বিজয় দাস, প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ করোনা পরবর্তী সময়ে দীর্ঘবিরতির পর বছরের শুরুতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান কার্যক্রম চালু করেছিল ।অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আবারো বন্যাকবলিত নেত্রকোনা জেলায় এক সপ্তাহ ধরে ৮ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্যায় প্লাবিত ও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১০ উপজেলায় এক হাজার ৩১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার কারণে ৮৭২টি বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হয়েছে। এরমধ্যে ৬২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যায় প্লাবিত ও ২৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বারহাট্টা উপজেলাধীন বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নন্দন সরকার জানান,
অনেক বিদ্যালয় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। আবার অনেক বিদ্যালয়ে বন্যাকবলিতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।যার প্রভাব নেতিবাচক পড়বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর।
কলমাকান্দা বাজারের ব্যবসায়ী অভিভাবক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার একছেলে প্রাইমারি স্কুলে পড়ে।বন্যায় তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।বড় মেয়ে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ।বন্যার কারণে সরকার পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়েছেন। আগামী ঈদের পর সে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।করোনার পর বন্যাপ , সামনে কি হয় জানিনা।
নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ ৮৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এতদিন কোভিড ১৯ প্রাদুর্ভাবের সময় স্কুলগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চালু হল। বছরের মাঝামাঝিতে আবার বন্যায় বিদ্যালয় প্লাবিত ও আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য বন্ধ করতে হয়েছে। দীর্ঘ করোনার বিরতির পর প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে প্রোগ্রামও নেওয়া হয়েছিল। সামনে কোরবানি ঈদের বন্ধ হবে।
নেত্রকোনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর জানান, জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদরাসা ও ভকেশনাল পর্যায়ের সব মিলিয়ে ৪১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বন্যার কারণে ১৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে এবং এসব বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬৮ হাজার ৫৬১ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের তালিকা কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।