ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ২৩৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ৩ বছর পর ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ ভারত যাচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদীর আমন্ত্রণে তাঁর এই দিল্লি সফর নিয়ে দু’দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে কি ধরণের চুক্তি ও স্মারক সই হতে পারে এবং কি হওয়া উচিত তা নিয়ে ভারতে গণমাধ্যমগুলোতে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। আবার ‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায়  রাখতে যা যা করা দরকার করতে হবে’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন দেশের মানুষ। শুধু তাই নয় এবার শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গিয়ে ভারতকে কি কি দেন এবং বাংলাদেশের জন্য কি কি নিয়ে আসেন সেটা জানতে দেশের মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। কারণ গত এক যুগে দুই দেশের বন্ধুত্বের নামে ভারতকে উজার করে দেয়া হয়েছে; বিনিময়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই পায়নি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য, ‘আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।’ সে প্রমাণ দেয়। ভারত তিস্তা নদীর পানি চুক্তি এক যুগ ঝুঁলিয়ে রেখে গত বছর ভারত ফেনী নদীর পানি উঠিয়ে নিতে স্মারকচুক্তি করেছে। এ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দু’দেশের কূটনীতিক ও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, তিস্তার পানি নিয়ে পড়ে থাকার চেয়েও এখন আন্ত:দেশীয় যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রতি জোর দেয়া উচিত। ভারত ও বাংলাদেশের যোগাযোগ ছাড়াও নেপাল, ভুটান এমনকি চীনের সঙ্গে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুললে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। একই সঙ্গে দ্ইু দেশের মধ্যকার অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির বিষয়ে অগ্রগতি হতে পারে। এ ছাড়া পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর উপলক্ষে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে স্থলসীমা ও বঙ্গোপসাগরের সীমার মতো বিষয়গুলো সমাধানের ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যু সমাধান হয়েছে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, ভারত থেকে জ্বালানি তেল কিনতে পারে বাংলাদেশ। রাশিয়ার বদলে ভারত থেকে আমরা তেল নিতে পারি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে আলোচনা হতে পারে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছি। এছাড়া ভারতের একটি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বাংলাদেশে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। ভারতের উত্তর-পূর্ব দিক থেকে একটি পাইপলাইন পার্বতীপুর দিয়ে করা হয়েছে। জ্বালানি ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা হতে পারে। আলোচনার পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ৭টি সমঝোতা চুক্তির কথা জানালেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি কি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে তা প্রকাশ করেনি। তবে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারত থেকে সিলেটে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। কুশিয়ারার পানি প্রত্যাহার স্মারক সই হবে। এছাড়াও দুই দেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সহযোগিতা, বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা, রেলের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাড়ানো, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, ভারতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান জিএমআরের সঙ্গে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি সমঝোতা স্মরক সই হতে পারে। এ ছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনায় রূপসা নদীর ওপর নির্মিত সেতু উদ্বোধন করতে পারেন। এ সময় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট সমাপ্তির ঘোষণা দেবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচিতে দেখা যাচ্ছে, ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সফরে সঙ্গে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সম্মানে নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। দিল্লি অবস্থানকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) আয়োজিত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। পাশাপাশি তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ ও আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান করবেন। শেখ হাসিনা আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আজমির শরিফে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করবেন। সেদিন বিকালে তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

প্রতিবেশি বন্ধু হিসেবে ভারত গত এক যুগে বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছে। সড়ক পথে ট্রানজিট, রেলপথে ও নৌ পথে ট্রানজিট পেয়েছে, সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছে। বাংলাদেশের কারণে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যে নিরাপত্তার খবর কমে গেছে। চাওয়া মাত্রই ফেনি নদীর পানি তুলে ত্রিপুরায় নেয়ার সমঝোতা করেছে। বাংলাদেশ ভারতকে সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। তারপরও সীমান্ত হত্যা বন্ধের অঙ্গিকার করেও কথা রাখেনি। এক যুগ ধরে তিস্তা চুক্তি ঝুলে রয়েছে। ৫৪ নদীর পানিবণ্টনে সমঝোতা হয়নি এবং ফারাক্কার ২৫ বছরের পানি চুক্তি হলেও চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না।

ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর রিপোর্টে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে দু’দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ভারত ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ, কানেক্টিভিটি, সমুদ্রবন্দর, সড়কপথ, রেল ও নৌপথ ব্যবহার করছে। বলতে গেলে বিনা শুল্কে ভারতের পণ্যাদি বাংলাদেশের ভূমি ও পথ ব্যবহার করে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে হচ্ছে। ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য পরিবহণের যে খরচ হয় বাংলাদেশের ভুখন্ড ব্যবহার করায় তার চেয়েও কম খরচ হচ্ছে। বাংলাদেশ কিন্তু প্রতিবেশি হিসেবে অনুরূপ সুবিধা ভারতের কাছ থেকে এখনো পাচ্ছে না। অথচ ভারত তিস্তা চুক্তি ঝুলে রাখলেও ভারত আন্ত:রাষ্ট্রীয় যোগাযোগে এ অঞ্চলে যোগাযোগের বিপ্লব ঘটাতে পারে। ‘পৃথিবী এখন হাটের মুঠোয়’ এ শ্লোগানের ভিত্তিতেই ভারত এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি ঘটাতে পারে। কেবল দু’দেশের মধ্যে নয় বরং পাশের দেশ নেপাল, ভুটান এমনকি চীনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে। বহুপাক্ষিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতিকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এখন ঘর বন্ধ করে বা প্রাচীর দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে রাখার যুগ নয়। বহু পাক্ষিক কানেক্টিভিটি চালু হলে এর সুফল বাংলাদেশ যেমন পাবে তেমনি পাবে ভারতও।

শুধু বাংলাদেশ নয়, শেখ হাসিনার দিল্লি সফর নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনেতিক মহল তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে। এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নিতে পারে। পেশাদার কূটনীতিকদের মতে, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের বোঝাপড়া, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহে সৃষ্ট সঙ্কট এবং বাংলাদেশ ও ভারতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সফরটিতে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। কার্যত বাংলাদেশ ও ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক জোরদার করাই প্রাধান্য পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে। তবে দু’দেশের সম্পর্কের যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে তার স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশের জনগণ। কিন্তু ভারতের একার নিলে হবে না; বাংলাদেশকেও কিছু দিতে হবে। তাদের জনগণ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন, বিশেষ করে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি প্রত্যাশা করে। ভারত দু’দেশের অসম বাণিজ্য থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে যোগাযোগের আন্ত:দেশীয় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে। এতে বাংলাদেশ ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটানসহ অন্যান্য দেশে রফতানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে দু’দেশের অসম বাণিজ্যের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশ যেমন ভারতকে দিচ্ছে তেমনি ভারতকে বাংলাদেশের চাওয়া পাওয়া আগে মূল্যায়ন করতে হবে।

ভারত সফর নিয়ে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে গতকাল এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘তিস্তা নদীর পানি চুক্তি’ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, এটি (তিস্তা চুক্তি) ঝুলে আছে। আমাদের এখানে ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরো উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ মে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমরা কারো কাছে কিছু চাই না। আমি নিতে পছন্দ করি না। সব সময় অন্যকে দিতে বেশি পছন্দ করি। আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।’ ওই সময় তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ওরা (বিএনপি) শুধু ভারত গিয়েছি ক্ষমতায় আসতে এটি বলছে। কিন্তু ২০০১ সালে তো ভারত ও আমেরিকা আমাকে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশের মানুষের ৫০ বছরের গ্যাস থাকলে তখন দিব। কিন্তু খালেদা জিয়া মুচলেকা দিয়েছিল ক্ষমতায় গেলে গ্যাস বিক্রি করবে। কিন্তু ক্ষমতায় এসে গ্যাস পায়নি, দিতেও পারেনি। যারা ক্ষমতায় আসার জন্য মুচলেকা দেয় আমি সেই দলের না। ক্ষমতায় আসার জন্য আমি মুচলেকা দেই নাই। তখন আমি শুধু বলেছিলাম আল্লাহ জন দেখে ধন দেন। তারা গ্যাসও পায়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষমতা দখল করেই তো ভারত সফরে যেতে হয়। খালেদা জিয়া কি ক্ষমতায় এসে ভারত যায়নি? ক্ষমতা গ্রহণের পরই তো ভারত সফরে যায় আগে। বিএনপি নেতারা কি সেটি ভুলে গেছেন? বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় কি গঙ্গা চুক্তি হয়েছিল? সেটি তো অনেক বেশি দরকার ছিল। কই বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভারত সফরে গিয়ে তো গঙ্গা চুক্তি সফল করতে পারেননি। সেটি তো আমি প্রথমবার ক্ষমতায় এসে করেছিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সফরসঙ্গী হিসেবে প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। #

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কল্যানমুখী দেশ গড়তে সর্বশ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান- এড.জুবায়ের

প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন

আপডেট টাইম : ০৯:৫১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ৩ বছর পর ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ ভারত যাচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদীর আমন্ত্রণে তাঁর এই দিল্লি সফর নিয়ে দু’দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে কি ধরণের চুক্তি ও স্মারক সই হতে পারে এবং কি হওয়া উচিত তা নিয়ে ভারতে গণমাধ্যমগুলোতে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। আবার ‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায়  রাখতে যা যা করা দরকার করতে হবে’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন দেশের মানুষ। শুধু তাই নয় এবার শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গিয়ে ভারতকে কি কি দেন এবং বাংলাদেশের জন্য কি কি নিয়ে আসেন সেটা জানতে দেশের মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। কারণ গত এক যুগে দুই দেশের বন্ধুত্বের নামে ভারতকে উজার করে দেয়া হয়েছে; বিনিময়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই পায়নি। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য, ‘আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।’ সে প্রমাণ দেয়। ভারত তিস্তা নদীর পানি চুক্তি এক যুগ ঝুঁলিয়ে রেখে গত বছর ভারত ফেনী নদীর পানি উঠিয়ে নিতে স্মারকচুক্তি করেছে। এ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দু’দেশের কূটনীতিক ও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, তিস্তার পানি নিয়ে পড়ে থাকার চেয়েও এখন আন্ত:দেশীয় যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রতি জোর দেয়া উচিত। ভারত ও বাংলাদেশের যোগাযোগ ছাড়াও নেপাল, ভুটান এমনকি চীনের সঙ্গে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুললে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। একই সঙ্গে দ্ইু দেশের মধ্যকার অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির বিষয়ে অগ্রগতি হতে পারে। এ ছাড়া পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর উপলক্ষে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে স্থলসীমা ও বঙ্গোপসাগরের সীমার মতো বিষয়গুলো সমাধানের ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যু সমাধান হয়েছে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, ভারত থেকে জ্বালানি তেল কিনতে পারে বাংলাদেশ। রাশিয়ার বদলে ভারত থেকে আমরা তেল নিতে পারি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে আলোচনা হতে পারে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছি। এছাড়া ভারতের একটি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বাংলাদেশে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। ভারতের উত্তর-পূর্ব দিক থেকে একটি পাইপলাইন পার্বতীপুর দিয়ে করা হয়েছে। জ্বালানি ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা হতে পারে। আলোচনার পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ৭টি সমঝোতা চুক্তির কথা জানালেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি কি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে তা প্রকাশ করেনি। তবে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারত থেকে সিলেটে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। কুশিয়ারার পানি প্রত্যাহার স্মারক সই হবে। এছাড়াও দুই দেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সহযোগিতা, বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা, রেলের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাড়ানো, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, ভারতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান জিএমআরের সঙ্গে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি সমঝোতা স্মরক সই হতে পারে। এ ছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনায় রূপসা নদীর ওপর নির্মিত সেতু উদ্বোধন করতে পারেন। এ সময় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট সমাপ্তির ঘোষণা দেবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচিতে দেখা যাচ্ছে, ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সফরে সঙ্গে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সম্মানে নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। দিল্লি অবস্থানকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) আয়োজিত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। পাশাপাশি তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ ও আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান করবেন। শেখ হাসিনা আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আজমির শরিফে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করবেন। সেদিন বিকালে তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

প্রতিবেশি বন্ধু হিসেবে ভারত গত এক যুগে বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছে। সড়ক পথে ট্রানজিট, রেলপথে ও নৌ পথে ট্রানজিট পেয়েছে, সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছে। বাংলাদেশের কারণে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যে নিরাপত্তার খবর কমে গেছে। চাওয়া মাত্রই ফেনি নদীর পানি তুলে ত্রিপুরায় নেয়ার সমঝোতা করেছে। বাংলাদেশ ভারতকে সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। তারপরও সীমান্ত হত্যা বন্ধের অঙ্গিকার করেও কথা রাখেনি। এক যুগ ধরে তিস্তা চুক্তি ঝুলে রয়েছে। ৫৪ নদীর পানিবণ্টনে সমঝোতা হয়নি এবং ফারাক্কার ২৫ বছরের পানি চুক্তি হলেও চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না।

ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর রিপোর্টে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে দু’দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ভারত ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ, কানেক্টিভিটি, সমুদ্রবন্দর, সড়কপথ, রেল ও নৌপথ ব্যবহার করছে। বলতে গেলে বিনা শুল্কে ভারতের পণ্যাদি বাংলাদেশের ভূমি ও পথ ব্যবহার করে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে হচ্ছে। ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য পরিবহণের যে খরচ হয় বাংলাদেশের ভুখন্ড ব্যবহার করায় তার চেয়েও কম খরচ হচ্ছে। বাংলাদেশ কিন্তু প্রতিবেশি হিসেবে অনুরূপ সুবিধা ভারতের কাছ থেকে এখনো পাচ্ছে না। অথচ ভারত তিস্তা চুক্তি ঝুলে রাখলেও ভারত আন্ত:রাষ্ট্রীয় যোগাযোগে এ অঞ্চলে যোগাযোগের বিপ্লব ঘটাতে পারে। ‘পৃথিবী এখন হাটের মুঠোয়’ এ শ্লোগানের ভিত্তিতেই ভারত এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি ঘটাতে পারে। কেবল দু’দেশের মধ্যে নয় বরং পাশের দেশ নেপাল, ভুটান এমনকি চীনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে। বহুপাক্ষিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতিকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এখন ঘর বন্ধ করে বা প্রাচীর দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে রাখার যুগ নয়। বহু পাক্ষিক কানেক্টিভিটি চালু হলে এর সুফল বাংলাদেশ যেমন পাবে তেমনি পাবে ভারতও।

শুধু বাংলাদেশ নয়, শেখ হাসিনার দিল্লি সফর নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনেতিক মহল তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে। এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নিতে পারে। পেশাদার কূটনীতিকদের মতে, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের বোঝাপড়া, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহে সৃষ্ট সঙ্কট এবং বাংলাদেশ ও ভারতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সফরটিতে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। কার্যত বাংলাদেশ ও ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক জোরদার করাই প্রাধান্য পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে। তবে দু’দেশের সম্পর্কের যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে তার স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশের জনগণ। কিন্তু ভারতের একার নিলে হবে না; বাংলাদেশকেও কিছু দিতে হবে। তাদের জনগণ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন, বিশেষ করে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি প্রত্যাশা করে। ভারত দু’দেশের অসম বাণিজ্য থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে যোগাযোগের আন্ত:দেশীয় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে। এতে বাংলাদেশ ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটানসহ অন্যান্য দেশে রফতানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে দু’দেশের অসম বাণিজ্যের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশ যেমন ভারতকে দিচ্ছে তেমনি ভারতকে বাংলাদেশের চাওয়া পাওয়া আগে মূল্যায়ন করতে হবে।

ভারত সফর নিয়ে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে গতকাল এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘তিস্তা নদীর পানি চুক্তি’ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, এটি (তিস্তা চুক্তি) ঝুলে আছে। আমাদের এখানে ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরো উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ মে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমরা কারো কাছে কিছু চাই না। আমি নিতে পছন্দ করি না। সব সময় অন্যকে দিতে বেশি পছন্দ করি। আমরা ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে।’ ওই সময় তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ওরা (বিএনপি) শুধু ভারত গিয়েছি ক্ষমতায় আসতে এটি বলছে। কিন্তু ২০০১ সালে তো ভারত ও আমেরিকা আমাকে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশের মানুষের ৫০ বছরের গ্যাস থাকলে তখন দিব। কিন্তু খালেদা জিয়া মুচলেকা দিয়েছিল ক্ষমতায় গেলে গ্যাস বিক্রি করবে। কিন্তু ক্ষমতায় এসে গ্যাস পায়নি, দিতেও পারেনি। যারা ক্ষমতায় আসার জন্য মুচলেকা দেয় আমি সেই দলের না। ক্ষমতায় আসার জন্য আমি মুচলেকা দেই নাই। তখন আমি শুধু বলেছিলাম আল্লাহ জন দেখে ধন দেন। তারা গ্যাসও পায়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষমতা দখল করেই তো ভারত সফরে যেতে হয়। খালেদা জিয়া কি ক্ষমতায় এসে ভারত যায়নি? ক্ষমতা গ্রহণের পরই তো ভারত সফরে যায় আগে। বিএনপি নেতারা কি সেটি ভুলে গেছেন? বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় কি গঙ্গা চুক্তি হয়েছিল? সেটি তো অনেক বেশি দরকার ছিল। কই বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভারত সফরে গিয়ে তো গঙ্গা চুক্তি সফল করতে পারেননি। সেটি তো আমি প্রথমবার ক্ষমতায় এসে করেছিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সফরসঙ্গী হিসেবে প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। #