ঢাকা ০৯:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হ্যান্ড-ফুট-মাউথ রোগ প্রতিরোধে যা করবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরীরে দেখা যাওয়া র‌্যাশযুক্ত অসুখগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’। এ রোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র আরএনএ ভাইরাসের অন্তর্ভুক্ত কিছু আন্ত্রিক ভাইরাসের দ্বারা সংঘটিত হয়। যার মধ্যে ককসাকি-এ ১৬, আন্ত্রিক ভাইরাস-এ ৭১ কখনো বা কিছু ইকোভাইরাস অন্যতম। এই রোগ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন— প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

শিশু বয়সে এই রোগ কখনো কখনো মহামারির রূপ নেয়।
তবে সচরাচরভাবে এটা মৃদুমাত্রার অসুখ। এতে কখনো অল্পস্বল্প জ্বর থাকে।
লক্ষণ

এ অসুখে মুখের ভেতরে বিশেষত জিহ্বা, ঠোঁট ও মাড়িতে ব্যথাযুক্ত ঘা দেখা দেয়। এসব ঘা বা ভেসিকেলস সাধারণভাবে ৪ থেকে ৮ মিলিমিটার পরিমাণ গর্ত সৃষ্টি করে, যার চারপাশে থাকে লাল রঙের বৃত্ত। এসব র‌্যাশ হাতে-পায়ে, কোমরের ভাঁজেও দেখা যায়। হাতে-পায়ের তালুতে ৩ থেকে ৭ মিলিমিটার আকারের এসব ভেসিকেলস সাধারণভাবে ব্যথাযুক্ত থাকে।

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ কদাচিৎ মারাত্মক প্রকৃতির হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর তীব্র জ্বর, সারা শরীরে (মুখমণ্ডল, পুরো হাত-পা এবং বুকে-পিঠে) র‌্যাশ দেখা যায়। শিশু তীব্র ব্যথা, পানিস্বল্পতা ইত্যাদিতে ভোগে। এ অসুখে মারাত্মক জটিলতার মধ্যে আছে এনকেফালাইটিস (মস্তিষ্কে সংক্রমণ), প্যারালিসিস, হার্টের মাংসপেশিতে প্রদাহ (মাইয়োকার্ডাইটিস, পেরিকার্ডাইটিস) এবং শক—সেসব কারণে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

শনাক্তকরণ

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের’ রোগ নির্ণয় সাধারণভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শারীরিক র‌্যাশ দেখে শনাক্ত করা হয়। আরটিপিসিআর মতো ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় রোগ জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ অসুখের পরিণতি তেমন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে এনকেফালাইটিস, মাইয়োকার্ডাইটিস, পেরিকার্ডাইটিস এবং নবজাতকের তীব্র সংক্রমণ হলে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তিপূর্বক চিকিৎসা দেওয়া উচিত।

প্রতিরোধ

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ মূলত ছড়ায় মল থেকে মুখে এবং কফ, কাশ, থুথু এসবের মাধ্যমে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।

♦ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস

♦ সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। অসুস্থ রোগীর কফ, বমি, রক্ত ইত্যাদি বর্জ্য পদার্থের সুষ্ঠু নিষ্কাশন। ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদ, বাসন-কোসন ইত্যাদি ব্যবহার না করা

♦ পানীয় জল এবং সুইমিং পুলের পানি ক্লোরিনযুক্ত করা। বৈশ্বিকভাবে এ রোগের প্রতিষেধক টিকা তৈরির প্রচেষ্টা চালু আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হ্যান্ড-ফুট-মাউথ রোগ প্রতিরোধে যা করবেন

আপডেট টাইম : ০৩:০৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরীরে দেখা যাওয়া র‌্যাশযুক্ত অসুখগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’। এ রোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র আরএনএ ভাইরাসের অন্তর্ভুক্ত কিছু আন্ত্রিক ভাইরাসের দ্বারা সংঘটিত হয়। যার মধ্যে ককসাকি-এ ১৬, আন্ত্রিক ভাইরাস-এ ৭১ কখনো বা কিছু ইকোভাইরাস অন্যতম। এই রোগ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন— প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

শিশু বয়সে এই রোগ কখনো কখনো মহামারির রূপ নেয়।
তবে সচরাচরভাবে এটা মৃদুমাত্রার অসুখ। এতে কখনো অল্পস্বল্প জ্বর থাকে।
লক্ষণ

এ অসুখে মুখের ভেতরে বিশেষত জিহ্বা, ঠোঁট ও মাড়িতে ব্যথাযুক্ত ঘা দেখা দেয়। এসব ঘা বা ভেসিকেলস সাধারণভাবে ৪ থেকে ৮ মিলিমিটার পরিমাণ গর্ত সৃষ্টি করে, যার চারপাশে থাকে লাল রঙের বৃত্ত। এসব র‌্যাশ হাতে-পায়ে, কোমরের ভাঁজেও দেখা যায়। হাতে-পায়ের তালুতে ৩ থেকে ৭ মিলিমিটার আকারের এসব ভেসিকেলস সাধারণভাবে ব্যথাযুক্ত থাকে।

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ কদাচিৎ মারাত্মক প্রকৃতির হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুর তীব্র জ্বর, সারা শরীরে (মুখমণ্ডল, পুরো হাত-পা এবং বুকে-পিঠে) র‌্যাশ দেখা যায়। শিশু তীব্র ব্যথা, পানিস্বল্পতা ইত্যাদিতে ভোগে। এ অসুখে মারাত্মক জটিলতার মধ্যে আছে এনকেফালাইটিস (মস্তিষ্কে সংক্রমণ), প্যারালিসিস, হার্টের মাংসপেশিতে প্রদাহ (মাইয়োকার্ডাইটিস, পেরিকার্ডাইটিস) এবং শক—সেসব কারণে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

শনাক্তকরণ

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের’ রোগ নির্ণয় সাধারণভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শারীরিক র‌্যাশ দেখে শনাক্ত করা হয়। আরটিপিসিআর মতো ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় রোগ জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ অসুখের পরিণতি তেমন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে এনকেফালাইটিস, মাইয়োকার্ডাইটিস, পেরিকার্ডাইটিস এবং নবজাতকের তীব্র সংক্রমণ হলে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তিপূর্বক চিকিৎসা দেওয়া উচিত।

প্রতিরোধ

‘হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ মূলত ছড়ায় মল থেকে মুখে এবং কফ, কাশ, থুথু এসবের মাধ্যমে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।

♦ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস

♦ সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। অসুস্থ রোগীর কফ, বমি, রক্ত ইত্যাদি বর্জ্য পদার্থের সুষ্ঠু নিষ্কাশন। ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদ, বাসন-কোসন ইত্যাদি ব্যবহার না করা

♦ পানীয় জল এবং সুইমিং পুলের পানি ক্লোরিনযুক্ত করা। বৈশ্বিকভাবে এ রোগের প্রতিষেধক টিকা তৈরির প্রচেষ্টা চালু আছে।