ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশে ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় ১৯৫ কোটি ডলার ইটনায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও বস্ত্র বিতরণ প্রবাসে প্রেমিক ও লালমাইয়ে নববধূর আত্মহত্যা, চিরকুটে একই কবরে দাফনের অনুরোধ খুনের চার মাস পর নারীর মরদেহ উদ্ধার কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়নি : রিজওয়ানা হাসান সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গ্রেফতার নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ পেট্রাপোল বন্দর পরিদর্শনে অমিত শাহ, বেনাপোলে ভোগান্তি অভিনয়ে সাফল্য পাননি তবুও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী অভিনেত্রী!

হাকালুকি হাওরে কমেছে পরিযায়ী পাখি, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৩ বার

হাকালুকি হাওরে অনিরাপদ পরিযায়ী পাখি। পাখি শিকারিদের কারণে দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। এতে হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।

গত ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে পাখি শুমারি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) পাখি শুমারি করে।

বাংলাদেশের ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটারের এই হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। এবারের পাখি শুমারির জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। এটা বিগত বছরগুলো থেকে অনেক কম। যা ২০২০ সালে ছিল ৪০ হাজার ১২৬টি পাখি। কয়েক বছর আগে দেশে ৫-৬ লাখ পরিযায়ী পাখি আসতো। এসব পাখি বেশিরভাগ মৌলভীবাজার ও সিলেটের হাওরগুলোকে মুখরিত রাখত।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ২০ বছরে সমগ্র বাংলাদেশে ৩৫  শতাংশ কমেছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে গড়ে বিচরণ করত ৭৫-৮০ হাজার পাখি। যার ৮০ শতাংশই হাকালুকি হাওরে।

 

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দ্রুত কমার বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। নদী দূষণ, জাল বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার, একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, ইজারাদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে দিবারাত্রি পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধনসহ নানান সমস্যার কারণে পরিযায়ী পাখি কমছে। বাংলাদেশের ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটারের এই হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। এবারের পাখি শুমারির জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। এটা বিগত বছরগুলো থেকে অনেক কম

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য পরিবেশ কর্মী কামরুল হাসান নোমান জানান, হাকালুকি হাওরের সঙ্গে যে নদীগুলো মিলিত হয়েছে। এখন এই নদীগুলো ময়লার ভাগাড়। প্লাস্টিক, পলিথিন, দূষিত পানি পাখি কমার অন্যতম কারণ। জাল, বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে নিয়মিত পাখি নিধনের পাশাপাশি পাখিদের বিচরণ ভূমি জলাশয়গুলো অরক্ষিত থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বিলগুলো ইজারা দেওয়া হয়। এ বছরও হয়েছে। এতে বেশ লোক সমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেওয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। ইজারদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র। ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

হাকালুকি হাওরে কমেছে পরিযায়ী পাখি, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

আপডেট টাইম : ০১:১৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

হাকালুকি হাওরে অনিরাপদ পরিযায়ী পাখি। পাখি শিকারিদের কারণে দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। এতে হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।

গত ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে পাখি শুমারি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) পাখি শুমারি করে।

বাংলাদেশের ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটারের এই হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। এবারের পাখি শুমারির জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। এটা বিগত বছরগুলো থেকে অনেক কম। যা ২০২০ সালে ছিল ৪০ হাজার ১২৬টি পাখি। কয়েক বছর আগে দেশে ৫-৬ লাখ পরিযায়ী পাখি আসতো। এসব পাখি বেশিরভাগ মৌলভীবাজার ও সিলেটের হাওরগুলোকে মুখরিত রাখত।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ২০ বছরে সমগ্র বাংলাদেশে ৩৫  শতাংশ কমেছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে গড়ে বিচরণ করত ৭৫-৮০ হাজার পাখি। যার ৮০ শতাংশই হাকালুকি হাওরে।

 

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দ্রুত কমার বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। নদী দূষণ, জাল বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার, একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, ইজারাদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে দিবারাত্রি পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধনসহ নানান সমস্যার কারণে পরিযায়ী পাখি কমছে। বাংলাদেশের ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটারের এই হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। এবারের পাখি শুমারির জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। এটা বিগত বছরগুলো থেকে অনেক কম

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য পরিবেশ কর্মী কামরুল হাসান নোমান জানান, হাকালুকি হাওরের সঙ্গে যে নদীগুলো মিলিত হয়েছে। এখন এই নদীগুলো ময়লার ভাগাড়। প্লাস্টিক, পলিথিন, দূষিত পানি পাখি কমার অন্যতম কারণ। জাল, বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে নিয়মিত পাখি নিধনের পাশাপাশি পাখিদের বিচরণ ভূমি জলাশয়গুলো অরক্ষিত থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বিলগুলো ইজারা দেওয়া হয়। এ বছরও হয়েছে। এতে বেশ লোক সমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেওয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। ইজারদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র। ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমছে।