ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ছে ১১১৮ কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩
  • ৮৫ বার

উদ্বোধন ও যানচলাচল শুরুর এক বছর পর পদ্মা বহুমুখী সেতুর ব্যয় ১ হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এই ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির এই বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত এক হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০০৭ সালে।  তখন এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরে ২০০৯ সালে প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়।  সবশেষ বিশেষ সংশোধনী নামে আরেক দফা ব্যয় বাড়িয়ে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি করা হয়। এখন আবার পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ানো হলো।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের জুনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায়, তার পরের মাসে জুলাইয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। পরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। আর ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বসানো হয় সেতুর শেষ স্প্যান।

২০২২ সালের ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন ২৬ জুন সেতু দিয়ে যানচলাচল শুরু হয়।

মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)।

উদ্বোধনের আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে এক হাজার ৪৭১ হেক্টর। এর পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে হয়।

মাওয়া প্রান্তের দৈর্ঘ্য হলো ১ দশমিক ৬১৭ কিলোমিটার। এতে রয়েছে চারলেনের ডুয়েল ক্যারেজওয়ে। মোট রাস্তা ২৭ দশমিক ৬ মিটার। এই প্রান্তে রয়েছে ২ দশমিক ১৪১ কিলোমিটার সার্ভিস রোড ও শূন্য দশমিক ৬৮২ কিলোমিটার স্থানীয় সড়ক। এ ছাড়া রয়েছে- টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-১, ওয়ে স্টেশন, ইমারজেন্সি রেসপনস এরিয়া ইত্যাদি।

জাজিরা প্রান্তের দৈর্ঘ্য হলো ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। এতে রয়েছে চারলেনের ডুয়েল ক্যারেজওয়ে। মোট রাস্তা ২৭ দশমিক ৬ মিটার। পাঁচটি সেতু, ২০টি বক্স কালভার্ট, আটটি আন্ডারপাস সংযোগ তৈরি করেছে ১২ কিলোমিটার সার্ভিস রোড ও ৩ কিলোমিটার স্থানীয় সড়কের। এ ছাড়া রয়েছে- টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-৩, ওয়ে স্টেশন, ইমারজেন্সি রেসপনস এরিয়া ইত্যাদি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ছে ১১১৮ কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ০১:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩

উদ্বোধন ও যানচলাচল শুরুর এক বছর পর পদ্মা বহুমুখী সেতুর ব্যয় ১ হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এই ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির এই বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত এক হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০০৭ সালে।  তখন এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরে ২০০৯ সালে প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়।  সবশেষ বিশেষ সংশোধনী নামে আরেক দফা ব্যয় বাড়িয়ে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি করা হয়। এখন আবার পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ানো হলো।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের জুনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায়, তার পরের মাসে জুলাইয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। পরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। আর ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বসানো হয় সেতুর শেষ স্প্যান।

২০২২ সালের ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন ২৬ জুন সেতু দিয়ে যানচলাচল শুরু হয়।

মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)।

উদ্বোধনের আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে এক হাজার ৪৭১ হেক্টর। এর পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে হয়।

মাওয়া প্রান্তের দৈর্ঘ্য হলো ১ দশমিক ৬১৭ কিলোমিটার। এতে রয়েছে চারলেনের ডুয়েল ক্যারেজওয়ে। মোট রাস্তা ২৭ দশমিক ৬ মিটার। এই প্রান্তে রয়েছে ২ দশমিক ১৪১ কিলোমিটার সার্ভিস রোড ও শূন্য দশমিক ৬৮২ কিলোমিটার স্থানীয় সড়ক। এ ছাড়া রয়েছে- টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-১, ওয়ে স্টেশন, ইমারজেন্সি রেসপনস এরিয়া ইত্যাদি।

জাজিরা প্রান্তের দৈর্ঘ্য হলো ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। এতে রয়েছে চারলেনের ডুয়েল ক্যারেজওয়ে। মোট রাস্তা ২৭ দশমিক ৬ মিটার। পাঁচটি সেতু, ২০টি বক্স কালভার্ট, আটটি আন্ডারপাস সংযোগ তৈরি করেছে ১২ কিলোমিটার সার্ভিস রোড ও ৩ কিলোমিটার স্থানীয় সড়কের। এ ছাড়া রয়েছে- টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-৩, ওয়ে স্টেশন, ইমারজেন্সি রেসপনস এরিয়া ইত্যাদি।