অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আলমাস হোসেন। শুক্রবার ছুটির দিন একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠে বাইরে হাঁটতে বের হন। বাইরে বের হওয়ার সময় সাত বছরের নাতি রেহানের আবদার, তাকেও সঙ্গে নিতে হবে। বাইরে প্রচণ্ড রোদ এই অজুহাত এড়িয়ে যেতে চাইলেও কান্নাকাটি জুড়ে দেয়ায় শেষ পর্যন্ত সাথে নিতে বাধ্য হন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেরিয়ে আজিমপুরের বাসা থেকে হাঁটতে হাঁটতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে চলে আসেন। মাথার ওপর প্রখর রোদের তাপ। আলমাস হোসেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদির দিকে তাকিয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়ান।
মূল বেদির দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে তিনি বলেন, রেহান দেখ্ দেখ্, শহীদ মিনার এলাকাটি কেমন কমলা রংয়ের হয়ে গেছে। ছোট্ট রেহান ঠিক বুঝে উঠতে না পারলেও দাদার কথায় মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।
আলমাস হোসেন বলেন, গরমে সিদ্ধ হলেও বেদি সংলগ্ন গাছে লাল আগুনের মতো ফুটে থাকা কৃষচূড়া ফুলের সৌন্দর্য দেখে মনপ্রাণ জুড়িয়ে গেল। গাছের ওপর রোদ পড়ায় মূল বেদির আশেপাশে কেমন কমলা রংয়ের হয়ে গেছে। প্রচণ্ড তাপ থাকলেও মৃদু বাতাসও বয়ে যাচ্ছিল। মিনিট দশেক আশেপাশের বড় বড় সবুজ গাছ পালা দেখে আবার নাতিকে নিয়ে হাঁটতে লাগলেন তিনি।
শহীদ মিনারের পূর্ব দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ভবনের দিকে যেতেই দেখ্ দেখ্ বলে নাতির ছোট্ট হাতটা এক প্রকার খামছে ধরলেন। নাম জানা ও অজানা কত রংয়ের ফুলই না ফুটে আছে চৌহদ্দিতে। লাল, হলুদ, নীল, গোলাপি, সাদাসহ নানা বাহারি রংয়ের ফুলের সৌন্দর্য শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী নয়, এ পথে যাতায়াতকারি সকলের দৃষ্টি আর্কষণ করে। শুধু ফুল-ই নয়, গাছে গাছে মেলে থাকা সবুজ পাতা দু’চোখে স্বস্তি এনে দেয়।
শুধু কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কিম্বা গণিত ভবনে নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা উদ্যান, হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে এখন সবুজ গাছপালা ও নানা রংয়ের ফুলের ছড়াছড়ি।
পহেলা বৈশাখের পর থেকে বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র তাপদাহে নগরবাসির নাভিশ্বাস উঠছে। কিন্তু এর মাঝেও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সবুজ প্রকৃতি, গাছপালা ও নানা রংয়ের ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য সর্বশ্রেণির মানুষকে বিমোহিত করছে।