হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বান্দরবানে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। ফলে জেলা সদর হাসপাতালে রোগীর চাপও বেড়েছে। বেড খালি না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বান্দরবান সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি মার্চ মাসের ১৪ দিনে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২৫ জন ও ডায়রিয়া আক্রান্ত ২৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এ ৪৭ জনের মধ্যে ১৩ জন শিশু এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে এ রোগের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে অনেকেই।
সোমবার (১৪ মার্চ) বান্দরবান সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ওয়ার্ডে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ওয়ার্ডে কোনো বেড খালি নেই। তাই বেড না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছে কয়েকজন শিশু। এদের মধ্যে কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউবা কাতরাচ্ছে।
৯ মাস বয়সী ডায়রিয়া আক্রান্ত সাঞ্জিদের নানি হোস্নেয়ারা বেগম বলেন, ‘গত পাঁচদিন ধরে সাঞ্জিদের ডায়রিয়া হচ্ছিল। বাইরে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়েছিল। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে না আশায় রোববার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। এখন কিছুটা ভালো বোধ করছে সে।’
দেড় বছর বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিরিনের মা জোবাইদা আক্তার বলেন, ‘কিছু দিন আগে মেয়ের হালকা জ্বর ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। বাইরে ডাক্তার দেখিয়েছি। সুস্থ না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। মেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ।’
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর (২০২১ সালে) জেলায় শিশু ও বয়স্ক মিলে সর্বমোট ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে থানচি একজন ও আলীকদমে ছয় জন এ রোগে মারা যান।
এছাড়া চলতি বছরের গত দুই মাসে জেলায় সর্বমোট ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৩১ জন। পরিসংখ্যানে সব থেকে বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত উপজেলা হলো নাক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম।
২০২১ সালের ১০ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫৬ জন।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী (ডিজিও) বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে বেশিরভাগ শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই এ সময়টাতে পরিবারের পক্ষ থেকে শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হতে। বাচ্চারা যাতে ধুলাবালু, ঠাণ্ডা বা অতিরিক্ত গরম না লাগায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’