দলবদ্ধ ধর্ষণের পর নারী শ্রমিক খুন, তাতেও থামেনি কদর্যতা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খুলনায় নারী পাটকল শ্রমিক মুসলিমা খাতুনের (২৬) মস্তকবিহীন মৃতদেহ উদ্ধারের তিন দিন পর ছিন্ন মাথা উদ্ধার ও এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৬ সদস্যরা। আটককৃতরা ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে। একই সঙ্গে যৌন বিকৃত ওই ঘাতকরা মরদেহেরও সম্ভ্রমহানি করে বলে জানায়।

শনিবার দুপুরে খুলনার র‌্যাব ফুলতলার দক্ষিণডিহিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানায়।

 এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব ৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ।

র‌্যাব জানায়, মুসলিমা খাতুন ফুলতলা উপজেলার মো. ইমদাদুল হকের ছোট মেয়ে। তারা দুই বোন ও অসুস্থ বাবা ফুলতলা থানার পাশে ভাড়া থাকতেন। বছর দুয়েক আগে যশোরের প্রেমবাগ এলাকার সাগর নামে এক ছেলের সাথে মুসলিমার বিয়ে হলেও তা টেকেনি। ফুলতলায় এসে জুটমিলে চাকরি করতেন। তিন দিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে একই এলাকার যুগ্নিপাশা গ্রামের মোশাররফ খন্দকারের ছেলে রিয়াজ খন্দকার বিয়ের কথা বলে ২৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে দক্ষিণডিহি গ্রামে ডেকে নেয়। পরে একই এলাকার মিলন সরদারের পুত্র মো. সোহেল ওরফে ইমন সরদারকে নিয়ে যুগ্নিপাশা গ্রামের জনৈক মুনসুরের একটি ঘরে দুজনে ধর্ষণ করে। ঘটনা প্রকাশের ভয়ে একপর্যায়ে তারা মুসলিমাকে গাড়িতে তুলে দেওয়ার কথা বলে বিল এলাকায় নিয়ে হত্যা করে। পরে রিয়াজের বাড়ি থেকে একটি বটি এনে দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝেতে মুসলিমার পোশাক দিয়ে মুড়িয়ে পুঁতে রাখে।

র‌্যাব আরো জানায়, হত্যার পর লাশ গোপন করতে দুই ঘাতক নানা তৎপরতা চালায়। এমনকী মৃতদেহের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। যেদিন মৃতদেহ উদ্ধার হয়, সেদিনও রিয়াজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল; পরে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব ৬ এর অধিনায়ক জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে র‌্যাব ফরিদপুর থেকে রিয়াজ খন্দকারকে ও ফুলতলা থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে তারা ঘটনার আদ্যোপান্ত র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

নিহতের বোন আকিমা বেগম বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বোনকে যে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে, ওদের এমন শাস্তি চাই। ওরা মানুষ নয়, জানোয়ারের মতো হিংস্র। না হলে কোনো মানুষ এমন কাজ করতে পারে না। আমার বোন খুব নিরীহ। এরা বিভিন্ন সময়ে আমার বোনকে উত্ত্যক্ত করত’।

তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন বাবাকে নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন তিনি। রাতে মুসলিমা খাতুন বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তাঁর আর খোঁজ মিলছিল না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর