ঢাকা ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমদানির খবরে আকস্মিক কমলো পেঁয়াজের দাম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
  • ৮৮ বার

কুরবানীর ঈদকে ঘিরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) একদিনেই বন্দর দিয়ে ৪৩টি ট্রাকে ১ হাজার ২৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় আবারো একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা করে কমেছে। পেঁয়াজের দাম কমা অব্যাহত থাকায় খুশি বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির পর থেকেই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে নাসিক ও ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম পূর্বের তুলনায় কমতে শুরু করেছে। এতোদিন পূর্বে বন্দরে ইন্দোর জাতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ২৮ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা আরো কমে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বেশকিছুদিন বন্ধের পর যখন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয় তখন পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশি ছিল। তবে কুরবানীর ঈদকে ঘিরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এতে করে গত দু’দিন ধরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। দু’দিন আগে যে পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছিলাম এখন তা ২৭ থেকে ৩০ টাকায় কিনতে পারছেন। এতে করে পেঁয়াজ কিনতে যেমন টাকা কম লাগছে তেমনি মোকামে ক্রেতারা কম দামে পেঁয়াজ খেতে পারছে।

পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। এর পরে কুরবানীর ঈদকে ঘিরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা থাকে। সেই কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ায় বন্দরের ছোট বড় সব ধরনের আমদানিকারকগণ পেঁয়াজের এলসি খুলেছেন। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলো চাহিদা মাফিক পেঁয়াজের এলসি দেয়ায় পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়েই পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমা অব্যাহত রয়েছে। পেঁয়াজ আমদানির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে আসন্ন কুরবানীর ঈদে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না ।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন বন্ধের পর গত ৫ জুন থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আবারো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। প্রথমের দিকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ কম থাকলেও দিন দিন এই পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে বন্দর দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচাপণ্য গরমে অতিদ্রুত পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায় সে কারণে কাস্টমসের কার্যক্রম শেষে আমদানিকারকরা দ্রুত বন্দর থেকে খালাস করে নিতে পারেন সে জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে। বন্দর দিয়ে গত ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৯ কর্মদিবসে ২৬৮টি ট্রাকে ৭ হাজার ৪২৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার একদিনেই ৪৩টি ট্রাকে ১ হাজার ২৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশিয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এতে করে ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণে গত ৫ জুন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে সেদিন থেকেই বন্দর দিয়ে আবারো পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আমদানির খবরে আকস্মিক কমলো পেঁয়াজের দাম

আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩

কুরবানীর ঈদকে ঘিরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) একদিনেই বন্দর দিয়ে ৪৩টি ট্রাকে ১ হাজার ২৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় আবারো একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা করে কমেছে। পেঁয়াজের দাম কমা অব্যাহত থাকায় খুশি বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির পর থেকেই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে নাসিক ও ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম পূর্বের তুলনায় কমতে শুরু করেছে। এতোদিন পূর্বে বন্দরে ইন্দোর জাতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ২৮ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা আরো কমে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বেশকিছুদিন বন্ধের পর যখন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয় তখন পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশি ছিল। তবে কুরবানীর ঈদকে ঘিরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এতে করে গত দু’দিন ধরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। দু’দিন আগে যে পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছিলাম এখন তা ২৭ থেকে ৩০ টাকায় কিনতে পারছেন। এতে করে পেঁয়াজ কিনতে যেমন টাকা কম লাগছে তেমনি মোকামে ক্রেতারা কম দামে পেঁয়াজ খেতে পারছে।

পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। এর পরে কুরবানীর ঈদকে ঘিরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা থাকে। সেই কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ায় বন্দরের ছোট বড় সব ধরনের আমদানিকারকগণ পেঁয়াজের এলসি খুলেছেন। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলো চাহিদা মাফিক পেঁয়াজের এলসি দেয়ায় পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়েই পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমা অব্যাহত রয়েছে। পেঁয়াজ আমদানির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে আসন্ন কুরবানীর ঈদে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না ।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন বন্ধের পর গত ৫ জুন থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আবারো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। প্রথমের দিকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ কম থাকলেও দিন দিন এই পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে বন্দর দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচাপণ্য গরমে অতিদ্রুত পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায় সে কারণে কাস্টমসের কার্যক্রম শেষে আমদানিকারকরা দ্রুত বন্দর থেকে খালাস করে নিতে পারেন সে জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে। বন্দর দিয়ে গত ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৯ কর্মদিবসে ২৬৮টি ট্রাকে ৭ হাজার ৪২৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার একদিনেই ৪৩টি ট্রাকে ১ হাজার ২৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশিয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এতে করে ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণে গত ৫ জুন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে সেদিন থেকেই বন্দর দিয়ে আবারো পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়।