ঢাকা ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ, বন্ধ ৩২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৪:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০২২
  • ১২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামে ৩২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানি বাড়তে থাকায় অনেকেই বাড়ি ঘর ছেড়ে উঁচু সড়ক, বাঁধ ও স্কুলগৃহে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখের বেশি মানুষ।

কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের প্রায় দু’শতাধিক চর গ্রামের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী থাকলেও স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সূত্রমতে ৩৫ হাজার পরিবারের প্রায় দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সেতু পয়েন্ট ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানি বেড়ে বিদ্যালয় গৃহ, মাঠ ও আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে কুড়িগ্রাম জেলায় ২৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩১টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি চাল ছুঁই ছুঁই করছে। চারিদিকে বাড়ি ঘর ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার নৌকায় করে আশ্রয় নিয়েছে স্কুল বারান্দার চালের নিচে। ডুবেছে চর পার্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানেও আশ্রয় নিয়েছে কয়েকটি বানভাসী পরিবার।

আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র হারুন মিয়া  বলেন, ১০ দিন ধইরা স্কুলে পানি। বাড়িতেও ঘরের ভিতর পানি, নৌকায় আশ্রয় নিয়া আছি। লেখা-পড়া বন্ধ হইয়া গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, বন্যার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জেলায় বিদ্যালয়ের মাঠ ও আশপাশের এলাকায় পানি ওঠায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে মোট ২৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতিদিনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩৩৮ মেট্রিকটন চাল, সাড়ে ১৬ লাখ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়াও ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য ক্রয় করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ভান্ডারে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা এবং ৪০৭ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। আরও ৫০০ মেট্রিকটন চাল ও ২০ লাখ টাকার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কুড়িগ্রামে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ, বন্ধ ৩২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আপডেট টাইম : ১০:৪৪:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামে ৩২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানি বাড়তে থাকায় অনেকেই বাড়ি ঘর ছেড়ে উঁচু সড়ক, বাঁধ ও স্কুলগৃহে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখের বেশি মানুষ।

কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের প্রায় দু’শতাধিক চর গ্রামের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী থাকলেও স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সূত্রমতে ৩৫ হাজার পরিবারের প্রায় দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সেতু পয়েন্ট ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানি বেড়ে বিদ্যালয় গৃহ, মাঠ ও আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে কুড়িগ্রাম জেলায় ২৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩১টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি চাল ছুঁই ছুঁই করছে। চারিদিকে বাড়ি ঘর ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার নৌকায় করে আশ্রয় নিয়েছে স্কুল বারান্দার চালের নিচে। ডুবেছে চর পার্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানেও আশ্রয় নিয়েছে কয়েকটি বানভাসী পরিবার।

আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র হারুন মিয়া  বলেন, ১০ দিন ধইরা স্কুলে পানি। বাড়িতেও ঘরের ভিতর পানি, নৌকায় আশ্রয় নিয়া আছি। লেখা-পড়া বন্ধ হইয়া গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, বন্যার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জেলায় বিদ্যালয়ের মাঠ ও আশপাশের এলাকায় পানি ওঠায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে মোট ২৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতিদিনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৩৩৮ মেট্রিকটন চাল, সাড়ে ১৬ লাখ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়াও ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য ক্রয় করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ভান্ডারে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা এবং ৪০৭ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। আরও ৫০০ মেট্রিকটন চাল ও ২০ লাখ টাকার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।