সোনালী আঁশ পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় শরীয়তপুরে কৃষকদের চোখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। সরকারি পৃষ্টপোষকতা এবং সঠিক পরিচর্যার কারণে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও পাট চাষে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলায়ই কম বেশি পাটের চাষ হয়। এ বছর অত্র জেলায় ২৩ হাজার ৪৮৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ২৭ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের কোয়ারপুর গ্রামের পাটচাষী আব্দুল হক খান বলেন, এ বছর কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিএডিসি অফিস হতে উন্নত জাতের পাটের বীজ পাওয়ায় পাটের ফলন ভাল হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার পন্ডিতসার গ্রামের পাটচাষী রিগান হাওলাদার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের পাটের ফলন ভাল হয়েছে। কৃষি অফিসের মাধ্যমে পাট চাষের উপর আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সেই প্রশিক্ষণকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি বলেই পাটের ফলন ভাল হয়েছে।
একই উপজেলার ডিগ্রি গ্রামের পাটচাষী সাইফুল খলিফা বলেন, এ বছর পাট চাষ ভাল হলেও পাটে পোকা মাকড়ের অক্রমণ হতে রক্ষা পেতে প্রচুর টাকার কিটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে এবং কৃষি অফিসের স্যারেরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।
গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর গ্রামের পাটচাষী খবির ফরাজী বলেন, পাটের ভাল ফলন হয়েছে এ কথা যেমন সত্য, তেমনি শঙকায়ও রয়েছি। যদি ভাল বাজার মূল্য না পাই, তাহলে পাট নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছি, তা বাস্তবে প্রতিফলিত না হয়ে দুঃস্বপ্নেই পরিণত হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শরীয়তপুর জেলায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। কৃষকরা পাট চাষে যাতে বেশি উৎসাহী হয় সেজন্য উন্নত বীজ প্রদানসহ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। শুধু তাই নয়, সরকারিভাবে পাট চাষীদের সঠিকভাবে তদারকির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ফলে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলন হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে এবং সোনালী আঁশ খ্যাত `পাট` এখন সোনালী স্বপ্ন তথা সোনালী আশায় পরিণত হয়েছে।