হাওর বার্তা ডেস্কঃ মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতা কম্পানিগুলো পরিদর্শন করছেন হাইকমিশনের শ্রমকল্যাণ উইং এর কর্মকর্তারা। গত শুক্রবার (১ জুলাই) ও শনিবার (২ জুলাই) মালাক্কায় বিভিন্ন কম্পানি পরিদর্শন করেন তারা। নিয়োগদাতা কম্পানিগুলোর কর্মী নিয়োগের সক্ষমতা, কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যাচাই করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নিয়োগদাতার চাহিদাপত্র বা মূল ভিসায় সত্যায়ন করবেন শ্রমকল্যাণ উইং এর কর্মকর্তারা।
এদিকে, পরিদর্শন শুরু হলেও এখনো ঢাকায় কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়নি। বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল সেন্টার চূড়ান্তকরণ এবং কর্মীদের বাংলাদেশ অংশে খরচ নির্ধারণ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ বাকি রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) পর্যন্ত ১০টির মতো মেডিক্যাল সেন্টার পরিদর্শন করে এ সংক্রান্ত আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি।
এদিকে, দেশটিতে কর্মী পাঠাতে হলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষ ব্যুরো (বিএমইটি) ও হাইকমিশনে মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতির সংযোগ দিতে হয়। হাইকমিশনের আগেই সেটি স্থাপন করা হলেও বিএমইটিতে স্থাপনের জন্য এতোদিন কোনো নির্দেশনা ছিল না।
আজ রবিবার (৩ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ার সই করা চিঠিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে হাইকমিশনে একটি নোটভারবাল (সরকারি চিঠি) দেয়। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ার এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এজন্য হাইকমিশন ও বিএমইটিতে এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি সংযুক্ত করতে বলা হয়।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ধীরগতি দেখে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিকল্প পদ্ধতিতে কর্মীদের মেডিক্যাল করানোর চিন্তা করছে। এজেন্সি সূত্রে জানা যায়, মেডিক্যালের বিষয়টি যেহেতু মালয়েশিয়া সরকারের এখতিয়ার, আর এর আগেই বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠানকে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার, তাই সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে কর্মীদের মেডিক্যাল করানোর বিষয়ে চিন্তা করছেন তারা। গামকাসহ অন্য দেশের মেডিক্যাল সেন্টারগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দেশের অনুমতি নিয়ে থাকে। কোনো দেশের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। শুধু মালয়েশিয়ার জন্য এই জটিলতা সৃষ্টি করে বাজারটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা।
মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানান, মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিতে আগ্রহী। অন্যদিকে নেপাল থেকে প্রতিদিন হাজারের বেশি কর্মী দেশটিতে প্রবেশ করছেন। আবার বাংলাদেশি কর্মীরা যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। এই অবস্থায় দেশের স্বার্থেই কর্মী পাঠানোর বিষয়ে দ্রুত কাজ করতে হবে। এজন্য মালয়েশিয়ার সরকারের সাথে সমন্বয় করে সম্ভাব্য যেকোন বিকল্প পদ্ধতিতে কর্মী পাঠাতে চান রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরা।
তবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত কর্মীদের মেডিক্যাল ও মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কর্মীদের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ হওয়ার ৪০ মাস পর গেলো বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্বারক সই হয়। এর পর ২ জুন ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।