হাওর বার্তা ডেস্কঃ খুলনার দিঘলিয়ায় জেলেদের জালে আটকা পড়ে ভারতের গবেষণা কাজে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কচ্ছপটি উদ্ধার করে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যান বন কর্মকর্তারা।
তিনি আরও বলেন, এসব প্রাণী প্রকৃতির ইকোসিস্টেম রক্ষা করে থাকে। এর বিলুপ্তি ও অনুপস্থিতে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে থাকে। তাই প্রকৃতির ভারসাম্য ও বিলুপ্ত এ কচ্ছপ সংরক্ষণ এবং প্রজননে সরকারি প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তর এলাকায় প্রকল্প করা হলে তা আরও ফলপ্রসূ হবে। কারণ এগুলো নদী-সাগর ও সুন্দরবনে ছাড়া থাকলে বা অবমুক্ত করলে তা জেলেদের জালে আটকে পড়ে। পরে তারা সেগুলো বাণিজ্যিক ও খাওয়ার জন্য লালন পালন করে থাকে। তাই অবশেষ বিলুপ্তি ঠেকাতে প্রশাসন এরিয়ায় এর প্রকল্প গড়ে তোলা জরুরি।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গড়ে ওঠা বাটাগুরবাস্কা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আ. রব জাগো নিউজকে বলেন, মূলত বিলুপ্ত প্রজাতির এ বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের গতি ও আচরণবিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্যাভ্যাস এবং প্রজনন সম্পর্কে জানতে ভারতের টাইগার প্রজেক্ট গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সে দেশের সজনেখালী এলাকার কুলতলীতে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো ১০টি পুরুষ কচ্ছপ অবমুক্ত করে। এর ১১দিনের মাথায় সেটি নদী-সাগর হয়ে এদেশের খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাটে চলে আসে। ভারতের এ ধরণের আরও একটি কচ্ছপ পূর্ব সুন্দরবনের বলেশ্বর ও সাউথখালীর নদীতে বিচরণ করছে। ভারতের টাইগার প্রজেক্টে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সমৃদ্ধ ১০ বাটাগুরবাস্কার পাশাপাশি ২০০ কচ্ছপ গবেষণায় সংগৃহীত রয়েছে।
আ. রব বলেন, বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ, প্রজনন, গতি ও আচরণ বিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, পানিতে ডুবে ও ভেসে থাকার সময় নির্ণয়সহ নানা কার্যক্রম জানতে বাংলাদেশ বনবিভাগ, অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কাজ করছে। পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এ প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৮ সালে প্রকল্পের কাজ চালু হয়। ২০১৮, ১৯ ও ২০ সালে দফায় দফায় ১৫টি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সমৃদ্ধ কচ্ছপ সুন্দরবন ও সাগর মোহনায় অবমুক্ত করা হয়। কচ্ছপের পিঠে বসানো স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা এক বছরের। এরপর এমনিতেই এটি খসে পড়ে যায়। এক বছরেই এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। আর এসে সংগ্রহ করে থাকেন অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা ও আমেরিকার টিএসএর গবেষকেরা।
তবে এ প্রজেক্টে ব্যাপক সফলতা এসেছে বলেও জানান তিনি। মোট ১৫টি নিয়ে কাজ শুরু হলেও এখন করমজলে এর সংখ্যা সাড়ে ৪০০।