্ত্রের মানে এ কথা নয় যে, সবাই আমার পক্ষে কথা বলবে। গণতন্ত্র রেললাইনের ওয়ান ওয়ে ট্র্যাক নয়।

মঈন বলেন, আজ দেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এখানে কথা বলার স্বাধীনতাও নেই। কেউ সরকারের বিরোধিতা করলেই গুম-খুন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। এটা হলো স্বৈরাচারী কাজ। এভাবে কেউ টিকে থাকতে পারেনি।

তিনি বলেন, ‘৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষের উপর নৃশংস হামলা চালিয়েছিল। আজও দেশে তেমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘৭১ সালে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কারণ সেদিন ঢাকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিল পলায়নপর। তারা স্বার্থপরের মতো দায়িত্বপালন না করে পালিয়ে গিয়েছিল।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে জিয়াউর রহমান একটি ধ্বংসপ্রায় জাতিকে উদ্ধার করে উন্নয়নের যে পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, গত ৩৫ বছরেও আমরা আর সেখানে যেতে পারিনি। আমি তিনটি সরকারের মন্ত্রী ছিলাম। আমি স্বীকার করছি, আমরাও পারিনি।

মঈন খান আরও বলেন, গত ৫০ বছরে তৃতীয় বিশ্বে সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। অথচ মজার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদের মাত্র ১১ মিনিটের একটি অধিবেশনে একটি রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করেছিল। একজন সৈনিক জিয়াউর রহমানই সেই মৃত গণতন্ত্রকে আবার নতুন করে জন্ম দিয়েছিলেন। এটাই হচ্ছে শহীদ জিয়ার সৌন্দর্য। তিনি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি মানুষের চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন।

‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, স্বনির্ভরতা অর্জনে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি এম আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল লতিফ মাসুম, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর