রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একতরফাভাবে ইউক্রেনে ৩৬ ঘন্টার এক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও কিয়েভ তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে লড়াই অব্যাহত রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
রাশিয়া বলছে, তাদের বাহিনীর অবস্থানগুলোর ওপর ইউক্রেন গোলাবর্ষণ করে চলেছে এবং আক্রান্ত হলে তারাও পাল্টা গোলা ছুঁড়ছে।
রুশ অর্থডক্স চার্চের বিধান অনুসরণকারী রাশিয়ায় ৬ই জানুয়ারি ক্রিসমাস ইভ এবং ৭ই জানুয়ারি ক্রিসমাস বা বড়দিন উদযাপিত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই একই সময় বড়দিন পালন করে।
এ উপলক্ষেই বৃহস্পতিবার ভ্লাদিমির পুতিন এক আকস্মিক ঘোষণায় বলেন, রুশ সৈন্যরা শুক্রবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি পালন করবে।
তবে ইউক্রেনের বাখমুট শহরের কাছাকাছি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এএফপির একজন সাংবাদিক জানাচ্ছেন, তিনি উভয় দিক থেকেই গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
খেরসন অঞ্চলের গভর্নর বলেছেন, নভেম্বর মাসে ইউক্রেনী বাহিনীর পুনর্দখল করা খেরসন শহরে দমকল বাহিনীর একটি স্টেশনে এক আক্রমণে একজন উদ্ধারকর্মী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটা আসলে ইউক্রেনীয় সেনাদের অগ্রাভিযান থামানো এবং আরো রুশ সৈন্যকে রণাঙ্গনে নিয়ে আসার জন্য কাজে লাগানোর চেষ্টা।
রুশ সংবাদমাধ্যমে মস্কোর স্থানীয় সময় দুপুর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরুর খবর দেয়া হলেও বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, লড়াই আসলে আদৌ বন্ধ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি।
শুক্রবার সকালেও পূর্ব ইউক্রেনের ক্রামাটরস্ক শহরে রুশ কামানের গোলা আঘাত হানে বলে জানিয়েছেন শহরটির মেয়র। এখানে এক ডজনেরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
সামাজিক মাধ্যমে মেয়র ওলেক্সান্ডর হোঞ্চারেংকো বলেন, “ক্রামাটরস্কের ওপর আক্রমণ হয়েছে, সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে থাকুন।” তিনি ক্ষয়ক্ষতির কোন বিবরণ দেননি।
যুদ্ধবিরতি শুরুর কিছু পর রুশ-সমর্থক কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন যে ইউক্রেন দোনেৎস্ক শহরের ওপর গোলাবর্ষণ করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, রুশ জনগোষ্ঠী বাস করে এমন জায়গা ও সেনা অবস্থানগুলেঅর ওপর ইউক্রেন গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
ইউক্রেনের কিছু এলাকায় বিমান হামলার সতর্কতাসূচক সাইরেন বেজে উঠলেও- যুদ্ধবিরতির সময় শুরুর পর ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা কোন বড় আকারের বিমান হামলার খবর দেননি।
তবে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে বলা হয়, দোনেৎস্ক অঞ্চলে কুরাখোভেতে রুশ গোলাবর্ষণে কিছু আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ইউক্রেনের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সামাজিক মাধ্যমে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি পোস্ট করেন। সূত্র: বিবিসি