ঢাকা ১০:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বন্ধু মৃত্যুশয্যায়, কিডনি দিতে চান হাসলু মুহাম্মদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২
  • ১২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছর খানেক আগে দুই কিডনি নষ্ট হতে শুরু করে বন্ধু অচিন্ত্য বিশ্বাসের। পেশায় ঋণদান সংস্থার এজেন্ট অচিন্ত্য বিশ্বাস। মাসখানেক আগে চিকিৎসকরা তাকে জানান, বাঁচতে হলে দ্রুত কারো কাছ থেকে একটি কিডনি নিতে হবে।

চিকিৎসকের পরামর্শের বিষয়টি জানতে পেরে এগিয়ে আসেন হাসলু মুহাম্মদ।

 বছর ছয়েক আগে কর্মসূত্রে বন্ধুত্ব হয় দাঁদের মধ্যে। গ্রাম্য হাটের ব্যবসায়ী হাসলুর (৩১) রক্তের গ্রুপও মিলে যায় বন্ধুর সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত অচিন্ত্যকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে নিজের একটি কিডনি দেওয়ার আবেদন করেছেন হাসলু।

ভারতের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢেলপির এলাকার বাসিন্দা হাসলু। অচিন্ত্যর বাড়ি একই জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুনোরে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কেউ স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে স্বেচ্ছায় কিডনি দেওয়ার জন্য আবেদন করলে, দাতা টাকার বিনিময়ে কিডনি দিতে চাইছেন কি না, সেই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে।

রায়গঞ্জ জেলা পুলিশের দাবি, হাসলু বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে কিডনি দিতে চান বলে তদন্তে জানা গেছে। ফলে তাঁর কিডনি দিতে আইনি কোনো বাধা নেই। দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সানা আখতার বলেন, হাসলু ও অচিন্ত্যর বন্ধুত্ব সম্প্রীতির দৃষ্টান্তমূলক নজির তৈরি করবে।

হাসলুর স্ত্রী মনোয়ারা গৃহবধূ। তাঁদের সাত ও পাঁচ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৮ বছর বয়সী অচিন্ত্যর ডায়ালিসিস চলছে। তাঁর স্ত্রী রিতা গৃহবধূ। তাঁদের আট বছরের এক ছেলে রয়েছে।

বছর ছয়েক আগে কালিয়াগঞ্জের ওই ঋণদানকারী সংস্থায় এজেন্টের কাজে যোগ দেন হাসলু। তখন থেকেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। হাসলু বলেন, অচিন্ত্যকে একটি কিডনি দিলে মরব না। বরং আমার একটি কিডনি পেলে অচিন্ত্য প্রাণে বেঁচে যাবে। তার পরিবার ভেসে যাবে না। তাই জাতপাত দূরে সরিয়ে বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে আমি মাসখানেক আগে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে তাকে কিডনি দেওয়ার আবেদন করেছি।

অচিন্ত্য বলেন, হাসলু আমাকে বাঁচাতে বিনা স্বার্থে তাঁর একটি কিডনি দিতে চেয়েছে। তাঁর কাছে আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।

হাসলুর বাবা পেশায় চায়ের দোকানি। তিনি বলেছেন, আমার ছেলে মানুষকে বাঁচাতে মনুষ্যত্বের ধর্ম পালন করছে।
সূত্র: আনন্দবাজার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বন্ধু মৃত্যুশয্যায়, কিডনি দিতে চান হাসলু মুহাম্মদ

আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছর খানেক আগে দুই কিডনি নষ্ট হতে শুরু করে বন্ধু অচিন্ত্য বিশ্বাসের। পেশায় ঋণদান সংস্থার এজেন্ট অচিন্ত্য বিশ্বাস। মাসখানেক আগে চিকিৎসকরা তাকে জানান, বাঁচতে হলে দ্রুত কারো কাছ থেকে একটি কিডনি নিতে হবে।

চিকিৎসকের পরামর্শের বিষয়টি জানতে পেরে এগিয়ে আসেন হাসলু মুহাম্মদ।

 বছর ছয়েক আগে কর্মসূত্রে বন্ধুত্ব হয় দাঁদের মধ্যে। গ্রাম্য হাটের ব্যবসায়ী হাসলুর (৩১) রক্তের গ্রুপও মিলে যায় বন্ধুর সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত অচিন্ত্যকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে নিজের একটি কিডনি দেওয়ার আবেদন করেছেন হাসলু।

ভারতের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢেলপির এলাকার বাসিন্দা হাসলু। অচিন্ত্যর বাড়ি একই জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুনোরে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কেউ স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে স্বেচ্ছায় কিডনি দেওয়ার জন্য আবেদন করলে, দাতা টাকার বিনিময়ে কিডনি দিতে চাইছেন কি না, সেই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে।

রায়গঞ্জ জেলা পুলিশের দাবি, হাসলু বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে কিডনি দিতে চান বলে তদন্তে জানা গেছে। ফলে তাঁর কিডনি দিতে আইনি কোনো বাধা নেই। দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সানা আখতার বলেন, হাসলু ও অচিন্ত্যর বন্ধুত্ব সম্প্রীতির দৃষ্টান্তমূলক নজির তৈরি করবে।

হাসলুর স্ত্রী মনোয়ারা গৃহবধূ। তাঁদের সাত ও পাঁচ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৮ বছর বয়সী অচিন্ত্যর ডায়ালিসিস চলছে। তাঁর স্ত্রী রিতা গৃহবধূ। তাঁদের আট বছরের এক ছেলে রয়েছে।

বছর ছয়েক আগে কালিয়াগঞ্জের ওই ঋণদানকারী সংস্থায় এজেন্টের কাজে যোগ দেন হাসলু। তখন থেকেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। হাসলু বলেন, অচিন্ত্যকে একটি কিডনি দিলে মরব না। বরং আমার একটি কিডনি পেলে অচিন্ত্য প্রাণে বেঁচে যাবে। তার পরিবার ভেসে যাবে না। তাই জাতপাত দূরে সরিয়ে বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে আমি মাসখানেক আগে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে তাকে কিডনি দেওয়ার আবেদন করেছি।

অচিন্ত্য বলেন, হাসলু আমাকে বাঁচাতে বিনা স্বার্থে তাঁর একটি কিডনি দিতে চেয়েছে। তাঁর কাছে আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।

হাসলুর বাবা পেশায় চায়ের দোকানি। তিনি বলেছেন, আমার ছেলে মানুষকে বাঁচাতে মনুষ্যত্বের ধর্ম পালন করছে।
সূত্র: আনন্দবাজার।