হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফুলের মৌ মৌ ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারদিক। গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়া, তারামনি, ফায়ারবল, পুষ্পলিকা, অর্কিডসহ দেশি-বিদেশি হরেক রকম ফুলের সমারোহ। এ যেন শহরের মাঝে এক টুকরো ফুলের বাগান। এমন চিত্র পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে চলমান একুশ দিনব্যাপী পুষ্পমেলার। যেখানে প্রবেশ করলেই চোখ আটকে যায় ফুলের সৌন্দর্যে। মেলার ২০টি স্টলে নান্দনিক সব ফুল গাছের সমারোহ দৃষ্টি কাড়ছে দর্শনার্থীদের।
ইট-পাথরের ব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে মন পেতে চায় একটু প্রশান্তি। আর পাবনা শহরবাসীর মনে সেই প্রশান্তি এনে দিয়েছে একুশ দিনব্যাপী পুষ্পমেলা। দেশি-বিদেশি ফুলের সমারোহ দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে মেলায়। ফুলের নান্দনিকতায় মাতোয়ারা ছোট-বড় সব বয়সী মানুষ। কেউ ঘুরে দেখছেন, কেউবা কিনছেন ফুলের চারা। দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতির পর এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মেলায় আসা ফুলপ্রেমীরা।
শুধু ফুল গাছই নয়, রয়েছে ভেষজ ও বনসাই গাছও। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন ফুলগাছ। কেউবা কিনছেন পছন্দের ফুলগাছের চারা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর পুষ্পমেলা। ব্যস্ত জীবনের মাঝে পুষ্পমেলা শহরবাসীর মনে এনে দিয়েছে এক টুকরো প্রশান্তি।
মেলায় আসা শালগাড়িয়া মহল্লার গৃহিণী ফাইজা খাতুন বলেন, ফুল আমার প্রিয়। তাই বাসার বারান্দা, ছাদে ফুলের বাগান করেছি। ফুলের মেলায় এসে পছন্দের বেশকিছু দেশি-বিদেশি ফুলের চারা কিনলাম। আয়োজনটা বেশ ভালো।
স্কুলশিক্ষক সানোয়ার হোসেন এসেছেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। তিনি বলেন, ‘শহরের মাঝে এমন ফুলমেলা সত্যি মুগ্ধ হয়েছি। অনেকরকম ফুলের গাছ আছে। তার মধ্যে কিছু কিনলাম বাড়ির জন্য। এমন আয়োজন আরো বড় পরিসরে হওয়া উচিত।’
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে পুষ্পমেলা। ফুলের পাশাপাশি ক্যাকটাস, বনসাইসহ ফলজ, বনজ গাছের চারাও মিলছে মেলায়। মানুষের সাড়া পেয়ে খুশি নার্সারি মালিকরা। বিক্রিও বেশ ভালো বলে জানান তারা।
জেলা নার্সারি মালিক সমিতি ও পুষ্পমেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সুলতান মাহামুদ বলেন, ‘মেলার মাধ্যমে জেলার ফুলপ্রেমী মানুষকে ফুলচাষে আগ্রহী করতে এই আয়োজন। করোনা মহামারির সময়ে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। চেষ্টা করছি পুষ্পমেলার মধ্য দিয়ে এই অবহেলিত ব্যবসা নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর। ক্রেতাদের সমাগম ও বেচাকেনা ভালো।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চিত্তবিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে এই পুষ্পমেলা। অন্যান্য জেলার মতো যদি পাবনায় বাণিজ্যিকভাবে কোনো কৃষক বা নার্সারি মালিক ফুলচাষে এগিয়ে আসেন, তবে কৃষি বিভাগ তাদের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান করবে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও পুষ্পমেলা বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া একুশ দিনব্যাপী পুষ্পমেলার পর্দা নামবে নতুন বছরের ১৩ জানুয়ারি।