হাওর বার্তা ডেস্কঃ টানা বৃষ্টি ও ঢলে আখাউড়ায় তলিয়ে গেছে দেড় শতাধিক পুকুর। ভেসে গেছে এসব পুকুরের সব মাছ। মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মত্স্যচাষিরা। মত্স্য অফিসের হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি টাকার বেশি। জানা যায়, বৃষ্টির পানি আর উজানের পানিতে সীমান্ত এলাকার অন্তত ২০টি গ্রামের নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানিতে তলিয়ে যায় উপজেলার মনিয়ন্দ, মোগড়া ও দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক মাছ চাষের পুকুর। ফলে পুকুরের বিপুল পরিমাণ মাছ এবং পোনা ভেসে যায়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মত্স্যচাষিরা।
উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, আখাউড়ায় ১০৯টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৯০ মেট্রিক টন মাছ এবং ৪ লাখ মাছের পোনা ভেসে গেছে। এতে ১ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। মনিয়ন্দ ইউনিয়নে প্রায় ৬০টি, মোগড়া ইউনিয়নে প্রায় ৩০টি এবং দক্ষিণ ইউনিয়নে প্রায় ২১টি পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরে পাঙাশ, তেলাপিয়া, কই, রুই, মৃগেল, কাতলসহ বিভিন্ন মাছ চাষ করা হয়।
সরেজমিনে মনিয়ন্দ ইউনিয়নে আইড়ল, লৌহঘর, খারকুট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকার বহু পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু পুকুরে জাল ও বাঁশ দিয়ে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। বানের পানি কমতে থাকায় চাষিরা মাছ রক্ষায় কাজ করছে। মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিলের মত্স্যচাষি মো. মনির মিয়া বলেন, আমার নয়াদিল উত্তরপাড়ার রেল ব্রিজসংলগ্ন একটি পুকুরে প্রায় ৫ লাখ টাকার পোনা ও ধনারচরের দুটি পুকুরের প্রায় ১২ লাখ টাকার পোনা মাছ পানিতে ভেসে গেছে। পাশাপাশি কাঠগাছ ও কলাগাছ এবং পেঁপেগাছের ক্ষতি হয়েছে।
ছয়গড়িয়া গ্রামের মত্স্যচাষি জয়নাল মিয়া বলেন, পাঁচটি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। সবগুলো পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ছয়ঘড়িয়া গ্রামের আরেক মত্স্যচাষি মো. বাছির মিয়া বলেন, আমিও ১৯টি পুকুরে মাছ চাষ করেছি। ছয়টি পুকুর পানির নিচে চলে গেছে। এতে আমার প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই।
উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিদের তালিকা করছি। ১০৯টি পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। ১ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছি।