ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অল্প সময়ে অর্থ লুটতে দেশের বাজারে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
  • ৮০ বার

আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বাজারেও পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ কমার বেলায় দাম কমছে কচ্ছপগতিতে। মাঝখান দিয়ে অল্প সময়ে অতিরিক্ত মুনাফা করে নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে পকেট কাটা পড়ে ভোক্তার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য যেমন- ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে মূল্য হ্রাস পেয়েছে, স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে চিনির মতো পণ্যের বেলায় আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেশের বাজারে দাম বেশি বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরাও বলছেন, ‘মূল্য সমন্বয়’ বলতে এখন কেবল মূল্যবৃদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্যমূল্য বাড়াতে মূল্য সমন্বয়ে ব্যবসায়ীরা যতটা আগ্রহী, কমানোর বেলায় ততটা নন। পণ্যমূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিচ্ছে। সমানুপাতিকভাবে দাম না বেড়ে অতিরিক্ত বাড়ছে। দাম কমার বেলাতেও স্বল্প হারে কমছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভোক্তারা।

বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ জুন মাসের পণ্যমূল্যের প্রতিবেদন বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেলেও গত এক বছরে বেশির ভাগ পণ্যের দাম এখন নিম্নমুখি। প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম অন্তত ৪৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমেছে। এ সময় দেশের বাজারে দাম কমলেও তা অনেক কম। সরকারি সংস্থা ট্র্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম কমেছে মাত্র ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং খোলা সয়াবিনের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ থেকেই বোঝা যায় যে, আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে সয়াবিনের দামে কতটা ফারাক।

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের আমদানি মূল্য হ্রাস পাওয়ায় গত ১১ জুন দেশের বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কমিয়েছে পরিশোধন কোম্পানিগুলো। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ১০ টাকা এবং পাম তেলে ২ টাকা দাম কমানো হয়েছে। এর আগে একই দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য

ও বাজার পরিস্থিতি সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সপ্তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। টাস্কফোর্সের সভায় উপস্থাপন করা তথ্য বলছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিনের যে দর ছিল, এখন তার তুলনায় দাম প্রায় ৪৪ শতাংশ কমেছে। আর অপরিশোধিত পাম তেলের দাম কমেছে প্রায় ৪৯ শতাংশ। সেই তুলনায় দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম কমার হার কম।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে প্রতি মে. টন গমের দাম ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। সেখানে টিসিবির তথ্যে দেখা যাচ্ছে দেশের বাজারে খোলা আটার দাম বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাবে আটার দাম কমার কথা। কিন্তু দাম কমছে না।

দেশে পেঁয়াজের ভালো ফলনের পরেও ভরা মৌসুমে শুধু ভারত থেকে আমদানি বন্ধের অজুহাতে বাজারে দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। রোজার মাসে যে পেঁয়াজের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় কেনা গেছে, সেটা ঈদ-পরবর্তী বাজারে রাতারাতি বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পৌঁছায়। এরপর সরকার ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানির অনুমতি দিলে কম দামে আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে। কিন্তু দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি মাত্র ১০ টাকা কমেছে। বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও দেশি পেঁয়াজের দাম এখন ৮০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের বেলাতেও অভিযোগ উঠেছে, আমদানি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত এক বছরে আদা ও চিনি ছাড়া সব পণ্যের দামই আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে। বিশ্ব বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেও দেখা গেছে আদা ও চিনির দাম বেড়েছে। তবে দেশের বাজারে বেড়েছে বেশি।

বিশ্বব্যাংকের পণ্যমূল্যের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে টিসিবির তথ্য বলছে এই সময়ে দেশের বাজারে চিনির দাম বেড়েছে ৫৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশের বাজারে চিনির দাম অতিরিক্ত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই চিত্র আদার বেলাতেও। বাজারে দেশি, বার্মিজসহ অন্যান্য পদের আদার সরবরাহ থাকলেও চীনা আদার আমদানি কমে যাওয়ায় পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার বেশি।

কদমতলী এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জীবনযাত্রার প্রতিটি পর্যায়ে খরচ বাড়তে থাকায় এমনিতেই চাপে রয়েছি। এর মধ্যে বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্যের পেছনে খরচ বাড়ায় টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। হুটহাট পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কমার বেলায় সামান্য কমে। আমরা যেন ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারের কোনো পণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিলে তার সুযোগ নিয়ে দেশে সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রাতারাতি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করে অতি অল্প সময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে বলছিলেন কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান।

আমাদের সময়কে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের বাজারে সমানুপাতিক হারে দাম বাড়ে না। অতিরিক্ত বাড়ানো হয়। আবার দাম কমার বেলায় কমানো হয় তুলনামূলক কম হারে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারের অভাবে এমনটা হচ্ছে। এর ফলে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে বাজার। তাদের মধ্যে অতি মুনাফার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত করতে হবে আগে।

পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, পণ্য সরবরাহের ২৫ শতাংশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারবে না। পাশাপাশি বাজারে নিবিড় নজরদারি থাকতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অল্প সময়ে অর্থ লুটতে দেশের বাজারে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

আপডেট টাইম : ১২:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বাজারেও পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ কমার বেলায় দাম কমছে কচ্ছপগতিতে। মাঝখান দিয়ে অল্প সময়ে অতিরিক্ত মুনাফা করে নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে পকেট কাটা পড়ে ভোক্তার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য যেমন- ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে মূল্য হ্রাস পেয়েছে, স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে চিনির মতো পণ্যের বেলায় আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেশের বাজারে দাম বেশি বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরাও বলছেন, ‘মূল্য সমন্বয়’ বলতে এখন কেবল মূল্যবৃদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্যমূল্য বাড়াতে মূল্য সমন্বয়ে ব্যবসায়ীরা যতটা আগ্রহী, কমানোর বেলায় ততটা নন। পণ্যমূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিচ্ছে। সমানুপাতিকভাবে দাম না বেড়ে অতিরিক্ত বাড়ছে। দাম কমার বেলাতেও স্বল্প হারে কমছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভোক্তারা।

বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ জুন মাসের পণ্যমূল্যের প্রতিবেদন বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেলেও গত এক বছরে বেশির ভাগ পণ্যের দাম এখন নিম্নমুখি। প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম অন্তত ৪৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমেছে। এ সময় দেশের বাজারে দাম কমলেও তা অনেক কম। সরকারি সংস্থা ট্র্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম কমেছে মাত্র ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং খোলা সয়াবিনের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ থেকেই বোঝা যায় যে, আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে সয়াবিনের দামে কতটা ফারাক।

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের আমদানি মূল্য হ্রাস পাওয়ায় গত ১১ জুন দেশের বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কমিয়েছে পরিশোধন কোম্পানিগুলো। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ১০ টাকা এবং পাম তেলে ২ টাকা দাম কমানো হয়েছে। এর আগে একই দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য

ও বাজার পরিস্থিতি সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সপ্তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। টাস্কফোর্সের সভায় উপস্থাপন করা তথ্য বলছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিনের যে দর ছিল, এখন তার তুলনায় দাম প্রায় ৪৪ শতাংশ কমেছে। আর অপরিশোধিত পাম তেলের দাম কমেছে প্রায় ৪৯ শতাংশ। সেই তুলনায় দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম কমার হার কম।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে প্রতি মে. টন গমের দাম ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। সেখানে টিসিবির তথ্যে দেখা যাচ্ছে দেশের বাজারে খোলা আটার দাম বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাবে আটার দাম কমার কথা। কিন্তু দাম কমছে না।

দেশে পেঁয়াজের ভালো ফলনের পরেও ভরা মৌসুমে শুধু ভারত থেকে আমদানি বন্ধের অজুহাতে বাজারে দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। রোজার মাসে যে পেঁয়াজের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় কেনা গেছে, সেটা ঈদ-পরবর্তী বাজারে রাতারাতি বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পৌঁছায়। এরপর সরকার ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানির অনুমতি দিলে কম দামে আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে। কিন্তু দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি মাত্র ১০ টাকা কমেছে। বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও দেশি পেঁয়াজের দাম এখন ৮০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের বেলাতেও অভিযোগ উঠেছে, আমদানি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত এক বছরে আদা ও চিনি ছাড়া সব পণ্যের দামই আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে। বিশ্ব বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেও দেখা গেছে আদা ও চিনির দাম বেড়েছে। তবে দেশের বাজারে বেড়েছে বেশি।

বিশ্বব্যাংকের পণ্যমূল্যের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে টিসিবির তথ্য বলছে এই সময়ে দেশের বাজারে চিনির দাম বেড়েছে ৫৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশের বাজারে চিনির দাম অতিরিক্ত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই চিত্র আদার বেলাতেও। বাজারে দেশি, বার্মিজসহ অন্যান্য পদের আদার সরবরাহ থাকলেও চীনা আদার আমদানি কমে যাওয়ায় পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার বেশি।

কদমতলী এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জীবনযাত্রার প্রতিটি পর্যায়ে খরচ বাড়তে থাকায় এমনিতেই চাপে রয়েছি। এর মধ্যে বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্যের পেছনে খরচ বাড়ায় টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। হুটহাট পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কমার বেলায় সামান্য কমে। আমরা যেন ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারের কোনো পণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিলে তার সুযোগ নিয়ে দেশে সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রাতারাতি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করে অতি অল্প সময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে বলছিলেন কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান।

আমাদের সময়কে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের বাজারে সমানুপাতিক হারে দাম বাড়ে না। অতিরিক্ত বাড়ানো হয়। আবার দাম কমার বেলায় কমানো হয় তুলনামূলক কম হারে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারের অভাবে এমনটা হচ্ছে। এর ফলে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে বাজার। তাদের মধ্যে অতি মুনাফার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত করতে হবে আগে।

পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, পণ্য সরবরাহের ২৫ শতাংশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারবে না। পাশাপাশি বাজারে নিবিড় নজরদারি থাকতে হবে।