ঢাকা ০৯:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হলেও দাম কম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুন ২০১৬
  • ৩১৪ বার

জেলার শ্রীপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও কাঁঠালের ভরা মৌসুমে দাম পাচ্ছে না কৃষকরা।

গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ, পরিবহন খরচ মিলিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষককে। দীর্ঘদিনেও সরকারি-বেসরকারিভাবে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করণের উদ্যোগ গ্রহণ না করায় কৃষকরা কাঁঠাল চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

মাওনা গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘তার ২৫টি গাছের কাঁঠাল এবার পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে পারেননি দাম কম থাকায় এবং একসঙ্গে সব কাঁঠাল পাকতে শুরু করায় অধিকাংশ গাছেই নষ্ট হচ্ছে। কাঁঠালের ভরা মৌসুমে রমজান মাস থাকায় বিক্রি কমে গেছে।

বদনীভাংগা গ্রামের কাঁঠাল চাষী আব্বাছ আলী বলেন, ‘প্রতি ২০টি কাঁঠাল পাইকারী জৈনা বাজারে নিতে খরচ হয় ৫৫০ টাকা দিতে হয়। ইজারাদারদের টাকা সবমিলিয়ে খরচের টাকাই উঠে আসে না।’

প্রতি বছর গাছে কাঁঠালের ফুল (মুচি) আসার পরই পাইকাররা এসে দামদর সাব্যস্ত করে বায়নার টাকা দিয়ে যান। এবার কাঁঠালের দাম কম থাকায় অনেক পাইকাররা বাগান ফেলে চলে গেছেন।

এমনি একজন কৃষক বহেরারচালা গ্রামের আক্তার হোসেন তিনি জানান, তার বাগান ৪ লাখ টাকা দাম সাব্যস্ত করে ৫০ হাজার টাকা বায়না দিয়ে আর আসেননি। তার এত কাঁঠাল তিনি কোথায় বিক্রি করবেন ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছেন না।

গাজীপুর জেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের আড়ৎ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে শ্রীপুরের জৈনা বাজার প্রতি বছর কাঁঠালের মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমায়। সারাদিন কাঁঠাল কিনে রাতে ট্রাকে করে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরের কাঁঠালের পাইকারী ক্রেতা অহিদ মিয়া বলেন, ‘চলতি বছর পরিবহন খরচ খুব বেশি হওযায় অনেক সময় লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

জৈনা বাজারের ইজারাদার আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রতি বৎসর ২শ থেকে ৩শ পাইকারের আগমনে মুখরিত থাকে জৈনা বাজার। চলতি মৌসুমে পাইকার কম থাকার পরও প্রতিদিন ১শ থেকে ১শ ৫০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে।’

কাঁঠাল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানায়, চলতি মৌসুমে প্রতিদিন জৈনা বাজারে রিকশা-ভ্যানে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় লক্ষাধিক কাঁঠাল এসে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ক্রেতা কম থাকায় কাঁঠাল বিক্রি করতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মুয়ীদ উল হাসান জানান, চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হওয়ায় বিভিন্ন বাজারে প্রচুর কাঁঠাল উঠেছে। মৌসুমী এ ফল সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় তেমন দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শ্রীপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হলেও দাম কম

আপডেট টাইম : ১২:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুন ২০১৬

জেলার শ্রীপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও কাঁঠালের ভরা মৌসুমে দাম পাচ্ছে না কৃষকরা।

গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ, পরিবহন খরচ মিলিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষককে। দীর্ঘদিনেও সরকারি-বেসরকারিভাবে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করণের উদ্যোগ গ্রহণ না করায় কৃষকরা কাঁঠাল চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

মাওনা গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘তার ২৫টি গাছের কাঁঠাল এবার পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে পারেননি দাম কম থাকায় এবং একসঙ্গে সব কাঁঠাল পাকতে শুরু করায় অধিকাংশ গাছেই নষ্ট হচ্ছে। কাঁঠালের ভরা মৌসুমে রমজান মাস থাকায় বিক্রি কমে গেছে।

বদনীভাংগা গ্রামের কাঁঠাল চাষী আব্বাছ আলী বলেন, ‘প্রতি ২০টি কাঁঠাল পাইকারী জৈনা বাজারে নিতে খরচ হয় ৫৫০ টাকা দিতে হয়। ইজারাদারদের টাকা সবমিলিয়ে খরচের টাকাই উঠে আসে না।’

প্রতি বছর গাছে কাঁঠালের ফুল (মুচি) আসার পরই পাইকাররা এসে দামদর সাব্যস্ত করে বায়নার টাকা দিয়ে যান। এবার কাঁঠালের দাম কম থাকায় অনেক পাইকাররা বাগান ফেলে চলে গেছেন।

এমনি একজন কৃষক বহেরারচালা গ্রামের আক্তার হোসেন তিনি জানান, তার বাগান ৪ লাখ টাকা দাম সাব্যস্ত করে ৫০ হাজার টাকা বায়না দিয়ে আর আসেননি। তার এত কাঁঠাল তিনি কোথায় বিক্রি করবেন ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছেন না।

গাজীপুর জেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের আড়ৎ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে শ্রীপুরের জৈনা বাজার প্রতি বছর কাঁঠালের মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমায়। সারাদিন কাঁঠাল কিনে রাতে ট্রাকে করে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরের কাঁঠালের পাইকারী ক্রেতা অহিদ মিয়া বলেন, ‘চলতি বছর পরিবহন খরচ খুব বেশি হওযায় অনেক সময় লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

জৈনা বাজারের ইজারাদার আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রতি বৎসর ২শ থেকে ৩শ পাইকারের আগমনে মুখরিত থাকে জৈনা বাজার। চলতি মৌসুমে পাইকার কম থাকার পরও প্রতিদিন ১শ থেকে ১শ ৫০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে।’

কাঁঠাল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানায়, চলতি মৌসুমে প্রতিদিন জৈনা বাজারে রিকশা-ভ্যানে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় লক্ষাধিক কাঁঠাল এসে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ক্রেতা কম থাকায় কাঁঠাল বিক্রি করতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মুয়ীদ উল হাসান জানান, চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হওয়ায় বিভিন্ন বাজারে প্রচুর কাঁঠাল উঠেছে। মৌসুমী এ ফল সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় তেমন দাম পাওয়া যাচ্ছে না।