ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোরকা পরে এসে ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে মিন্টু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
  • ১১৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শেরপুরের শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জেল ধরে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মিন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে। বোরকা পরে মিন্টু মিয়া শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাদের হত্যা করে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুটল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে অভিযুক্ত স্বামী মিন্টু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।

নিহতরা হচ্ছেন- মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও জ্যাঠা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫)।

এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে শ্বশুর মনু মিয়া (৬০), নিহত নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৫২) ও মনু মিয়ার ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (২৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীন, পিবিআই, সিআইডি ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , প্রায় ১৭ বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলার পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয় পাশের গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সঙ্গে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মিন্টু মিয়া কোনো কাজকর্ম  না করায় কিছু দিন আগে থেকে সংসারে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এরই জের ধরে গত পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা বেগম। এরপর মিন্টু মিয়া কয়েকদিন স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিতে শ্বশুরবাড়ি এলেও মনিরা বেগম স্বামীর বাড়ি যাননি।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় মিন্টু মিয়া তার শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে  তার স্ত্রী মনিরা বেগম, শাশুড়ি শেফালী বেগম, শ্বশুর  মনু মিয়া ও জ্যাঠা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজীসহ ৬ জনকে আহত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান স্ত্রী মনিরা বেগম। বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর আরও দুই জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুইজনের লাশ বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি একজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বামী মিন্টু মিয়াকে শুক্রবার ভোর রাতে পুটল গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দা ও ছোড়া উদ্ধার করা হয়েছে। মিন্টু মিয়ার পরিহিত বোরকাটিও উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে নিহত মনিরার ছোট বোন বাদী  হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরকা পরে এসে ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে মিন্টু

আপডেট টাইম : ০৯:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শেরপুরের শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জেল ধরে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মিন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে। বোরকা পরে মিন্টু মিয়া শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাদের হত্যা করে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুটল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে অভিযুক্ত স্বামী মিন্টু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।

নিহতরা হচ্ছেন- মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও জ্যাঠা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫)।

এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে শ্বশুর মনু মিয়া (৬০), নিহত নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৫২) ও মনু মিয়ার ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (২৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীন, পিবিআই, সিআইডি ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , প্রায় ১৭ বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলার পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয় পাশের গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সঙ্গে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মিন্টু মিয়া কোনো কাজকর্ম  না করায় কিছু দিন আগে থেকে সংসারে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এরই জের ধরে গত পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা বেগম। এরপর মিন্টু মিয়া কয়েকদিন স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিতে শ্বশুরবাড়ি এলেও মনিরা বেগম স্বামীর বাড়ি যাননি।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় মিন্টু মিয়া তার শ্বশুরবাড়িতে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে  তার স্ত্রী মনিরা বেগম, শাশুড়ি শেফালী বেগম, শ্বশুর  মনু মিয়া ও জ্যাঠা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজীসহ ৬ জনকে আহত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান স্ত্রী মনিরা বেগম। বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর আরও দুই জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুইজনের লাশ বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি একজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বামী মিন্টু মিয়াকে শুক্রবার ভোর রাতে পুটল গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দা ও ছোড়া উদ্ধার করা হয়েছে। মিন্টু মিয়ার পরিহিত বোরকাটিও উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে নিহত মনিরার ছোট বোন বাদী  হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।