হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাঁচ দিনের বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা। মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে বানের ঢলে। গ্রামে গ্রামে পাকা ঘর ছাড়া কাঁচা কোনো ঘরের অস্তিত্ব নেই।
আশ্রয়হীন হয়েও সেদিকে খেয়াল নেই বানভাসিদের। কারণ, এক বেলা খাবারের আশায় ছুটোছুটি করছেন তারা সারাদিন। হেলিকপ্টারের পাখার শব্দ কানে এলেই ছুটছেন সেদিকে। ত্রাণের জন্য চলছে হাহাকার।
এদিকে নলকূপ সব তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বানের পানি পান করেই কাটছে বানভাসিদের জীবন।
বন্যাদুর্গতদের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
বানভাসিদের মুখে খাবার তুলে দিতে ব্যাপক পরিমাণ ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে এ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। সাথে ওষুধপত্র ও বিশুদ্ধ পানিও সরবরাহ করছেন তারা। বন্যায় আক্রান্ত শিশুদের খাদ্র-সামগ্রীও পাঠাচ্ছে এ ফাউন্ডেশন।
এছাড়াও বন্যকবলিত অঞ্চলের গরু-ছাগলের জন্য খাবারও পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা।
ফাউন্ডেশনের কর্ণধার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২০০ মেট্রিকটন খাবার আমরা সিলেট-সুনামগঞ্জে পৌঁছে দিয়েছি। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এ ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। কারণ যে কোনো দুর্যোগে সেনাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতা, দ্রুততা ও সফলতার সঙ্গে কাজ করে। সঠিকভাবে ও দুর্গম সব এলাকায় যেন আমাদের এই ত্রাণ পৌঁছে যায় সেই লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছি আমরা। আগামী আরও এক সপ্তাহ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করব আমরা। এর পর চলবে পুনর্বাসনের কাজ।’
এবার ত্রাণ-সামগ্রীর সঙ্গে এক ট্রাক গরুর খাদ্য যাচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
কি পরিমাণ সহায়তা করা হয়েছে প্রশ্নে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের অন্যতম কর্মকর্তা আবুল কাসেম আদিল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২০ টন চিড়া, আড়াই টন চিনি, ৩০ টন খেজুর, ১ টন শিশুখাদ্য (গুঁড়ো দুধ), ১০ হাজার মোমবাতি, ৩০ হাজার লিটার মিনারেল ওয়াটার এবং বিভিন্ন পদের ১৮ হাজার পিস ওষুধ ইত্যাদি ত্রাণ সিলেটে পৌঁছে দিয়েছি আমরা। আরও ৫ টন ছাতু এবং ১ ট্রাক গরুর খাদ্য (ভূসি) বিতরণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।’
এছাড়াও ২০ হাজার পরিবারের জন্য চাল, ডাল, তেল, লবন, খেজুর ও সাবান ইত্যাদি প্যাকেজিংয়ের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
বুধ ও বৃহস্পতিাবার এসব ত্রাণ বন্যাকবলিত এলাকায় পৌঁছে যাবে।
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের অফিসে মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক স্বেচ্ছাসেবী চাল, ডাল, গুঁড়োদুধ, খেজুরসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী প্যাকেট করছেন। কাঁধে বহন করে ট্রাকে তুলছেন। এসব স্বেচ্ছাসেবীরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী।
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ও শায়েখ আহমাদুল্লাহের ফেসবুক পেজে পোস্ট দেখে সপ্রণোদিত এখানে এসে কাজ করছেন বলেন জানালেন তারা।