ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিরাজের প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ২৭১ রান করলো স্বাগতিক দল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১৮৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়ে খেই হারানো বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছে মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ জুটি। মিরাজের অনবদ্য সেঞ্চুরি (১০০) ও মাহমুদউল্লাহর (৭৭) রানে দাঁড়িয়ে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৭১ রান করেছে স্বাগতিক দল। রোহিত শর্মাবিহীন ভারতের বিপক্ষে মিরপুরের স্লো উইকেটে নিশ্চিত ভাবেই এই রান বেশ চ্যালেঞ্জিং।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজ জয়ের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও খেই হারায় স্বাগতিকরা। ৬৯ রানে টপ অর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে দ্রুতই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের ১৪৮ রানের জুটি বাংলাদেশকে দুর্দান্ত একটি স্কোর এনে দিয়েছে। ৭ উইকেটে করেছে ২৭১। যে জুটি ভারতের বিপক্ষে যে কোনও উইকেটে আবার সর্বোচ্চও।

৬৬ থেকে ৬৯ অর্থাৎ ৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশ দল সাকিব, মুশফিক ও আফিফের মতো গুরুত্বপূর্ণ তিন ব্যাটারকে হারিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। সেখানে থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্বটা নেন মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ জুটি। প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজকে নিয়ে মিরাজ শেষ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দিয়েছেন। বুধবার মাহমুদউল্লাহকে নিয়েও পালন করছেন গুরুদায়িত্ব। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার। ৫৫ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে মিরাজ ৫০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। প্রথম পঞ্চাশ ৫৫ বলে করলেও দ্বিতীয় ৫০ ছুঁয়েছেন ২৮ বলে। সবমিলিয়ে ৮৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ব্যাটার। ৮ চার ও ৪ ছক্কায় মিরাজ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছন।

এর আগে মিরাজের হাফসেঞ্চুরি পর পর মাহমুদউল্লাহও তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। উমরান মালিকের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৯৬ বলে ৭ চারে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৭৭ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নাসুমও কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেছেন। ১১ বলে ১৮ রান আসে নাসুমের ব্যাট থেকে। শেষটা এতই বারুদ ঠাসা ছিল- ৫ ওভারে মাহমুদউল্লাহ, নাসুম ও মিরাজ মিলে ৬৮ রান তুলেছেন।

ইনিংসের সূচনাতেও দারুণ কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। পর পর দুই চার মেরে সেই বার্তা দিচ্ছিলেন এনামুল। দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বলে ফ্লিক করে চার মেরেছেন। দ্বিতীয় বলে ড্রাইভ করে পেয়েছেন আরও একটি। দারুণ শুরুর পর একই ওভারে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। চতুর্থ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। পরের বলে অবশ্য সাজঘরে ফিরতে হয়েছে। মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছেন। ফেরার আগে ৮ বলে ২ চারে করেছেন ১১ রান।

এরপর শান্ত-লিটন মিলে ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দশম ওভারে সিরাজের বলটি লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন। আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা লিটন এদিন ২৩ বলে ৭ রান করেছেন। তাতে পাওয়ার প্লেতে পড়েছে ২ উইকেট।

নাজমুল শান্ত-সাকিব আল হাসান মিলে কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় থাকলেও সেটি উমরান মালিকের গতির সামনে টেকেনি। ৩৫ বলে ৩ চারে ২১ রান করা শান্তর স্টাম্প উপড়ে ফেলেন ভারতের এই পেসার।

শ্লথ গতিতে খেলা ও উমরানের গতির কাছে পরাস্ত সাকিবও ফিরে যান একটু পর। ২০ বলে ৮ রান করা ব্যাটারকে দেখে মনে হচ্ছিল উমরানের বাউন্সারগুলো তাকে ভালোভাবেই আঘাত করেছে। ওয়াশিংটনের বলে পরে ধাওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের ইনিংস।

চাপে পড়ে যাওয়া মুহূর্তে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেনও দলের ত্রাতা হতে পারেননি। ওয়াশিংটনের ঘূর্ণিতেই দু’জন পর পর সাজঘরে ফিরেছেন। সাজঘরে ফেরার আগে মুশফিক ২৪ বলে ১২ রান করেছেন।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের সহজে নাস্তানাবুদ করতে পারলেও মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ ও নাসুমের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছে ভারতীয় বোলারদের। ৩৭ রান খরচায় ওয়াশিংটন সুন্দর সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া উমরান মালিক ও মোহাম্মদ সিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মিরাজের প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ২৭১ রান করলো স্বাগতিক দল

আপডেট টাইম : ০৪:৩৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়ে খেই হারানো বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছে মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ জুটি। মিরাজের অনবদ্য সেঞ্চুরি (১০০) ও মাহমুদউল্লাহর (৭৭) রানে দাঁড়িয়ে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৭১ রান করেছে স্বাগতিক দল। রোহিত শর্মাবিহীন ভারতের বিপক্ষে মিরপুরের স্লো উইকেটে নিশ্চিত ভাবেই এই রান বেশ চ্যালেঞ্জিং।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজ জয়ের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও খেই হারায় স্বাগতিকরা। ৬৯ রানে টপ অর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে দ্রুতই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের ১৪৮ রানের জুটি বাংলাদেশকে দুর্দান্ত একটি স্কোর এনে দিয়েছে। ৭ উইকেটে করেছে ২৭১। যে জুটি ভারতের বিপক্ষে যে কোনও উইকেটে আবার সর্বোচ্চও।

৬৬ থেকে ৬৯ অর্থাৎ ৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশ দল সাকিব, মুশফিক ও আফিফের মতো গুরুত্বপূর্ণ তিন ব্যাটারকে হারিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। সেখানে থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্বটা নেন মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ জুটি। প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজকে নিয়ে মিরাজ শেষ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দিয়েছেন। বুধবার মাহমুদউল্লাহকে নিয়েও পালন করছেন গুরুদায়িত্ব। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার। ৫৫ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে মিরাজ ৫০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। প্রথম পঞ্চাশ ৫৫ বলে করলেও দ্বিতীয় ৫০ ছুঁয়েছেন ২৮ বলে। সবমিলিয়ে ৮৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ব্যাটার। ৮ চার ও ৪ ছক্কায় মিরাজ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছন।

এর আগে মিরাজের হাফসেঞ্চুরি পর পর মাহমুদউল্লাহও তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। উমরান মালিকের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৯৬ বলে ৭ চারে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৭৭ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নাসুমও কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেছেন। ১১ বলে ১৮ রান আসে নাসুমের ব্যাট থেকে। শেষটা এতই বারুদ ঠাসা ছিল- ৫ ওভারে মাহমুদউল্লাহ, নাসুম ও মিরাজ মিলে ৬৮ রান তুলেছেন।

ইনিংসের সূচনাতেও দারুণ কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। পর পর দুই চার মেরে সেই বার্তা দিচ্ছিলেন এনামুল। দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বলে ফ্লিক করে চার মেরেছেন। দ্বিতীয় বলে ড্রাইভ করে পেয়েছেন আরও একটি। দারুণ শুরুর পর একই ওভারে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। চতুর্থ বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। পরের বলে অবশ্য সাজঘরে ফিরতে হয়েছে। মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছেন। ফেরার আগে ৮ বলে ২ চারে করেছেন ১১ রান।

এরপর শান্ত-লিটন মিলে ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দশম ওভারে সিরাজের বলটি লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন। আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা লিটন এদিন ২৩ বলে ৭ রান করেছেন। তাতে পাওয়ার প্লেতে পড়েছে ২ উইকেট।

নাজমুল শান্ত-সাকিব আল হাসান মিলে কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় থাকলেও সেটি উমরান মালিকের গতির সামনে টেকেনি। ৩৫ বলে ৩ চারে ২১ রান করা শান্তর স্টাম্প উপড়ে ফেলেন ভারতের এই পেসার।

শ্লথ গতিতে খেলা ও উমরানের গতির কাছে পরাস্ত সাকিবও ফিরে যান একটু পর। ২০ বলে ৮ রান করা ব্যাটারকে দেখে মনে হচ্ছিল উমরানের বাউন্সারগুলো তাকে ভালোভাবেই আঘাত করেছে। ওয়াশিংটনের বলে পরে ধাওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের ইনিংস।

চাপে পড়ে যাওয়া মুহূর্তে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেনও দলের ত্রাতা হতে পারেননি। ওয়াশিংটনের ঘূর্ণিতেই দু’জন পর পর সাজঘরে ফিরেছেন। সাজঘরে ফেরার আগে মুশফিক ২৪ বলে ১২ রান করেছেন।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের সহজে নাস্তানাবুদ করতে পারলেও মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ ও নাসুমের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছে ভারতীয় বোলারদের। ৩৭ রান খরচায় ওয়াশিংটন সুন্দর সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া উমরান মালিক ও মোহাম্মদ সিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।