ঢাকা ০৯:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা দিয়ে সারল বাবার দাফন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৯:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২
  • ১১১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুপুরে বাবার কাছ থেকে ১২,৮০০ টাকা নিয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন মেয়েটি। ফর্ম পূরণ করে টাকা জমা দেওয়ার সময় জানতে পারেন বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বাবা।

মোবাইল ফোনে খবর শোনা মাত্রই ভর্তি না হয়েই ছুটে যান হাসপাতালে। সেদিন রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই মেয়েটির বাবা মারা যান।

আর বাবার দাফনে মেয়েটি খরচ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাবার দেওয়া সেই টাকা।

গত ৬ আগস্ট ঢাকার উত্তরার কামারপাড়ায় ভাঙারির দোকান ও অটোরিকশা গ্যারেজের দোকানে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন দগ্ধ হন। এদের মধ্যে ৬জন মারা গেছেন। তারমধ্যে একজন গাজী মাজহারুল ইসলাম। যিনি ছিলেন ওই দোকান ও গ্যারেজের মালিক।

স্ত্রী রোকসানা আক্তার ও মেয়ে বীথি আক্তারকে নিয়ে উত্তরার তুরাগের রাজাবাড়ি এলাকায় থাকতেন গাজী মাজহারুল। আরও দুই মেয়ে রয়েছে এ সংসারে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। কেবল বিথী পড়াশোনা করছেন। বিস্ফোরণের দিন বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কাঁদতে কাঁদতে বিথী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভর্তির জন্য টাকা জমা দিচ্ছিলাম আর বাবার দুর্ঘটনার খবর শুনি। টাকা জমা না দিয়েই যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যাই। টাকা জমা না দিয়ে ভালোই করেছি । সেই টাকায় বাবার দাফন হয়েছে। এখন বাবা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নও আর দেখি না। বাবার উপার্জনের টাকাতেই সংসার চলত।’

পরিবার সূত্রের খবর, রিকশার ব্যবসা ভালো চলছিল না বিধায় গত ৬ মাস আগে গ্যারেজের পাশেই ভাঙারির দোকান দিয়েছিলেন মাজহারুল। ওই দোকানে কাজ করার সময় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

তবে পুলিশের ধারণা, মেয়াদোত্তীর্ণ হ্যান্ড স্যানিটাইজার বের করে বোতল খালি করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা দিয়ে সারল বাবার দাফন

আপডেট টাইম : ১১:২৯:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুপুরে বাবার কাছ থেকে ১২,৮০০ টাকা নিয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন মেয়েটি। ফর্ম পূরণ করে টাকা জমা দেওয়ার সময় জানতে পারেন বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বাবা।

মোবাইল ফোনে খবর শোনা মাত্রই ভর্তি না হয়েই ছুটে যান হাসপাতালে। সেদিন রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই মেয়েটির বাবা মারা যান।

আর বাবার দাফনে মেয়েটি খরচ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাবার দেওয়া সেই টাকা।

গত ৬ আগস্ট ঢাকার উত্তরার কামারপাড়ায় ভাঙারির দোকান ও অটোরিকশা গ্যারেজের দোকানে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন দগ্ধ হন। এদের মধ্যে ৬জন মারা গেছেন। তারমধ্যে একজন গাজী মাজহারুল ইসলাম। যিনি ছিলেন ওই দোকান ও গ্যারেজের মালিক।

স্ত্রী রোকসানা আক্তার ও মেয়ে বীথি আক্তারকে নিয়ে উত্তরার তুরাগের রাজাবাড়ি এলাকায় থাকতেন গাজী মাজহারুল। আরও দুই মেয়ে রয়েছে এ সংসারে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। কেবল বিথী পড়াশোনা করছেন। বিস্ফোরণের দিন বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কাঁদতে কাঁদতে বিথী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভর্তির জন্য টাকা জমা দিচ্ছিলাম আর বাবার দুর্ঘটনার খবর শুনি। টাকা জমা না দিয়েই যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যাই। টাকা জমা না দিয়ে ভালোই করেছি । সেই টাকায় বাবার দাফন হয়েছে। এখন বাবা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নও আর দেখি না। বাবার উপার্জনের টাকাতেই সংসার চলত।’

পরিবার সূত্রের খবর, রিকশার ব্যবসা ভালো চলছিল না বিধায় গত ৬ মাস আগে গ্যারেজের পাশেই ভাঙারির দোকান দিয়েছিলেন মাজহারুল। ওই দোকানে কাজ করার সময় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

তবে পুলিশের ধারণা, মেয়াদোত্তীর্ণ হ্যান্ড স্যানিটাইজার বের করে বোতল খালি করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে।