হাওর বার্তা ডেস্কঃ টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ছাড়িয়ে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছায় তলিয়ে গেছে জেলার প্রধান প্রধান সড়ক। বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বন্দি লাখ লাখ মানুষ। এর মধ্যে বেশি বিপর্যয়ের মুখে সিলেট সদর ও কোম্পানিগঞ্জের বাসিন্দারা। ক্রমাগত পানি বাড়ায় উদ্ধার পেতে হাহাকার করছেন তারা।
শনিবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে, অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
বুধবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা থেকে সিলেট নগরীতে সুরমা নদীর পানি প্রবেশ শুরু করতে শুরু করে। একদিন পর নগরীর কয়েকটি স্থানে নদীর তীর উপচে পানি ঢুকে পড়ে। এতে আচমকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নগরীর নিম্নাঞ্চলের মানুষ। বাসা-বাড়ির পানির রিজার্ভ ট্যাংক বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য নগরীতে ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সিটি কর্পোরেশন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে যথাক্রমে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর পানি। কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আমলসীদ, শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টেও অব্যাহত রয়েছে পানি বৃদ্ধি। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অব্যাহত রয়েছে লোভা ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি।
সারি ও পিয়াইন নদীর পানি বেড়ে জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। দ্বিতীয় দফা বন্যায় দিনমজুর ও খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষের ঘরে ঘরে চলছে হাহাকার। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার সবকিছু তলিয়ে গেছে। উপজেলার সব সড়ক ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে গোয়াইনঘাটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
কোম্পানীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। ধলাই নদীর পানি উপচে পড়ায় পুরো উপজেলা বন্যা কবলে পড়েছে। এক মাস আগের বন্যার পানি সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কেনা উঠলেও এবার তা তলিয়ে গেছে। যার ফলে জেলা সদরের সঙ্গে কোম্পানিগঞ্জের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন বলা চলে।
জৈন্তাপুর উপজেলায়ও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সিলেট-তামাবিল সড়ক ছাড়া বাকি সব সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। সারি ও পিয়াইন নদীর পানি বাড়ায় উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া সুরমা ও লোভা নদীর পানি বাড়ায় কানাইঘাট উপজেলায়ও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।