ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান আ.লীগের রাজনীতি করা নিয়ে যা বললেন মান্না দোসরদের গ্রেফতার করা না গেলে মুক্তি পাবে না পুরান ঢাকার সাধারণ মানুষ সেলিমের চেয়েও ভয়ঙ্কর দুই পুত্র সোলায়মান ও ইরফান বাতাসে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি, ঢাকার অবস্থা কি শাকিবের ‘দরদ’ নিয়ে যা বললেন অপু বিশ্বাস ‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত’ ভারতীয় ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার আইপিএল নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় ১২ বাংলাদেশি ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার: প্রধান উপদেষ্টা আজিমপুরে ডাকাতির সময় অপহৃত সেই শিশু উদ্ধার

শখের বশে ড্রাগন চাষ, এখন পথ দেখাচ্ছেন অন্যদের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২
  • ১২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রাম। এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। জমিতে ধান ও সবজির পাশাপাশি কেউ কেউ জড়িয়েছেন সূর্যমুখী চাষে। তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম মোহাম্মদ আলী আজ্জম সরকার। তিনি হেঁটেছেন ভিন্ন পথে। ইউটিউব দেখে শখের বশে চাষ করছেন ড্রাগন ফলের। এখানেই শেষ নয়, আলী আজ্জমের ড্রাগন পথ দেখাচ্ছে অন্যদের। তার দেখাদেখি ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেছেন অনেকে।

সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী আজ্জম সরকারের ফলের বাগান ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে ঝুলছে তিন থেকে চারটি কাঁচা-আধা পাকা ড্রাগন ফল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষপদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। বাগানে কথা হয় মোহাম্মদ আলি আজ্জম সরকারের সঙ্গে। কথা বলে জানা যায়, ইব্রাহিমপুর গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তি প্রায় ৬ বিঘা জমির পুরো জায়গাজুড়ে তিনি ২০২১ সালে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। তার এই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ করেন তার দুই ভাই আবুল হোসেন সরকার এবং মিজানুর রহমান সরকার। ৮০০ খুঁটিতে তিনি প্রায় ৩২০০ চাড়া রোপণ করেন।

চারা রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মাথায় গাছে ফল আসে। সম্প্রতি তার বাগান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারছেন। প্রতিটি গাছে তিন থেকে চারটি ফল ধরেছে। একটি গাছ পরিপক্ক হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। পরিপক্ব গাছে ২৫ থেকে ৩০টি ড্রাগন ফল ধরে। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি ড্রাগন ফলের চাষ আরও বাড়াচ্ছেন। বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদাও অনেক। নবীনগর পৌর এলাকার একাধিক চাষি ড্রাগন চাষে নেমেছেন।

তারা জানান, ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি ব্যাংক অথবা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ড্রাগন চাষের বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে অন্য চাষিরা ড্রাগন চাষে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার বলেন, ড্রাগন দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেওয়া লতানো ক্যাকটাস গাছের ফল। বর্তমানে থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী। চার প্রকারের ড্রাগনের মধ্যে বাণিজ্যিক চাষের জন্য বাউড্রাগন-১ (সাদা) ও বাউড্রাগন-২ (লাল) উপযোগী। আমাদের নবীনগর উপজেলার ইব্রাহীমপুর, পৌরসভা, শ্যামগ্রাম, রছুল্লাবাদ, বড়াইলসহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কৃষক প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে এই বছর ড্রাগন চাষ করেছে। আমার ধারণা প্রায় দুই কোটি টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি হবে এ বছর। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যারা এই চাষে আগ্রহী তাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।

তিনি আরও বলেন, সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। ১২-১৮ মাস বয়সী একটি গাছে ৫-২০টি ফল ধরে। পরিপক্ক একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়। ছাদবাগানের টবেও ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান

শখের বশে ড্রাগন চাষ, এখন পথ দেখাচ্ছেন অন্যদের

আপডেট টাইম : ০৭:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রাম। এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। জমিতে ধান ও সবজির পাশাপাশি কেউ কেউ জড়িয়েছেন সূর্যমুখী চাষে। তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম মোহাম্মদ আলী আজ্জম সরকার। তিনি হেঁটেছেন ভিন্ন পথে। ইউটিউব দেখে শখের বশে চাষ করছেন ড্রাগন ফলের। এখানেই শেষ নয়, আলী আজ্জমের ড্রাগন পথ দেখাচ্ছে অন্যদের। তার দেখাদেখি ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেছেন অনেকে।

সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী আজ্জম সরকারের ফলের বাগান ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে ঝুলছে তিন থেকে চারটি কাঁচা-আধা পাকা ড্রাগন ফল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষপদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। বাগানে কথা হয় মোহাম্মদ আলি আজ্জম সরকারের সঙ্গে। কথা বলে জানা যায়, ইব্রাহিমপুর গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তি প্রায় ৬ বিঘা জমির পুরো জায়গাজুড়ে তিনি ২০২১ সালে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। তার এই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ করেন তার দুই ভাই আবুল হোসেন সরকার এবং মিজানুর রহমান সরকার। ৮০০ খুঁটিতে তিনি প্রায় ৩২০০ চাড়া রোপণ করেন।

চারা রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মাথায় গাছে ফল আসে। সম্প্রতি তার বাগান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারছেন। প্রতিটি গাছে তিন থেকে চারটি ফল ধরেছে। একটি গাছ পরিপক্ক হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। পরিপক্ব গাছে ২৫ থেকে ৩০টি ড্রাগন ফল ধরে। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি ড্রাগন ফলের চাষ আরও বাড়াচ্ছেন। বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদাও অনেক। নবীনগর পৌর এলাকার একাধিক চাষি ড্রাগন চাষে নেমেছেন।

তারা জানান, ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি ব্যাংক অথবা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ড্রাগন চাষের বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে অন্য চাষিরা ড্রাগন চাষে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার বলেন, ড্রাগন দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেওয়া লতানো ক্যাকটাস গাছের ফল। বর্তমানে থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী। চার প্রকারের ড্রাগনের মধ্যে বাণিজ্যিক চাষের জন্য বাউড্রাগন-১ (সাদা) ও বাউড্রাগন-২ (লাল) উপযোগী। আমাদের নবীনগর উপজেলার ইব্রাহীমপুর, পৌরসভা, শ্যামগ্রাম, রছুল্লাবাদ, বড়াইলসহ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কৃষক প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে এই বছর ড্রাগন চাষ করেছে। আমার ধারণা প্রায় দুই কোটি টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি হবে এ বছর। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যারা এই চাষে আগ্রহী তাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।

তিনি আরও বলেন, সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। ১২-১৮ মাস বয়সী একটি গাছে ৫-২০টি ফল ধরে। পরিপক্ক একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়। ছাদবাগানের টবেও ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়।