অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছর ঘুরে দিনপঞ্জির পাতায় এখন ফেব্রুয়ারি। দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মাসটির পরিচিত ‘ভাষার মাস’ হিসেবে। ভাষার মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা শুরু হলো আজ।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ঐতিহ্যবাহী এই বইমেলার উদ্বোধন করেন। বাংলা একাডেমির আয়োজনে একাডেমির প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ঐতিহ্যবাহী এই বইমেলা চলবে।

অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বেলা ৩টায় শুরু হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য- ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যদান শেষে বেলা ৪টা ৩৮ মিনিটে তিনি বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

বাংলা একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন, মানবসম্পদ ও পরিকল্পনা বিভাগ) ড. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে দর্শক, ক্রেতা ও পাঠকরা রাত সাড়ে ৮টার পরে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। দুপুরে খাবার ও নামাজের জন্য একঘণ্টা বিরতি থাকবে।

এবারের মেলায় ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯০১টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি মাঠে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া এ বছর মোট ৩৮টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

এছাড়া লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে ১৫৩টি স্টল রয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল ১২৭টি, ২০২১ সালে ১৪০টি এবং ২০২০ সালে ১৫৫টি। অন্যদিকে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বইমেলা ভেন্যু ও এর আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার ১১ লাখ বর্গফুট জায়গার প্রতিটি স্থান সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে ঐতিহ্যবাহী বইমেলা শুরু হয় ২ ফেব্রুয়ারি। বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২১ সালে ১৮ মার্চ এবং ২০২২ সালে বইমেলা শুরু হতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিলম্ব হয়।

বাংলা একাডেমি পুরস্কার ২০২৩

বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ১১টি বিভাগে ১৫ জনকে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২’ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।

এবারের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন—কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ ও গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনিতে ইকতিয়ার চৌধুরী, ফোকলোরে আবদুল খালেক ও মুহম্মদ আবদুল জলিল।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর