যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা কাউন্সিলর থমাস এ শ্যানন দু’দিনের সফরে আগামীকাল ঢাকা আসছেন।
আগামী বছরের প্রথম দিকে রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ওয়েন্ডি শারম্যানের স্থলাভিষিক্ত হবেন শ্যানন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হবেন শ্যানন। এর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করছেন শ্যানন।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানপ্রিট সিং আনন্দও তাদের সঙ্গে ঢাকা আসছেন।
তবে মার্কিন সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা নিশা দেশাই ও থমাস শ্যাননের একসঙ্গে বাংলাদেশ সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। কারণ তারা এমন এক সময় বাংলাদেশে আসছেন, যখন বাংলাদেশ আইএস-এর হুমকির মুখে রয়েছে।
সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, শ্রমিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। এ সময় নিরাপত্তা ইস্যু, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদ দমন, উন্নয়ন, পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের ধারাবাহিক সতর্কবার্তা জারি, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি নাগরিক হত্যা ও শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং সিরিয়া-ইরাকভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের দায় স্বীকারের মধ্যেই সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই দুই শীর্ষ ব্যক্তি। আবার এসব সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে আইএসের যোগসূত্রের সত্যতা নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে মতভিন্নতাও রয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধার ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না করায় এই মনমালিন্য আরো বেড়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও এসব ব্যাপারে প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে।
উভয় দেশের মধ্যে এই টানাপড়েনের মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এই দুই কর্মকর্তার ঢাকা সফর নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে নানা গুঞ্জন চলছে।
বাংলাদেশ সফর শেষে আগামী সোমবার তারা ঢাকা থেকে সরাসরি শ্রীলঙ্কা যাবেন।