বাঁশের সাহায্যে সেতু পারাপার, ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় বাঁশের সাহায্যে সেতু পারাপার করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। ফলে ওই এলাকাসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়া সেতুটি দীর্ঘ ৫ বছরেও পুণনির্মাণ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী বার বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবগত করলেও কোনো সুফল মেলেনি। অযত্নে-অবহেলায় পড়ে রয়েছে ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি।

জানা যায়, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ পায় স্থানীয় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করে।
তবে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় উদ্বোধনের আগেই সেতুটি হেলে পড়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রকল্প পরিচালক সরেজমিনে তদন্ত শেষে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়ার নিদের্শ দেন।

এর পরপরই ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি পুনরায় নির্মাণের লক্ষে সেতুর বিভিন্ন অংশ ভাঙা শুরু করে। এর অংশ হিসেবে সেতুর উপরের অংশ ভেঙে রড বের করে নিয়ে যায়। কিন্তু এরপর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি পুনরায় নির্মাণ না করে সম্পূর্ণ (ফাইনাল) বিল তুলে নেয়।

নিরাইল গ্রামের রবি মিয়া জানান, হেলে পড়া সেতু দিয়ে বড় গাড়ি চলাচল না করতে পারলেও সাধারণ মানুষ পাড় হতে পারত। কিন্তু সেতুটি ভেঙ্গে ফেলায় এখন তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। তদের এলাকা কৃষি প্রধান। সেতু না থাকায় তারা কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন না।

ফুলকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম জানান, যখন ওই সেতু নির্মাণ হয় তখন তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন না। তবে তিনি চান তার এলাকার জনগণের সুবিধার জন্য ওই স্থানে একটি সেতু পুনরায় নির্মাণ হোক। এজন্য তিনি খুব শীঘ্রই জেলা প্রাশাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করবেন।

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতি হবে জেনে সেতু পুনরায় নির্মাণ করে দেয়নি। এ ছাড়া দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ওই স্থানে সেতু নির্মাণের কোনো প্রকার প্রকল্প পুনরায় গ্রহন করেনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, সেতু নির্মাণে দুর্নীতির বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগনের সুবিধার্থে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর