ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী পর্যটককে গণধর্ষণকাণ্ডে অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক: হাইকোর্ট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২
  • ১৪৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কক্সবাজারে স্বামী ও শিশুসন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন সংস্থার অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতের রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন।

শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, কক্সবাজারে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত চলছে। তবে তদন্ত চলাকালে একেক সংস্থার একেক ধরনের প্রতিবেদন কাম্য নয়। তদন্ত কর্মকর্তার ব্রিফিং কাম্য নয়। এমনকি তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন সংস্থার অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক। এতে করে মানুষের মাঝে ভুলবার্তা যাবে।

এ ছাড়া কোনো ঘটনার বিষয়ে কে কথা বলবেন, কতটুকু বলবেন তা নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

নারী পর্যটককে গণধর্ষণের ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধান চেয়ে গত ৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

ওই ঘটনায় কক্সবাজার জেলা জজ বা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বিচারিক অনুসন্ধান করার এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রিট আবেদনে রুল জারির আরজি জানানো হয়।

প্রসঙ্গত গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ওই নারী পর্যটককে তুলে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই নারী জানিয়েছেন, আট মাস বয়সি অসুস্থ বাচ্চার চিকিৎসায় অর্থ জোগাড়ে স্বামীসহ গত তিন মাস ধরে কক্সবাজারে এসেছেন। আট মাস বয়সি শিশুর হার্টে ছিদ্র রয়েছে। তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। যে কোনো মূল্যে সন্তানকে বাঁচাতে টাকা জোগাড় করাই ছিল তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তার মধ্যে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে। একবার বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন। পরে আবার চাঁদা চাইতে গেলে স্বামীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর সূত্র ধরে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।

ওই নারী জবানবন্দিতে আরও জানান, তাকে সৈকত পোস্ট অফিসের কাছে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আশিকের দুই বন্ধু তাকে ধর্ষণ করে। এর পর আশিক তাকে আবার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায় কলাতলী এলাকার জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। তাকে নিয়ে ওই হোটেলের একটি কক্ষে ওঠে আশিক। সেখানে ইয়াবা সেবন করে ধর্ষণের একপর্যায়ে একটি ফোনকলে পুলিশের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে আশিক কক্ষ থেকে দ্রুত বের হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী ওই নারী আরও জানান, তিনি হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে পর্যটন মোটেলের সামনের সড়কে আসেন। সেখানে স্বামীকে দেখতে পান র্যাবের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে। র্যাব তাকে নিয়ে হোটেল জিয়া গেস্ট ইনে আসেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নারী পর্যটককে গণধর্ষণকাণ্ডে অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক: হাইকোর্ট

আপডেট টাইম : ০১:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কক্সবাজারে স্বামী ও শিশুসন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন সংস্থার অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতের রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন।

শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, কক্সবাজারে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত চলছে। তবে তদন্ত চলাকালে একেক সংস্থার একেক ধরনের প্রতিবেদন কাম্য নয়। তদন্ত কর্মকর্তার ব্রিফিং কাম্য নয়। এমনকি তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন সংস্থার অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক। এতে করে মানুষের মাঝে ভুলবার্তা যাবে।

এ ছাড়া কোনো ঘটনার বিষয়ে কে কথা বলবেন, কতটুকু বলবেন তা নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

নারী পর্যটককে গণধর্ষণের ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধান চেয়ে গত ৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

ওই ঘটনায় কক্সবাজার জেলা জজ বা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বিচারিক অনুসন্ধান করার এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রিট আবেদনে রুল জারির আরজি জানানো হয়।

প্রসঙ্গত গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ওই নারী পর্যটককে তুলে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই নারী জানিয়েছেন, আট মাস বয়সি অসুস্থ বাচ্চার চিকিৎসায় অর্থ জোগাড়ে স্বামীসহ গত তিন মাস ধরে কক্সবাজারে এসেছেন। আট মাস বয়সি শিশুর হার্টে ছিদ্র রয়েছে। তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। যে কোনো মূল্যে সন্তানকে বাঁচাতে টাকা জোগাড় করাই ছিল তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তার মধ্যে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে। একবার বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন। পরে আবার চাঁদা চাইতে গেলে স্বামীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর সূত্র ধরে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।

ওই নারী জবানবন্দিতে আরও জানান, তাকে সৈকত পোস্ট অফিসের কাছে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আশিকের দুই বন্ধু তাকে ধর্ষণ করে। এর পর আশিক তাকে আবার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায় কলাতলী এলাকার জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। তাকে নিয়ে ওই হোটেলের একটি কক্ষে ওঠে আশিক। সেখানে ইয়াবা সেবন করে ধর্ষণের একপর্যায়ে একটি ফোনকলে পুলিশের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে আশিক কক্ষ থেকে দ্রুত বের হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী ওই নারী আরও জানান, তিনি হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে পর্যটন মোটেলের সামনের সড়কে আসেন। সেখানে স্বামীকে দেখতে পান র্যাবের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে। র্যাব তাকে নিয়ে হোটেল জিয়া গেস্ট ইনে আসেন।