১৯৭০–এর দশক থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে উদ্ভিদের চাষাবাদ নিয়ে গবেষণা করছেন মহাকাশচারীরা। ইতিমধ্যে সেখানে লেটুস, টমেটো এবং মরিচের মতো ফসল উৎপাদনেও সক্ষম হয়েছেন।
আর এবার মহাকাশে ফুল ফুটিয়ে পৃথিবীবাসীকে তাক লাগিয়ে দিলেন নাসার মহাকাশচারীরা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথমবারের মতো জিনিয়া ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
মহাকাশে ফুল জন্মানোর এই গবেষণাটি ২০১৫ সালে শুরু হয়েছিল। নাসার মহাকাশচারী কেউলি লিন্ডগ্রেন সেসময় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে জিনিয়া ফুলের বীজ লাগিয়েছিলেন। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অবশেষে মাইক্রোগ্র্যাভিটির মতো পরিবেশে ফুটল জিনিয়া ফুল। পৃথিবীর মাটিতে ঠিক যে রকম জিনিয়া ফুল ফোটে, মহাকাশে জন্মানো জিনিয়া গাছেও হুবহু একই রকম ফুল ফুটেছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) নাসা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে ফুল ফুটে থাকা জিনিয়াগাছের ছবিটি প্রকাশ করার পর, তা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। বিশ্ব জুড়ে প্রচুর মানুষ তাতে কমেন্ট করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘অবিশ্বাস্য! তবে আপনাদের পক্ষেই সম্ভব এমন কাজ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু সম্ভব। আর তার সব কিছুই হবে আপনাদের হাত ধরে।’
জিনিয়া ফুলের ছবি পোস্ট করে নাসা লিখেছে, ‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে সবজি উৎপাদনসংক্রান্ত গবেষণার অংশ হিসেবে কক্ষপথে জিনিয়া ফুলটি ফুটেছে।’
মহাকাশে বাগান করার গুরুত্ব উল্লেখ করে নাসা আরও লিখেছে, ‘মহাকাশে বাগান করাটা আমাদের জন্য লোক দেখানো কোনো বিষয় নয়। কক্ষপথে কীভাবে গাছ জন্মাতে হবে, তা জানার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারব পৃথিবীর বাইরে কীভাবে শস্য উৎপাদন করা যায়। আমরা চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহের মতো দীর্ঘমেয়াদি অভিযানগুলোতে টাটকা খাবারের উৎস তৈরি করতে পারব।’
ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহ বা অন্য কোনো গ্রহে মানুষকে তার নিজের খাবারের ব্যবস্থা হয়তো নিজেকেই করতে হবে। তাই মহাকাশে গাছপালার উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়টিতে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আরও অনেক সবজি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। শিগগির সেসব সবজির ফলনের বিষয়েও হয়তো জানা যাবে।