হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে গতি না থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরটিকে রপ্তানিমুখী হিসেবেই ধরা হয়। প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে আড়াই থেকে ৩ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। তবে গত শনিবার ও রোববারের টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রপ্তানি বাণিজ্য। এতে বন্দরে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকার বঞ্চিত হয়েছে অন্তত আড়াই লাখ মার্কিন ডলার অর্জন থেকে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ত্রিপুরা থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে টানা বৃষ্টিতে গত শনিবার (১৮ জুন) ভোরে প্লাবিত হয় আখাউড়া স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকাগুলো। বন্দরের সড়কের পাশে ব্যবসায়ীদের অফিসগুলোও পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রপ্তানি বাণিজ্যে। বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয় পণ্য রপ্তানি। শনিবার ও রোববার ভারতে রপ্তানি হয় মাত্র ৪ ট্রাক মাছ ও সিমেন্ট। দুই দিনে রপ্তানি পণ্যের বেশ কিছু ট্রাক বন্দরে আটকা পড়ে।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন আড়াই থেকে ৩ লাখ ডলার মূল্যের মাছ, রড, সিমেন্ট, তুলা ও প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়। কিন্তু গত শনি ও রোববার পণ্য রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তেমনি সরকার অন্তত আড়াই লাখ ডলার আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সুয়েব ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রাজীব উদ্দিন ভূইয়া জানান, সরকারি ছুটির দিন (শুক্রবার) ছাড়া প্রতিদিন ৪০-৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। যার মূল্য আড়াই থেকে তিন লাখ মার্কিন ডলার। কিন্তু দুই দিন বন্দর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও রোববার ভারতে সরকারি ছুটি হওয়ায় এ দিন তুলনামূলক কম পণ্য রপ্তানি হয়। তবে দুই দিনে বন্দর দিয়ে অন্তত আড়াই লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করা যায়নি। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সরকারও ডলার আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী মো. বাবুল পারভেজ জানান, তিনি মাছসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করেন ভারতে। তবে দুই দিন কয়েক ট্রাক মাছ রপ্তানি করার কথা ছিল। কিন্তু পাহাড়ি ঢল ও বৈরী আবহওয়ার কারণে রপ্তানি করা যায়নি। যেহেতু মাছ দ্রুত পচনশীল পণ্য, সেজন্য রপ্তানি না করতে পারায় কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সুপারিন্টেনডেন্ট মো. সামাউল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ৩০-৪০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হয়েছে।স্বাভাবিকভাবেই বন্দর দিয়ে রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এতে দুই দিনে রাজস্বও কম আদায় হয়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া বলেন, পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি খুবই নাজুক ছিল। মাত্র ৪ ট্রাক মাছ ও সিমেন্ট রপ্তানি হয়েছে শনিবার ও রোববার। ফলে দুই থেকে আড়াই লাখ ডলার মূল্যের কম পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
রপ্তানিমুখী হওয়ায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে খুব একটা পণ্য আমদানি হয় না। শুধুমাত্র শুল্কমুক্ত গম আমদানির মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য সচল ছিল। তবে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গম আমদানিও বন্ধ রয়েছে।