ঢাকা ১২:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

’৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতির দাবিতে কানাডায় সমাবেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২
  • ১৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নারকীয় গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে কানাডায় এক সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকালে কানাডার টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউয়ে এ সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

টরন্টো ফিল্ম ফোরামের আয়োজনে এই সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিলে টরন্টোর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যক্তিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এই আলোচনা যাতে ফলপ্রসূ হয় এবং যে সব সংগঠনের প্রচেষ্টায় গণহত্যার বিষয়টি জাতিসংঘের আলোচনার এজেন্ডা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেই সব সংগঠনের সাথে সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে টরন্টোতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর এই প্রথম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশে সংঘটিত ভয়াবহতম, বীভৎস, বর্বর গণহত্যা ও জেনোসাইড নিয়ে আলোচনা হতে যাচ্ছে। এই আলোচনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী বাঙালিরা ইতোমধ্যে সোচ্চার হয়েছে এই জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এ অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা ও জেনোসাইডের ভিডিও ফুটেজ, ফটোগ্রাফ, ছবি, দলিলপত্র এবং তথ্যউপাত্ত। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ-BASUG, ‘আমরা একাত্তর’ এবং ‘প্রজন্ম ৭১’-এর যৌথ আহবানে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ জেনেভার সদর দফতরে ৩ অক্টোবর বিকাল ৩টায় ৫১তম অধিবেশনে ৩নং আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করেছে।

টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউয়ের ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের সামনে বিপুলসংখ্যক মানুষ এ গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি সংবলিত ব্যানার, পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে উপস্থিত হন।

টরন্টোর ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তৃতা করেন- প্রতিথযশা কবি আসাদ চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা দ্যুতি অরনি, পিডিআই (প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক ইনিশিয়েটিভ) কানাডার আহবায়ক বিদ্যুৎ রঞ্জন দে, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম, কানাডা আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি সৈয়দ আব্দুল গফফার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডার সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম, সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন ভিপি ফায়জুল করিম, সাংবাদিক ও ‘নতুন দেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর এবং টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক।

টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সদস্যরা ছাড়াও এ সমাবেশে পিডিআই কানাডা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডা, ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রাইম স্ট্রাটেজি ফোরাম, ছায়ানট, নাট্য সংস্থা কানাডা, ম্যাক এন্টারটেইনমেন্ট, কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, অন্যমেলা টরন্টো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’ এবং প্রজন্ম ৭১-এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

ড্যানফোর্থ এভিনিউর সমাবেশ শেষে উপস্থিত সবাই রবীন্দ্র সংগীত শিল্প নবিউল হক বাবলুর সাথে ‘আগুনের পরশমণি’ গান গাইতে গাইতে সমাবেশ সংলগ্ন ডেন্টোনিয়া পার্কে অবস্থিত শহিদ মিনারে গিয়ে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। টরন্টোর শহীদ মিনারে ’৭১-এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবির সমাপনী বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এজিএস নাসির উদ দুজা। তিনি ঘোষণা দেন ’৭১-এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত টরন্টোতে ধারাবাহিকভাবে সমাবেশ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নাসির উদ দুজা সবাইকে এই মহৎ উদ্যোগের সাথে থাকার জন্য আহবান জানান। সমাবেশ এবং প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের অনুষ্ঠান সম্পাদক সোলায়মান তালুত রবিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

’৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতির দাবিতে কানাডায় সমাবেশ

আপডেট টাইম : ১০:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নারকীয় গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে কানাডায় এক সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকালে কানাডার টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউয়ে এ সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

টরন্টো ফিল্ম ফোরামের আয়োজনে এই সমাবেশ ও প্রদীপ মিছিলে টরন্টোর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যক্তিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এই আলোচনা যাতে ফলপ্রসূ হয় এবং যে সব সংগঠনের প্রচেষ্টায় গণহত্যার বিষয়টি জাতিসংঘের আলোচনার এজেন্ডা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেই সব সংগঠনের সাথে সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে টরন্টোতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর এই প্রথম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশে সংঘটিত ভয়াবহতম, বীভৎস, বর্বর গণহত্যা ও জেনোসাইড নিয়ে আলোচনা হতে যাচ্ছে। এই আলোচনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী বাঙালিরা ইতোমধ্যে সোচ্চার হয়েছে এই জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এ অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা ও জেনোসাইডের ভিডিও ফুটেজ, ফটোগ্রাফ, ছবি, দলিলপত্র এবং তথ্যউপাত্ত। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ-BASUG, ‘আমরা একাত্তর’ এবং ‘প্রজন্ম ৭১’-এর যৌথ আহবানে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ জেনেভার সদর দফতরে ৩ অক্টোবর বিকাল ৩টায় ৫১তম অধিবেশনে ৩নং আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করেছে।

টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউয়ের ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের সামনে বিপুলসংখ্যক মানুষ এ গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি সংবলিত ব্যানার, পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে উপস্থিত হন।

টরন্টোর ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তৃতা করেন- প্রতিথযশা কবি আসাদ চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা দ্যুতি অরনি, পিডিআই (প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক ইনিশিয়েটিভ) কানাডার আহবায়ক বিদ্যুৎ রঞ্জন দে, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম, কানাডা আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি সৈয়দ আব্দুল গফফার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডার সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম, সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন ভিপি ফায়জুল করিম, সাংবাদিক ও ‘নতুন দেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর এবং টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক।

টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সদস্যরা ছাড়াও এ সমাবেশে পিডিআই কানাডা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কানাডা, ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রাইম স্ট্রাটেজি ফোরাম, ছায়ানট, নাট্য সংস্থা কানাডা, ম্যাক এন্টারটেইনমেন্ট, কানাডা বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, অন্যমেলা টরন্টো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’ এবং প্রজন্ম ৭১-এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

ড্যানফোর্থ এভিনিউর সমাবেশ শেষে উপস্থিত সবাই রবীন্দ্র সংগীত শিল্প নবিউল হক বাবলুর সাথে ‘আগুনের পরশমণি’ গান গাইতে গাইতে সমাবেশ সংলগ্ন ডেন্টোনিয়া পার্কে অবস্থিত শহিদ মিনারে গিয়ে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। টরন্টোর শহীদ মিনারে ’৭১-এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবির সমাপনী বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এজিএস নাসির উদ দুজা। তিনি ঘোষণা দেন ’৭১-এর গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত টরন্টোতে ধারাবাহিকভাবে সমাবেশ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নাসির উদ দুজা সবাইকে এই মহৎ উদ্যোগের সাথে থাকার জন্য আহবান জানান। সমাবেশ এবং প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের অনুষ্ঠান সম্পাদক সোলায়মান তালুত রবিন।