হাওর বার্তা ডেস্কঃ যানজট কমাতে রাজধানীর সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে আরো একটি ফ্লাইওভার। ১৯ ফেব্রুয়ারি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ কালশী ফ্লাইওভার।
মিরপুর থেকে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ফ্লাইওভারটি একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রশস্ত সড়ক, নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ এবং ফুটপাত বদলে দিয়েছে এক সময়ের ঘিঞ্জি কালশী এলাকাটি। মেট্রোরেলের পর, এই ফ্লাইওভার বদলে দেবে মিরপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ইংরেজি অক্ষর ‘Y’ এর আদলে ডিজাইন করা ফ্লাইওভারমূখী চার লেনের রাস্তাগুলোকে ছয় লেনে প্রশস্ত করা হয়েছে। মিরপুর, ঢাকা সেনানিবাস, উত্তরা, মহাখালী, রামপুরা এবং বিমানবন্দর এলাকায় যান চলাচলকে সহজ করবে ফ্লাইওভারের পাঁচটি র্যাম্প।
নবনির্মিত ছয় লেনের সড়কটি ব্যবহার করে মিরপুরবাসীরা মাত্র ১৫ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
রাজধানীর অংশ হয়েও এক সময় কালশী ছিলো নেহাত এক দরিদ্র জনপদ। সারি সারি বস্তিঘর আর বিহারী ক্যাম্প। সরু রাস্তায় ছিলো না ড্রেনেজ ব্যবস্থা। কিন্তু এখন বদলে গেছে সেই কালশী। মিরপুরের সাথে বিমানবন্দর, গুলশান, বনানী, বারিধারার যোগাযোগের অন্যতম পথ হয়ে উঠেছে কালশী সড়ক।
গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়ায় এই পথে তৈরি হতো তীব্র যানজট। সেই জট খুলতেই নতুন এই ফ্লাইওভার। নির্মাণকাজ শেষ। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধনও ও আনুষাঙ্গিক কাজ।
১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর খুলে দেয়া হবে ফ্লাইওভারটি। উত্তর সিটির উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন।
ফ্লাইওভারটি ইসিবি চত্বর থেকে কালশী মোড়, মিরপুর ডিওএইচএস ও মিরপুর সাড়ে এগারো নম্বর পর্যন্ত চলাচলকে নির্বিঘ্ন করবে। কয়েক কোটি মানুষের এ নগরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা মিরপুরের সঙ্গে বিমানবন্দর, উত্তরা; অন্যদিকে বাড্ডা, বনানী ও মহাখালীর সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন এ পথ।
নতুন এ প্রকল্পের আওতায় ৩.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ লেনের সড়ক নির্মাণ, ৭.৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন ও সসার ড্রেন, ১.৭৮ কিলোমিটার আরসিসি পাইপ ড্রেন, ৩.৩৮ কিলোমিটার কমিউনিকেশন ডাক্ট, সাইকেল লেন, ৬টি বাস বে ও যাত্রী ছাউনি, ১টি পিসি গার্ডার ব্রিজ, ২টি ফুটওভার ব্রিজ, ১টি পাবলিক টয়লেট এবং ২টি পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হয়েছে।
ইসিবি চত্বর থেকে এই উড়ালপথ ধরে চলে যাওয়া যাবে পল্লবী কিংবা মিরপুরে। ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য দুই হাজার ৩৩৫ মিটার। ৪৭৫ মিটারের র্যাম্প রয়েছে পাঁচটি।
৬৮টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই উড়ালসড়কের গার্ডার সংখ্যা ১৭টি। সমান তালে চলতে তৈরি হয়েছে নিচের সড়কের কাজও। চার কিলোমিটারের সেই সড়ক নির্মাণকাজও শেষ।
সেই সড়কও সেজেছে নতুন সাজে। আছে সুপরিসর ফুটপাত, বাস বে। তৈরি হয়েছে নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ। সব মিলে গোটা এলাকাই যেনো বদলে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যেন রাতারাতিই সব বদলে গেলো। তাদের এতোদিনের কষ্টের যেন অবসান হলো। নতুন এক দৃষ্টান্তও তৈরি করেছে এই প্রকল্প।