ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩
  • ৮৬ বার

ঈদুল আজহার বাকি আরও প্রায় সপ্তাহখানেক। তবে এরইমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। বৃষ্টি ও রোদ থেকে মুসল্লিদের রক্ষায় মাথার ওপর সামিনা হিসেবে ত্রিপল টানানো হচ্ছে। ত্রিপল দিয়ে পুরো মাঠ ঢেকে দেওয়া হবে। পানিরোধক শামিয়ানা দিয়ে উপরের ছাউনি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার কাজ হবে মাঠের ভেতরের অংশে। দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির জন্য বাঁশ টানানোর কাজ করা হচ্ছে। যে বাঁশের ওপরে ত্রিপল দিয়ে পুরো মাঠ ঢেকে দেওয়া হবে। পানিরোধক শামিয়ানা দিয়ে ওপরের ছাউনিও প্রস্তুত করার জন্য বাঁশ টানানো হচ্ছে। এছাড়াও ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার জন্য মাঠের ভেতরের অংশেও মাটি ঢেলে সমতল করা হচ্ছে। এরপর শেষ সময়ে ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে শেষ করা হবে সাজসজ্জার কাজ। স্থাপন করা হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ঈদগাহ ময়দানের ভেতরসহ পুরো ঈদগাহজুড়ে নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা সিসি ক্যামেরা। ঈদুল আজহার লাখো মুসল্লির নামাজ আদায়ের জন্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঠ প্রস্তুতির বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। ঈদগাহ মাঠ ছাড়াও আশপাশের এলাকা তথা হাইকোর্ট মাজার, কদম ফোয়ারাসহ সব জায়গা রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হবে। প্যান্ডেলের কাজে নিয়োজিত পঞ্চাশোর্ধ্ব শ্রমিক আ. রহিম বলেন, আমি ঠিকাদারের খাস শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। প্রতি বছরই প্যান্ডেল নির্মাণে আমি থাকি। আমরা প্রথম থেকে ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। তিনি বলেন, এরপর আরও কিছু শ্রমিক নেওয়া হয়েছে। এখন শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাছ থেকে জাতীয় ঈদগাহের প্যান্ডেল নির্মাণের টেন্ডার পেয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনায় মো. মোজাম্মেল হক। ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বলতে পারেন ঈদগাহ ময়দান প্রায় প্রস্তুত। এখন শুধু নিচে কার্পেটিং এবং সাদা চাদর বিছানোর কাজটুকু বাকি। এটুকু মূলত ঈদের আগের কয়েক দিন করা হয়। তাছাড়া বাকি সব কাজই আমাদের প্রায় শেষ দিকে। তিনি বলেন, প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ লোক মাঠ প্রস্তুতির কাজ করছেন। গত রমজানে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে। আশা করি আবহাওয়া ভালো থাকলে এখানে ঈদুল আজহার নামাজ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, এবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজাহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। ঈদের আগে অন্তত দুদিন হাতে রেখে মাঠের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি, দুদিন আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করা হবে। তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতি শেষে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন কবেন এবং তিনি ঘুরে দেখবেন কোনো ক্রাইসিস আছে কি না। থাকলে সেটি দেখে তিনি তাৎক্ষণিক সমাধান করার চেষ্টা করবেন। জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ মাঠসহ আশপাশে প্রায় এক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এ ছাড়া জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন। পাশাপাশি নারীদের জন্যও পৃথক নামাজের ব্যবস্থা থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজাহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার উদযাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণের জন্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোনো কারণে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হয়। সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত ১৯ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণকল্পে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি এখনো। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জামাদ্দার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জাতীয় ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

আপডেট টাইম : ১২:৪৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩

ঈদুল আজহার বাকি আরও প্রায় সপ্তাহখানেক। তবে এরইমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। বৃষ্টি ও রোদ থেকে মুসল্লিদের রক্ষায় মাথার ওপর সামিনা হিসেবে ত্রিপল টানানো হচ্ছে। ত্রিপল দিয়ে পুরো মাঠ ঢেকে দেওয়া হবে। পানিরোধক শামিয়ানা দিয়ে উপরের ছাউনি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার কাজ হবে মাঠের ভেতরের অংশে। দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে প্যান্ডেল তৈরির জন্য বাঁশ টানানোর কাজ করা হচ্ছে। যে বাঁশের ওপরে ত্রিপল দিয়ে পুরো মাঠ ঢেকে দেওয়া হবে। পানিরোধক শামিয়ানা দিয়ে ওপরের ছাউনিও প্রস্তুত করার জন্য বাঁশ টানানো হচ্ছে। এছাড়াও ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার জন্য মাঠের ভেতরের অংশেও মাটি ঢেলে সমতল করা হচ্ছে। এরপর শেষ সময়ে ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে শেষ করা হবে সাজসজ্জার কাজ। স্থাপন করা হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ঈদগাহ ময়দানের ভেতরসহ পুরো ঈদগাহজুড়ে নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা সিসি ক্যামেরা। ঈদুল আজহার লাখো মুসল্লির নামাজ আদায়ের জন্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঠ প্রস্তুতির বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। ঈদগাহ মাঠ ছাড়াও আশপাশের এলাকা তথা হাইকোর্ট মাজার, কদম ফোয়ারাসহ সব জায়গা রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হবে। প্যান্ডেলের কাজে নিয়োজিত পঞ্চাশোর্ধ্ব শ্রমিক আ. রহিম বলেন, আমি ঠিকাদারের খাস শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। প্রতি বছরই প্যান্ডেল নির্মাণে আমি থাকি। আমরা প্রথম থেকে ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। তিনি বলেন, এরপর আরও কিছু শ্রমিক নেওয়া হয়েছে। এখন শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাছ থেকে জাতীয় ঈদগাহের প্যান্ডেল নির্মাণের টেন্ডার পেয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনায় মো. মোজাম্মেল হক। ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বলতে পারেন ঈদগাহ ময়দান প্রায় প্রস্তুত। এখন শুধু নিচে কার্পেটিং এবং সাদা চাদর বিছানোর কাজটুকু বাকি। এটুকু মূলত ঈদের আগের কয়েক দিন করা হয়। তাছাড়া বাকি সব কাজই আমাদের প্রায় শেষ দিকে। তিনি বলেন, প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ লোক মাঠ প্রস্তুতির কাজ করছেন। গত রমজানে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে। আশা করি আবহাওয়া ভালো থাকলে এখানে ঈদুল আজহার নামাজ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, এবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজাহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। ঈদের আগে অন্তত দুদিন হাতে রেখে মাঠের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি, দুদিন আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করা হবে। তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতি শেষে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন কবেন এবং তিনি ঘুরে দেখবেন কোনো ক্রাইসিস আছে কি না। থাকলে সেটি দেখে তিনি তাৎক্ষণিক সমাধান করার চেষ্টা করবেন। জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ মাঠসহ আশপাশে প্রায় এক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এ ছাড়া জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন। পাশাপাশি নারীদের জন্যও পৃথক নামাজের ব্যবস্থা থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজাহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার উদযাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণের জন্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোনো কারণে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হয়। সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত ১৯ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণকল্পে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি এখনো। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জামাদ্দার।