১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের জায়গা নির্ধারণ করবেন ডিএমপি কমিশনার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের স্থান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নির্ধারণ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রোববার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, তারা একটি রাজনৈতিক দল, সবকিছু মেনেই তারা মিটিং করবে। তারা যদি আইন ভাঙে, জানমাল নষ্ট করে বা জ্বালাও-পোড়াও করে তাহলে নিরাপত্তাবাহিনী যা করার তাই করবে।

বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাইলে সরকার অনুমতি দেবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৫ লাখ মানুষ এক জায়গায় (সমবেত) হবে। কোথায় করবে, কেন করবে- এটা আমাদের জানা নেই। ২৫ লাখ লোক কোথাও জড়ো হলে আপনারা বুঝতে পারেন কি দশা হবে? আমরা কমিশনারকে (ডিএমপি কমিশনার) বলেছি, কোথাও এত বড় মাঠ আছে কি না ঢাকায়, সেটা নির্ধারণ করে সেখানে মিটিং করার সুযোগ দিতে আমরা কমিশনারকে বলেছি।

মন্ত্রী বলেন, তিনি (ডিএমপি কমিশনার) যেন এরকম একটি জায়গা খুঁজে বের করেন। কিন্তু ঢাকায় তো এরকম জায়গা নেই। এখানে ১০ হাজার লোক হলেই তো অচল হয়ে যায়। যেহেতু রাজনৈতিক চর্চায় আমরা বাধা দিচ্ছি না, তাই তারা যদি এরকম আয়োজন করে তাহলে এমন জায়গায় যেন করে যেখানে এত লোকের একোমোডেশন (ধারণক্ষমতা) হয়, এটুকুই বলতে চাই। যেখানে কমিশনার মনে করবেন সেখানেই তিনি ব্যবস্থা করবেন।

ঢাকা শহরে এক লাখ মানুষ আসলেই অন্তত সারাদিন জ্যাম থাকে। এই ২৫ লাখ মানুষ হলে তারা কোথায় বসবে? কোথায় জায়গা দেবো আমরা?’ যোগ করেন মন্ত্রী।

নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলা দিয়ে ধরা হচ্ছে- বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গায়েবি মামলা কাকে বলে এটা আমি জানি না। আমরা জানি ঘটনা ঘটলে, ভাঙচুর করলে, লোক হত্যা করলে, জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি হলে মামলা হয়। যাদের ধরা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নামে অভিযোগ আছে বলেই মামলা হয়।

‘বিএনপি যে আন্দোলন সংগ্রাম করছে এখানে বিদেশি অর্থায়ন হচ্ছে’- ভারতের নয়াদিল্লিতে দু-দিনের ‘নো মানি ফর টেরোর মিনিস্ট্রিরিয়াল কনফারেন্সে’ এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট করে এরকম আলোচনা হয়নি। আলোচনা যেটা হয়েছে, তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে আমরা যেটা চাইবো যেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমরা সবসময় বলে আসছি দেশে জঙ্গিদের কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশের মানুষ কোনো জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আমরা সেই বিষয়টিই তাদের কাছে তুলে ধরেছি। সেটাই আমাদের আলোচনার মধ্যে এসেছে।

ভারতের নয়াদিল্লিতে দুদিনের সম্মেলনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বৈঠকে অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে আমরা তাদের বলেছি আমাদের দেশ এখন গরু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই আপনাদের গরু পাঠানোর প্রয়োজন নেই। পাঠালেও আমরা নেবো না। আর মাদক আমাদের দেশ তৈরি করে না বরং আমরা এর স্বীকার হচ্ছি। সেখানে আপনাদের সহযোগিতা চাই। মিজোরাম দিয়ে অনেক সময় আমাদের দেশে মাদক চলে আসে। এই বর্ডারটা নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এতে সম্মতি দিয়েছে।

‘একই সঙ্গে আমরা এটাও বলেছি, আমাদের দেশে যারা অন্যায় করছে, পাহাড়ে খুনা-খুনি হচ্ছে- এসব অপরাধী মিজোরাম দিয়ে আপনাদের এলাকায় প্রবেশ করছে। এ বিষয়ে তারা ওয়াদা করেছেন আর কোনো অনুপ্রবেশকারীকে তাদের রাজ্যে প্রবেশ করতে দেবেন না। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি সব কাজেই তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি সংখ্যালঘু নির্যাতন এটা অনেক আগের ঘটনা। এখন আর এ ধরনের ঘটনা আমাদের কানে আসে না। ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে দু-একটি ঘটনা ঘটে যায়। এসব বিষয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাতে কোনো রকম দুর্ঘটনা না ঘটে। এ বিষয়ে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর