মদনে দাতা সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে 

নিজাম উদ্দিন, মদন (নেত্রকোণা)ঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলার বালালী বাগমারা খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক দাখিল মাদ্রাসায় নীতিমালা অনুসরণ না করেই স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে সুপারের বিরুদ্ধে।
প্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, মাদ্রাসার সুপার জনাব বজলুর রহমান নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য গোপনে পকেট কমিটি গঠন করেছেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের ব্যাপারে মাদ্রাসার শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষক প্রতিনিধি ও দাতা সদস্য কাউকেই কোন কিছু জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে দাতা সদস্য আব্দুল হাই সরকার বলেন, আমি মাদ্রাসার দাতা সদস্য কিন্তু আমাকে না জানিয়ে আমার স্বাক্ষর জাল করে কাগজপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছেন । অভিভাবক ও এলাকার মানুষ এ ঘটনায় হতবাক। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মহসিন তালুকদার জানান, নতুন করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে তা এই মাত্র জানলাম। মাদ্রাসায় এ বিষয়ে কোনো মিটিংও হয়নি। কোনো অভিভাবককে চিঠি ইস্যু করতেও দেখিনি।
প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষক আবুল হাশেম জানান, এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে কিনা তা জানি না। স্টাপ মিটিংও করা হয়নি বা অভিভাবকদের নিয়েও মিটিং করা হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না দিয়ে কিভাবে ম্যানেজিং কমিটি করলো আমি বুঝে উঠতে পারছি না! হয়তো এটা সুপারের পকেট কমিটি। এটা নৈতিকতার অবক্ষয়ের বহিঃপ্রকাশ।
রোববার (২৭ নভেম্বর) অভিভাবক মোঃ গোলাম কিবরিয়া বকুল বলেন, ২০২১ সালে আরজু মিয়া ও সুপারের বিরুদ্ধে দুই লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল। তখন যদি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হতো, তাহলে এখন তারা এ ধরনের কাজের দুঃস্বাস করতো না।
বর্তমান সভাপতি আরজু মিয়া জানান, কমিটি গঠনের বিষয়টি সবাই জানে এবং অভিভাবক সদস্যদের ভোটের মাধ্যমেই আমি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি।
মাদ্রাসার সুপার বজলুর রহমান জানান, কমিটি গঠনে সরকারের সকল নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে। একাধিক প্রার্থী না থাকায় সিলেকশনে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত বছরও আমার বিরুদ্ধে দুই লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পর আমি এক সাংবাদিককে টাকা সাজছিলাম। তবু আমার পক্ষে নিউজ করেনি।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জোছনা আক্তার বলেন, অভিভাবকরা যেনো মনোনয়ন কিনতে পারে তাই মাইকিং ও অভিভাবকদের চিঠির মাধ্যমে জানাতে সুপারকে দায়িত্ব দিয়ে ছিলাম। সুপার যদি তা গোপন করে থাকে, তবে সকল দায় দায়িত্ব তার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিনা শাহরীন জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর