ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঁশের সাঁকো ভেঙে নদীতে সুন্দরগঞ্জবাসীর চরম ভোগান্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২
  • ১৩৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে খোর্দ্দা গ্রামে বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি বৃষ্টির পানির স্রোতে ও কচুরি পানার চাপে ভেঙে ভেসে গেছে। এতে দু’পাড়ের মানুষ পারাপার হতে না পেরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। জরুরি প্রয়োজনে দু’পাড়ের মানুষ নৌকায় পারাপার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২২ বছর থেকে ওই স্থানে এলাকাবাসি স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হতেন। খোর্দ্দা ও লাটশালার চরে বেক্সিমকো কোম্পানির নির্মাণাধীন পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও যাতায়াত করতেন এ সাঁকো দিয়ে। এমতাবস্থায় চার বছর আগে পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের নিজস্ব অর্থায়নে খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রামে ২.৫ কিলোমিটার রাস্তা ও বুড়াইল নদীর ওপর বাঁশের সাঁকোর স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।

এরপর সুন্দরগঞ্জ থেকে পাওয়ার প্লান্ট যাতায়াত পথ সুগম হয়। ছোট-খাটো যানবাহনে মালামাল ও কৃষিপণ্য পরিবহন করা যেত এ সাঁকো দিয়ে। যোগাযোগের পথ সুগম হওয়ায় চরাঞ্চলবাসির জীবন যাত্রার মানও বেড়ে যায়। কিন্তু গত দুই বছর আগে কাঠের সাঁকোটি ভেঙে গেলে পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষ আর মেরামত না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আবারও বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করতে থাকে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ, পানির স্রোত ও কচুরি পানার চাপে গত ২৫ মে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের তাম্বুলপুর ছড়া নদী সংযোগ বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি ভেঙে ভেসে যায়। এতে পারাপার হতে না পেরে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। চরাঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবন যাত্রার ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারিভাবে সেতু নির্মাণ করা জরুরি।
এ সাঁকোর পূর্ব ও উত্তর পাড়ে খোর্দ্দাচর ও লাটশালারচর গ্রাম। এ দুই গ্রামের মানুষ সপ্তাহের শনি ও বুধবার উপজেলার সর্ববৃহৎ মীরগঞ্জহাটসহ প্রতিদিন বেচা-কেনাসহ বিভিন্ন কাজে এ সাঁকো দিয়েই পারাপার হতেন। এছাড়া প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকরাও যাতায়াত করেন এ সাঁকো দিয়েই। কিন্তু সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। খোর্দ্দারচরের স্কুলের বাজার ও লাটশালার চরের নতুন বাজারের ব্যবসায়ীরাও মালামাল পরিবহন করতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে। খোর্দ্দা ও লাটশালার পূর্ব পাশে তিস্তা নদী। তিস্তা নদীর আসান খেয়াঘাট দিয়েই পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার লোকজনও এ সাঁকো দিয়েই পারাপার হয়ে রংপুর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। তারাও পড়েছেন বিপাকে। বুড়াইল নদীর দুই পাড়ের প্রায় ২৫/৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

খোর্দ্দার চরের বাসিন্দা আ. রাজ্জাক বলেন, সাঁকোটি জরুরি ভিত্তিতে পুনঃমেরামত করা দরকার। ঝুঁকি নিয়েই সাঁতার দিয়ে পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসি। আর্থিক সংকটে এলাকাবাসি পুনঃ মেরামত করতে পারছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, সেতু ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে মেরামত করতে বলেছি। জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর) গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য এলজিইডিতে তালিকা দিয়েছি। সেখানে সেতু নির্মাণ করা হবে। তার আগে জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাঁশের সাঁকোটি অতি দ্রুত নির্মাণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বাঁশের সাঁকো ভেঙে নদীতে সুন্দরগঞ্জবাসীর চরম ভোগান্তি

আপডেট টাইম : ১০:০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে খোর্দ্দা গ্রামে বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি বৃষ্টির পানির স্রোতে ও কচুরি পানার চাপে ভেঙে ভেসে গেছে। এতে দু’পাড়ের মানুষ পারাপার হতে না পেরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। জরুরি প্রয়োজনে দু’পাড়ের মানুষ নৌকায় পারাপার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২২ বছর থেকে ওই স্থানে এলাকাবাসি স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হতেন। খোর্দ্দা ও লাটশালার চরে বেক্সিমকো কোম্পানির নির্মাণাধীন পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও যাতায়াত করতেন এ সাঁকো দিয়ে। এমতাবস্থায় চার বছর আগে পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের নিজস্ব অর্থায়নে খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রামে ২.৫ কিলোমিটার রাস্তা ও বুড়াইল নদীর ওপর বাঁশের সাঁকোর স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।

এরপর সুন্দরগঞ্জ থেকে পাওয়ার প্লান্ট যাতায়াত পথ সুগম হয়। ছোট-খাটো যানবাহনে মালামাল ও কৃষিপণ্য পরিবহন করা যেত এ সাঁকো দিয়ে। যোগাযোগের পথ সুগম হওয়ায় চরাঞ্চলবাসির জীবন যাত্রার মানও বেড়ে যায়। কিন্তু গত দুই বছর আগে কাঠের সাঁকোটি ভেঙে গেলে পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষ আর মেরামত না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আবারও বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করতে থাকে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ, পানির স্রোত ও কচুরি পানার চাপে গত ২৫ মে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের তাম্বুলপুর ছড়া নদী সংযোগ বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি ভেঙে ভেসে যায়। এতে পারাপার হতে না পেরে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। চরাঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবন যাত্রার ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারিভাবে সেতু নির্মাণ করা জরুরি।
এ সাঁকোর পূর্ব ও উত্তর পাড়ে খোর্দ্দাচর ও লাটশালারচর গ্রাম। এ দুই গ্রামের মানুষ সপ্তাহের শনি ও বুধবার উপজেলার সর্ববৃহৎ মীরগঞ্জহাটসহ প্রতিদিন বেচা-কেনাসহ বিভিন্ন কাজে এ সাঁকো দিয়েই পারাপার হতেন। এছাড়া প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকরাও যাতায়াত করেন এ সাঁকো দিয়েই। কিন্তু সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। খোর্দ্দারচরের স্কুলের বাজার ও লাটশালার চরের নতুন বাজারের ব্যবসায়ীরাও মালামাল পরিবহন করতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে। খোর্দ্দা ও লাটশালার পূর্ব পাশে তিস্তা নদী। তিস্তা নদীর আসান খেয়াঘাট দিয়েই পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার লোকজনও এ সাঁকো দিয়েই পারাপার হয়ে রংপুর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। তারাও পড়েছেন বিপাকে। বুড়াইল নদীর দুই পাড়ের প্রায় ২৫/৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

খোর্দ্দার চরের বাসিন্দা আ. রাজ্জাক বলেন, সাঁকোটি জরুরি ভিত্তিতে পুনঃমেরামত করা দরকার। ঝুঁকি নিয়েই সাঁতার দিয়ে পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসি। আর্থিক সংকটে এলাকাবাসি পুনঃ মেরামত করতে পারছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, সেতু ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে মেরামত করতে বলেছি। জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর) গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য এলজিইডিতে তালিকা দিয়েছি। সেখানে সেতু নির্মাণ করা হবে। তার আগে জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাঁশের সাঁকোটি অতি দ্রুত নির্মাণ করা হবে।