ঢাকা ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪০০ হাজার বছর ধরে শক্তি জমেছে, ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত সোমবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। এর ফলে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে।

ভূমিকম্প কীভাবে হয় ও কোন কোন দেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। এতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, তুরস্ক, ইরান, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চিলি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-  বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জ চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ ধরে এ নিয়ে গবেষণা করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোনো ভূমিকম্পের শক্তি বের হয়নি। ফলে সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হয়ে রয়েছে।

ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, এটা যেমন একবারে হতে পারে, আবার কয়েকবারেও হতে পারে। তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে সাত বা আট মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিন্তু কবে বা কখন সেটা হবে, তা এখনও বিজ্ঞানীদের ধারণা নেই।

সানফ্রানসিসকো বা দক্ষিণ আমেরিকার ভূমিকম্পের সঙ্গে এর মিল রয়েছে।

সুনামগঞ্জ, জাফলং অংশে ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন।

এসব ফল্টে ভূমিকম্প হলে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বা বিপদের মাত্রা অনেক বেশি বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

৪০০ হাজার বছর ধরে শক্তি জমেছে, ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ১২:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত সোমবার ভোরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। এর ফলে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে।

ভূমিকম্প কীভাবে হয় ও কোন কোন দেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। এতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, তুরস্ক, ইরান, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চিলি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-  বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, উত্তরে তিব্বত সাব-প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব-প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জ চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ ধরে এ নিয়ে গবেষণা করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘসময় ধরে কোনো ভূমিকম্পের শক্তি বের হয়নি। ফলে সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হয়ে রয়েছে।

ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, এটা যেমন একবারে হতে পারে, আবার কয়েকবারেও হতে পারে। তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে সাত বা আট মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিন্তু কবে বা কখন সেটা হবে, তা এখনও বিজ্ঞানীদের ধারণা নেই।

সানফ্রানসিসকো বা দক্ষিণ আমেরিকার ভূমিকম্পের সঙ্গে এর মিল রয়েছে।

সুনামগঞ্জ, জাফলং অংশে ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন।

এসব ফল্টে ভূমিকম্প হলে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বা বিপদের মাত্রা অনেক বেশি বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা।