সুপ্রিম কোর্টে টিএইচ খানের জানাজা সাড়ে ১১টায়, দাফন ময়মনসিংহে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রবীণ আইনজীবী, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিচারক তাফাজ্জাল হোসেন (টি এইচ) খানের নামাজে জানাজা সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, টি এইচ খান সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী। গত ২১ অক্টোবর ছিল তার ১০২তম জন্মদিন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পারিবারিকভাবেই জন্মদিনটা পালন করা হয়েছিল।

কাজল বলেন, আজ (সোমবার) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রবীণ এই আইনজ্ঞের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মরহুমের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সর্বশেষ জানাজা শেষে তার নিজ জন্মস্থানে ঔটি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন টি এইচ খান। তার বড় ছেলে আফজাল এইচ খান সাংবাদিকতা ছেড়ে এখন পুরোপুরি আইন পেশায় আছেন। মেঝ ছেলে ফজলে এলাহী খান এবং ছোট ছেলে ফায়সাল এইচ খান। মেয়ে চিকিৎসক মাহমুদা ফাতেমা খান। ২০১১ সালে মারা যান টি এইচ খানের স্ত্রী বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম।

টি এইচ খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এক শোক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি টি এইচ খানের আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এছাড়া টি এইচ খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। টিএইচ খানের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে শোক সমিতির শোক বার্তায়।

টি এইচ খানের ছেলে আফজাল এইচ খান বলেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে রোববার ভোরে কল্যাণপুরে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আব্বাকে। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতাসহ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর তাকে ভর্তি করানো হলেও ৬ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয় বলে জানান আফজাল এইচ খান।

১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলাধীন ঔটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন টি এইচ খান। ১৯৪০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ১৯৪২ সালে তৎকালীন কলকাতা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ অনার্সে ভর্তি হন।

১৯৪৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৪৬ সালে এমএ পাস করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৫১ সালের ১৪ মার্চ তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হন। পরে ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালের জুলাই মাস থেকে আইন পেশায় ফিরে আসার পরের বছর তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর আইন, শিক্ষা, ধর্ম, ভূমি ও রাজস্ব এবং ক্রিড়া মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

১৯৮২ সালে এরশাদ ক্ষমতায় এলে রাজনীতির পাশাপাশি আইন পেশা চালিয়ে যান। ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে বিরোধীতা করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

টি এইচ খান ১৯৯২ সালে জাতিয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর